বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অস্ট্রেলিয়ায় এখন খাদ্য সরবরাহ ঠিক আছে। তবে, কোভিড-১৯ লকডাউন চলতে থাকলে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা দীর্ঘ-মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তারা সতর্ক করেন।
বিশেষভাবে, এ বছর যদি লকডাউন চলতে থাকে তাহলে গুরুত্বপূর্ণ উৎপাদিত পণ্য যেগুলো বিদেশে থেকে আমদানি করা হয়, সেগুলোর উপর এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।জেসন হিল ও তার স্ত্রী আনা ফেরেইরা একটি ব্যবসা পরিচালনা করেন। তারা ব্রাজিল থেকে খাবার, পানীয় এবং রান্নার বিভিন্ন সরঞ্জাম আমদানি করেন।
Ana Ferreira and Jason Hill check stock in their warehouse which contains cooking equipment from Brazil. Source: SBS
অন্যান্য বহু কোম্পানির মতো করোনাভাইরাসের সঙ্কটের কারণে তাদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
আনা ফেরেইরা বলেন,
“আমাদের ওয়ারহাউজ পরিপূর্ণ এবং আরও বহু কন্টেইনার আসছে, তাই আমরা এটা অনুভব করি নি।”
“তবে, এখন আমরা যে-সব অর্ডার দিচ্ছি সেগুলোর ক্ষেত্রে কী হবে আমি জানি না। এখন যেসব কন্টেইনার এসেছে, এগুলোর অর্ডার বহু আগে আমরা দিয়েছিলাম।”
“আমাদেরকে কাজ চালিয়ে যেতে হবে এবং আমরা আমাদের সেরাটুকুই করতে পারি ও আশা করি যে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে এবং সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”
মিস্টার হিল বলেন, ব্রাজিল থেকে বার্বিকিউ ইউনিট আমদানি করার বিষয়ে তিনি চিন্তিত। কারণ, সেখানে এগুলোর উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।
“আমাদের সামান্য রকমের সরবরাহ সমস্যা আছে সেখানে। ব্রাজিলের বার্বিকিউ কারখানাগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। কারণ, এগুলো অপরিহার্য সেবা হিসেবে গণ্য করা হয় নি। তাই, বাণিজ্যিক বার্বিকিউয়ের নতুন অর্ডারগুলোর জন্য দেরি হবে।”
“আমরা আশা করি এটি লম্বা সময় ধরে চলবে না আর এই সঙ্কট শেষ হলে আমরা রেস্টুরেন্টগুলো পুনরায় খুলতে পারবো। তখন বাজারের এই খাতটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সমস্ত ব্যবসাতে আবারও গতি আসবে।”
পোর্টস অস্ট্রেলিয়া বলছে, মেরিটাইম কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তারা সরবরাহ শৃঙ্খল বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
তাদের একজন মুখপাত্র বলেন,
“আমাদের বন্দরগুলোতে জাহাজগুলোর মাল খালাস করা থেকে ট্রাকে উত্তোলন, এসবের মাধ্যমে রিটেইল শপগুলোতে জনগণের যে নিত্য-প্রয়োজনীয় খাবার ও পণ্যের চাহিদা পূরণ করা হয়, এই সময়ে এই সরবরাহ-শৃঙ্খল বজায় রাখাটা খুবই দরকার।”
এখন পর্যন্ত বন্দরের কোনো কর্মী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা যায় নি। পণ্য সরবরাহ বজায় রাখার জন্য এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ অনেক উদ্বিগ্ন।
মোনাশ বিজনেস স্কুলের ড. জিওভান্নি ডি লিয়েটোর মতে, পণ্য-দ্রব্যের উপরে অবশ্যম্ভাবীভাবে অভিঘাত পড়বে।
এসবিএস নিউজকে তিনি বলেন,
“এমনকি সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হলে, দীর্ঘ-মেয়াদী লকডাউন হলেও অস্ট্রেলিয়ায় নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্য পাওয়া যাবে না বলে আমি মনে করি না। তবে, যেভাবে বলা হচ্ছে, আমদানির ক্ষেত্রে ভয়ানক বিরূপ প্রভাব পড়বে।”
এই অভিঘাত ধীরে ধীরে মুছে যাবে এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পণ্য যেমন, মেডিকেল প্রডাক্ট প্রভাবিত হবে। এর ফলে এখানকার উপেক্ষিত স্থানীয় শিল্পগুলোর উন্নয়নে মনোযোগ দিতে বাধ্য হবে কর্তৃপক্ষ।
ড. ডি লিয়েটো বলেন,
“ভাল খবর হলো, অস্ট্রেলিয়ায় একদা পরিত্যক্ত ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিগুলোর জন্য কিছু নতুন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে।”
আতঙ্কিত হয়ে সুপারমার্কেটগুলোতে কেনাকাটা করার প্রবণতা হ্রাস পেয়েছে। অস্ট্রেলিয়ানদেরকে বলা হয়েছে, তাজা পণ্যের সরবরাহ নিয়ে তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
তবে, অজ-ভেজ এর কমিউনিকেশন্স ম্যানেজার শন লিন্ডহ বলেন, সরবরাহ সবার চাহিদা পূরণ করার মতো পর্যায়ে না পৌঁছানো পর্যন্ত, স্বল্প-সময়ের জন্য দ্রব্য-মূল্য বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন,
“আমরা আমাদের পণ্যের একটি বৃহৎ অংশ উৎপন্ন করি বিভিন্ন উৎপাদন-অঞ্চলে। তাই আমরা অনেক সৌভাগ্যবান যে, আমরা তাজা পণ্য ফুরিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে নেই।”
অস্ট্রেলিয়ানদেরকে পরস্পরের মাঝে কমপক্ষে ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্যদের সঙ্গে হলে দু’জনের বেশি একত্রিত হওয়া যাবে না।
অস্ট্রেলিয়ানদেরকে অবশ্যই অন্যের সঙ্গে কমপক্ষে ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ছাড়া, দু’জনের বেশি একত্রিত হওয়া যাবে না।
আপনি যদি মনে করেন যে, আপনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাহলে আপনার ডাক্তারকে কল করুন। ডাক্তারের কাছে যাবেন না। আপনি ন্যাশনাল করোনাভাইরাস হেলথ ইনফরমেশন হটলাইনেও কল করতে পারেন এই নম্বরে: 1800 020 080
আপনার যদি শ্বাস-কষ্ট কিংবা মেডিকেল ইমার্জেন্সি দেখা দেয়, তাহলে 000 নম্বরে কল করুন।
আপনার ভাষায় কোভিড-১৯ এর সর্বশেষ আপডেট জানাতে এসবিএস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ৬৩ টি ভাষায় এ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য পাবেন। ভিজিট করুন: .
বাংলায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিষয়ক আমাদের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ভিজিট করুন: