বোর্ডার-গাভাসকর ট্রফির চতুর্থ টেস্টে নিজের নামাঙ্কিত স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থোনি অ্যালবানিজিকে প্রথমেই স্বাগত জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এরপর দুই সরকার-প্রধান প্রবেশ করেন নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে। তারপর ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কদের হাতে বিশেষ টেস্ট ক্যাপ তুলে দিয়েছেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী।
READ MORE
ভারত-অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্কের অগ্রগতি
পাশাপাশি অধিনায়কদের হাতে হাত রেখে ফটো সেশনের জন্য পোজও দিয়েছেন তাঁরা। ততক্ষণে স্টেডিয়ামজুড়ে মোদী-মোদী রব শুরু হয়ে গিয়েছে। ফটো সেশনের পর সুসজ্জিত গাড়িতে গোটা স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থোনি অ্যালবানিজি। পরে মাঠে নেমে সব ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন দুই প্রধানমন্ত্রী।
এর ফাঁকে আবার বোর্ড সচিব জয় শাহ দুই প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষ স্মারক উপহার দিয়েছেন। স্টেডিয়ামের ভিতরে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটীয় বন্ধুত্বের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। তাও ঘুরে দেখেছেন দুই প্রধানমন্ত্রী। এরপর স্টেডিয়ামে বসে ম্যাচ উপভোগ করেছেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, ৪ দিনের ভারত সফরে এসেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থোনি অ্যালবানিজি। আহমেদাবাদ বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল। বিমানবন্দর থেকেই সবরমতি আশ্রম যান অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটিয়েছেন অ্যান্থোনি অ্যালবানিজি। এরপর রাতে রাজভবনে একটি হোলির অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থোনি অ্যালবানিজি। এক টুইট বার্তায় মিস্টার অ্যালবানিজি জানিয়েছেন, এটি তাঁর গুরুত্বপূর্ণ সফর। এতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হবে৷
অন্যদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক অস্ট্রেলিয়া-ভারত অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে মুক্ত বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের সুযোগ এবং ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করতে অস্ট্রেলিয়ার ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল মুম্বইতে অস্ট্রেলিয়া-ভারত সিইও ফোরামে অংশগ্রহণ করবে।
এদিকে, দীর্ঘ ছ’বছর পর অস্ট্রেলিয়ার কোনও প্রধানমন্ত্রীর ভারতে এলেন। এ দেশে আসার আগেই অ্যালবানিজি এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ বলে চিহ্নিত করে জানিয়েছিলেন, ভারতে একটি ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দল নিয়ে আসছেন এবং এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সফর হতে চলেছে। সম্পর্কের উন্নতি এবং সহযোগিতার ক্ষেত্র বাড়ানো অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এর পর কোয়াড শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য অস্ট্রেলিয়া যাবেন এবং তারপরে অ্যান্থোনি অ্যালবানিজি জি-২০ শীর্ষ বৈঠকে ভারতে আসবেন।
অন্যদিকে, ভারতের বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, সাম্প্রতিক অস্ট্রেলিয়া-ভারত অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে মুক্ত বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ এবং ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করতে অস্ট্রেলিয়ার ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল মুম্বইতে অস্ট্রেলিয়া-ভারত সিইও ফোরামে অংশগ্রহণ করবে; যা বর্তমানে কোভিড এবং যুদ্ধ-পরবর্তী বেহাল অর্থনীতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। মিস্টার অ্যালবানিজির সঙ্গে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য ও পর্যটনমন্ত্রী ডন ফারেল, ঊর্ধ্বতন পদস্থ কর্মকর্তারা এবং ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
Indian Prime Minister Narendra Modi with his Australian counterpart Anthony Albanese stand with their respective countries team for national anthems at the start of the fourth cricket test match between India and Australia in Ahmedabad, India, Thursday, March 9, 2023. (AP Photo/Ajit Solanki) Source: AAP / Ajit Solanki/AP
প্রথম বিদেশী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নৌসেনার আইএনএস বিক্রান্তে সফর করেছেন অ্যান্থোনি অ্যালবানিজি। বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে ক্যারিয়ার গার্ড অব অনার দিয়েছে ভারতের নৌসেনা। এরপর মুম্বই উপকূলে আইএনএস বিক্রান্তের ককপিটে বসে সফর করেছেন তিনি।
এক বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি আইএনএস বিক্রান্তে সফর করতে পেরে তিনি সম্মানিত। তাঁর এই সফর ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং তার বাইরে অস্ট্রেলিয়ার দৃষ্টিভঙ্গির কেন্দ্রস্থলে ভারতকে স্থাপন করার জন্য প্রতিফলিত করবে; যা দুই দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এমনই একজন ব্যক্তি যার মধ্যে দৃঢ় সংকল্প এবং দূরদর্শিতা রয়েছে।
ভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাওয়া ডিগ্রিকে স্বীকৃতি দেবে অস্ট্রেলিয়া। এমনটাই ঘোষণা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী। গুজরাটের গান্ধীনগরের গিফট সিটিতে অস্ট্রেলিয়ার ডেকিন ইউনিভার্সিটি তাদের একটি আন্তর্জাতিক শাখা ক্যাম্পাস স্থাপন করবে।
অনুষ্ঠানে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার দ্বিপাক্ষিক শিক্ষা সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটেছে। তাঁরা অস্ট্রেলিয়া-ভারত শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বীকৃতি পদ্ধতি চূড়ান্ত করেছেন। এই নতুন পদ্ধতির অর্থ, কেউ যদি ভারতীয় শিক্ষার্থী হন এবং অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করেন, তাহলে দেশে ফিরে আসার পরে তাঁর কষ্টার্জিত ডিগ্রি স্বীকৃতি পাবে।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: