হাইলাইটস
- ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই ভারতের স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রবীণ নাগরিকরা করোনা টিকা পেয়ে যাবেন।
- এ পর্যন্ত ভারতে কোভিড-১৯ টেস্টের মোট সংখ্যা ১৩০ মিলিয়ন।
- প্রত্যেকের টিকাদান সম্পন্ন হতে ২০২৪ সাল লেগে যাবে।
এক ট্যুইট বার্তায় এই সাফল্যের কথা জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক। ট্যুইট বার্তায় বলা হয়েছে, ভারত ১৩ কোটি কোভিড টেস্টের মাইলস্টোন অতিক্রম করেছে। শেষ এক কোটি টেস্টে সময় লেগেছে মাত্র ১০ দিন। রিপোর্ট অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ১৩ কোটি ৬ লক্ষ ৫৭ হাজার ৮০৮ টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। যা ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-দশমাংশ।
এদিকে কোভিড ভ্যাকসিন তৈরি এবং তা দ্রুত কী ভাবে মানুষের হাতে পৌঁছতে পারে, তা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের এক ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নীতি আয়োগের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে এই বৈঠক হয়। এর পর মোদী টুইটে লিখেছেন,ভ্যাকসিন সংক্রান্ত দেশের নীতি কী হতে চলেছে এবং কী ভাবে অগ্রসর হওয়া যায়, তা নিয়ে একটি বৈঠক করেছেন।
ভ্যাকসিন তৈরির কাজ কত দূর, কত দ্রুত তা অনুমোদনের জন্য পাঠানো যেতে পারে এবং কী ভাবে তা বাজারে আসতে পারে, এই সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তাঁর পরের টুইট, বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে কারা আগে ভ্যাকসিন পাবেন, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতে দ্রুত এই ভ্যাকসিন দেওয়া যায় এবং তার পর কী ভাবে দ্রুত তা অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে, সে সবই উঠে এসেছে আলোচনায়।
অন্যদিকে,দিল্লি, গুজরাট, রাজস্থানে নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ।যা রীতিমতো উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।আর এই নতুন করে সংক্রমণ বাড়ার ফলেই ভারতে লাগাতার দৈনিক ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ এই মারণ রোগের কবলে পড়ছেন।নতুন করে দৈনিক গড়ে করোনার কবলে পড়েছেন ৪৬ হাজারের বেশি মানুষ।তবে,আক্রান্তের তুলনায় সামান্য হলেও বেশি ছিল করোনাজয়ীর সংখ্যা।
ফলে সামান্য কমেছে অ্যাকটিভ কেস বা চিকিৎসাধীন রোগী।এর মধ্যে,করোনা সংক্রমণের নিরিখে বিশ্বে দ্বিতীয় ক্ষতিগ্রস্ত দেশটির নাম ভারত।আমেরিকার পরেই স্থান।যদিও কোভিডে মৃত্যুর হার অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় কম।সংক্রমণের শীর্ষে থাকা আমেরিকায় ১৭ কোটির উপর টেস্ট হয়েছে।
বস্তুত,গোটা বিশ্বের সঙ্গে দেশের একাধিক সংস্থা কোভিড ভ্যাকসিন তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে। এক সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে,দেশে পাঁচটা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়েছে।তার মধ্যে চারটি ভ্যাকসিন রয়েছে ট্রায়ালের দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্তরে।একটি প্রথম-দ্বিতীয় স্তরে।
বাংলাদেশ,মায়ানমার,কাতার,ভুটান, সুইৎজারল্যান্ড বাহরাইন,অস্ট্রিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশ ভারতের সঙ্গে ভ্যাকসিন তৈরি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ওই ভ্যাকসিন তৈরি হলে তারা তা ব্যবহার করবে বলেও জানিয়েছে।ভারতের তৈরি কোভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হয়েছে ওড়িশার এক ইনস্টিটিউটে। এই ট্রায়ালের ফলাফলের উপর আরও অনেক কিছু নির্ভর করছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই ভারতের স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রবীণ নাগরিকরা অক্সফোর্ডের করোনা টিকা পেয়ে যাবেন।এমনই দাবি করছেন টিকা প্রস্তুতকারক সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার সিইও আদার পুনাওয়ালা।তিনি আরও জানিয়েছেন, সামনের বছর এপ্রিল মাসের মধ্যেই সাধারণ মানুষের জন্য মিলবে করোনা টিকা।
জনতাকে টিকার প্রয়োজনীয় দুটি ডোজের জন্য খরচ করতে হবে সর্বাধিক এক হাজার টাকা। তবে সবকিছুই চূড়ান্ত ট্রায়ালের ফলাফল ও নিয়ন্ত্রণকের সম্মতির উপরে নির্ভর করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের মধ্যে প্রত্যেক ভারতীয়ের টিকাগ্রহণ হয়ে যাবে।তিনি বলেছেন, প্রত্যেক ভারতীয়ের এই টিকা গ্রহণে ২-৩ বছর লেগে যাবে।
শুধুমাত্র সরবরাহের ঘাটতিই নয়, এটার কারণ টিকার বাজেট, পরিকাঠামো এবং অবশ্যই মানুষের টিকাগ্রহণের ইচ্ছে। জনসংখ্যার ৮০-৯০ শতাংশকে টিকা গিতে এই ফ্যাক্টরগুলি কাজে লাগবে। প্রত্যেকে দুটি ডোজ নিতে রাজি থাকলে
প্রত্যেকের টিকাদান সম্পন্ন হতে ২০২৪ সাল লেগে যাবে।টিকা দিতে কত খরচ হবে, এই প্রশ্নের জবাবে পুনাওয়ালা বলেছেন, প্রত্যেক ডোজের জন্য প্রায় ৫-৬ ডলার খরচ লাগবে। এই টিকা কতটা সুরক্ষিত, এ প্রশ্নের জবাবে পুনাওয়ালা বলেছেন, এখনও পর্যন্ত এই টিকার কোনও বড় অভিযোগ বা বিরূপ প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আরও অপেক্ষা করতে হবে,এক-দেড় মাসের মধ্যে পুরোপুরি ফলাফল হাতে এসে যাবে। এর আগে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন জানান, আগামী ৩-৪ মাসের মধ্যেই করোনা টিকা দেওয়া শুরু হবে দেশে। শুরুতে টিকা দেওয়া হবে করোনা যোদ্ধা অর্থাৎ স্বাস্থ্যকর্মীদের।এর পর গুরুত্ব দেওয়া হবে ৬৫ বছরের বেশি বয়সিদের। জুলাই-অগস্টের মধ্যে ৪০-৫০ কোটি ডোজ পাওয়া যাবে দেশে। যাতে লাভবান হবেন ২০-২৫ কোটি নাগরিক।