এই প্রথম একজন বাংলাভাষী অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি করোনাভাইরাস মহামারি রূপ নেওয়ার আগেই ব্যক্তিগত কারণে বাংলাদেশে যান। সেখানে অবস্থানকালে অস্ট্রেলিয়ার সীমান্ত বন্ধ ও স্বাভাবিক বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে বাংলাদেশে আটকা পড়েন। জুনের মধ্যভাগে অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশন, ঢাকার ব্যবস্থাপনায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে অন্য যাত্রীদের সাথে মেলবোর্নে আসেন। সেখানে ১৪ দিন হোটেল কোয়ারেন্টিন শেষ করে সিডনি ফেরেন। ওই ব্যক্তি গত বছরের অক্টোবর মাসে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব লাভ করেছিলেন।
নিউ সাউথ ওয়েলস হেলথ গত বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) সেই ব্যক্তির করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। তিনিই প্রথম বাংলাদেশী অস্ট্রেলিয়ান যিনি অস্ট্রেলিয়ায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলেন। বাংলাদেশ থেকে আসা ওই ব্যক্তি ১১ জুন থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত ভিক্টোরিয়া রাজ্যের একটি হোটেল কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। কোয়ারেন্টাইনে থাকার চতুর্থ দিনে তার কোভিড-১৯ এর পজিটিভ রেজাল্ট আসে। ১৪ দিন পর হোটেলে ত্যাগের অনুমতি দেওয়া হলে তিনি সিডনি আসেন। পরবর্তীতে তার কর্মস্থল উলওয়ার্থসে যোগ দেন।
নিউ সাউথ ওয়েলস হেলথ এর চিফ হেলথ অফিসার ডাক্তার কেরি চ্যান্ট বলেন, আক্রান্ত ওই ব্যক্তি ইনার সিডনির বালমেইনের উলওয়ার্থসে একজন কর্মচারী এবং কর্মরত অবস্থায় তার কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কিছু লক্ষণ দেখা দেয়ায় তার ম্যানেজারের নজরে পড়েন এবং তার পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তাকে মৃদুভাবে আক্রান্ত বলে শনাক্ত করে আইসোলেশনে পাঠানো হয়। সেখানে কর্মরত আরো ৫০ জনকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে এবং স্টোরটি নিবিড়ভাবে পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের ডাক্তার চ্যান্ট বলেন যে, তাকে হোটেল থেকে ছাড়ার আগে সংক্রমণ এবং ভাইরাস-মুক্ত বলে বলা হয়েছিল। তবে এটি অস্পষ্ট যে, ওই সময় তার আরও একটি কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়েছিল কিনা। তিনি আরো বলেন, সংক্রমিত ব্যক্তি কম ঝুঁকিপূর্ণ।
সিডনির আর্নক্লিফের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল আবারো পজিটিভ আসায় তাঁকে মাসকটের একটি হোটেলে কোয়ারেন্টিন-এ রাখা হয়েছে।
ভিক্টোরিয়া রাজ্যের অন্যতম অভিজ্ঞ বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, বিচারপতি জেনিফার কোটকে হোটেল কোয়ারেন্টাইন কর্মসূচির তদন্তের নেতৃত্বে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। হোটেল কোয়ারেন্টাইন নিয়ে বিতর্কে বিচারপতি কোট এ সংক্রান্ত বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখবেন যে, হোটেলগুলিতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ প্রোটোকল লঙ্ঘিত হয়েছিল কিনা। এই তদন্তে সরকার, হোটেল অপারেটর এবং বেসরকারি ঠিকাদারদের সিদ্ধান্ত এবং পদক্ষেপের পাশাপাশি কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করা হবে।