বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে উত্তরসূরিদের মাঝে পৌঁছে দিতে গত ২৭ বৎসর ধরে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সোসাইটি পূজা ও সংস্কৃতি (বিএসপিসি )।
তাঁরই ধারাবাহিকতায় গত ১৮ মে, ২০২৩ সন্ধ্যায় ব্ল্যাকটাউন সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার।
সন্ধ্যে ঠিক ছটায় শুরু হয়ে মাঝে মাত্র কুড়ি মিনিটের বিরতি দিয়ে একটানা রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত এ অনুষ্ঠানে ছিল হল ভর্তি উপচে পড়া ভীড়।
Credit: Bangladesh Society for Puja and Culture (BSPC)
বাংলা স্কুলের ছোট্ট সোনামনিরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "মেঘের কোলে রোদ হেসেছে" আবৃত্তির মাধ্যমে উদ্বোধন করে এই অনুষ্ঠানের।
ছ'বছরের নিচের বাচ্চাদের বাংলা ভাষার শিক্ষক শর্মিষ্ঠা চৌধুরীর অনুষ্ঠান পরিচালনার পাশাপাশি বাংলা গানের শিক্ষক লারিনা নুপুর রোজারিও বাচ্চাদের সাথে থেকে তাদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণার পাশাপাশি সাহায্য করেন গান ও নাচ পরিবেশনে।
নাচের শিক্ষিকা শ্রেয়সী দাস এবং প্রজ্ঞা কর্মকারের তত্ত্বাবধানে মেয়েদের নাচের জন্যে যে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা আর ভালোবাসা তার ভূয়সী প্রশংসা করেন দর্শক-শ্রোতা।
বিএসপিসির বাংলা স্কুলের অধ্যক্ষা শ্রীমতি সুস্মিতা জেমি সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
বাংলা স্কুলের বাবা মায়েদের রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্তের কবিতা ও গানের যুগলবন্দী ছিল দর্শকদের জন্যে একটা বাড়তি কিছু।
Credit: Bangladesh Society for Puja and Culture (BSPC)
সিডনির প্রথিতযশা শিল্পী সিরাজুস সালেকীনকে বিএসপিসির পক্ষ থেকে দেয়া হয় এ সম্মাননা। শিল্পীর হাতে ক্রেস্ট তুলে দিয়ে সোসাইটির সদস্য শ্রী মৃনাল দে বলেন "শিল্পী সিরাজুস সালেকীনকে সম্মাননা দিতে পেরে আসলে সম্মানিত হয়েছে বিএসপিসি"।
এ পর্বের পরিচালনা করেন বিএসপিসির সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা শ্রীমতি দেবযানী রায় চৌধুরী ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিএসপিসির বর্তমান সভাপতি শ্রী রথীন্দ্রনাথ ঢালী।
নজরুল পর্ব নিয়ে ফিরে আসেন সোসাইটির বাবা মায়েরা। নজরুলের কালজয়ী গান "কারার ওই লৌহ কপাট" ও "আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে" গান ও বৃন্দ আবৃত্তির সংমিশ্রণে এই পর্ব ছিল ঠাসবুনোটে গাঁথা।
বিএসপিসির সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা শ্রীমতি দেবযানী রায় চৌধুরীর উপস্থাপনায় ও কিবোর্ডে নীলাদ্রি চক্রবর্তী ও তবলায় শ্রী দেবাশীষ দত্তের সঙ্গত এই পর্বকে করে তোলে মোহনীয়।
এই পর্বের পর কুড়ি মিনিটের ছোট্ট বিরতিতে দর্শক-শ্রোতাদের পরিবেশন করা হয় রাতের খাবার।
ছোট্ট বিরতির পর মঞ্চ আলোকিত করতে মঞ্চে ওঠেন সিডনির প্রথিতযশা সংগঠন প্রতীতির শিল্পীবৃন্দ।
সিরাজুল সালেকীনের পরিচালনায় ও শান্তুনু করের তবলা সঙ্গতে প্রতীতির শিল্পীবৃন্দ পরিবেশন করেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুটো গান, নজরুলের একটি ও কবিকিশোর সুকান্ত ভট্টাচার্যের দুটো গান।
প্রতীতির শিল্পীবৃন্দের গান মুগ্ধ করে রাখে হল ভর্তি দর্শক শ্রোতাকে।
সবশেষে ছিল “কলাঙ্কন” নৃত্য একাডেমির কর্ণধার অমৃতা পাল চৌধুরীর পরিচালনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "শ্যামা" গীতিনাট্যের অংশবিশেষ নিয়ে এক অনবদ্য পরিবেশনা।
সবশেষে বিএসপিসির বর্তমান সভাপতি শ্রী রথীন্দ্রনাথ ঢালী ও সাধারণ সম্পাদিকা শ্রীমতি রানী মন্ডলের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে শেষ হয় বিএসপিসির এ বছরের রবীন্দ্র-নজরুলসুকান্ত জন্মজয়ন্তীর এ মহাযজ্ঞ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা অডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: