ভারতে করোনা সতর্কতার মধ্যেই আয়োজিত হয়েছিল ওই সমাবেশ।সমাবেশের পরে অনেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভ্রমণ করেন করোনা সতর্কতায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ সত্ত্বেও।১৫ মার্চ অনুষ্ঠান শেষের পরেও নিজামউদ্দিন এলাকাতেই থেকে যান অনেকে।জনতা কার্ফুর আগের দিন অর্থাৎ ২১ মার্চ ওই মসজিদে ছিলেন ১৭৪৬ জন।যাঁদের মধ্যে ২১৬ জন বিদেশি ছিলেন।আর গোটা দেশে সেই সময়ে বিদেশ থেকে আসা মুসলিম ধর্মপ্রচারক ছিলেন ৮২৪ জন।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সমাবেশে সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহণকারী এসেছিলেন তামিলনাড়ু থেকে। ওই রাজ্য থেকে এসেছিলেন প্রায় ৫০০ জন। উত্তরপ্রদেশ ইতিমধ্যেই ১৬০ জনকে চিহ্নিত করেছে, যাঁরা ওই ধর্মসভায় অংশগ্রহণ করেছেন। মহারাষ্ট্র থেকে ১০৯, মধ্যপ্রদেশ থেকে ১০৭, বিহার থেকে ৮৬ জন, পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৭৩ জন, তেলঙ্গানা থেকে ৫৫ জন, ঝাড়খণ্ড থেকে ৪৬ জন ওই ধর্মসভায় যোগ দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়াও, মেঘালয়, ওড়িশা, পঞ্জাব, রাজস্থান, আন্দামান, হিমাচল প্রদেশ থেকেও মানুষ গিয়েছিলেন ওই ধর্মসভায়। আন্দামানে ৯ জনের কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে যাঁরা ওই তবলিগে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। যাঁদের মধ্যে অনেকেই ইতিমধ্যে দিল্লি থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিজেদের গন্তব্যে ফিরে গিয়েছেন। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কাটা বেড়ে গিয়েছে।
এদিকে প্রথমে খুঁজে বার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে অশ্লীল ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে জামাতের অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে। গাজিয়াবাদের হাসপাতালে নগ্ন হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তবলিগি জামাতের সদস্যরা এবং নার্সদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করছেন।পুলিশের কাছে এই অভিযোগ দায়ের করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।তবলিগ-ফেরত লোকজনকে যে সব জায়গায় কোয়রান্টিন (নিভৃতবাস)-এ রাখা হয়েছে,সেখানে পুলিশ মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইন (এনএসএ) প্রয়োগ করার নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
এমএমজি হাসপাতালের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্র সিংহ পুলিশকে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন যে, ওই তবলিগিরা জামাকাপড় পরছেন না, নগ্ন অবস্থায় আইসোলেশন ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নার্সদের দেখলে অশালীন মন্তব্য করছেন। সাস্থ্যকর্মীদের কাছ থেকে বিড়ি বা সিগারেট চাইছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩১ মার্চ ওই তবলিগিদের ভর্তি করা হয়েছিল। শুরু থেকেই নার্স এবং অন্য কর্মীরা অসহযোগিতার অভিযোগ করছিলেন। পরে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্র সিংহ নিজেও ওই রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন বলে খবর। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। নার্সদের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করা হয়েছে, তাঁদের উপরে ‘অপরাধমূলক বলপ্রয়োগ’ হয়েছে এবং এমন আচরণ করা হয়েছে যাতে নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে যেতে পারে,পুলিশকে এমনই জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।