সকালে কফির স্বাদ ও গন্ধ অনুভব করতে পারছিলেন না লরা ব্রামান্ট। তখনই তিনি বুঝলেন যে, কিছু একটা সমস্যা হয়েছে।
এটা সপ্তাহ খানেক আগের কথা। ২৯ বছর বয়সী এই নারী বলেন, এ রকম অবস্থায় এর আগে তিনি কখনও পড়েন নি।
“এটা অনেক বড় পরিবর্তন এবং অনেক অস্বাভাবিক বিষয় ছিল।”তিনি গুগলে অনুসন্ধান করে দেখতে পান যে, এটি কোভিড-১৯ এর প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। তাই তিনি করোনাভাইরাস হটলাইনে কল করেন। কিন্তু, শুধুমাত্র এটাই তার লক্ষণ হওয়ায় তিনি টেস্টিং বা পরীক্ষণের মানদণ্ডের শর্ত পূরণ করতে পারেন নি। তাই তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
Laura Bramante is a 29-year-old account manager from Fitzroy North. Source: Supplied/SBS News
অন্যান্য লক্ষণ সম্পর্কে তিনি অতিরঞ্জিত তথ্য দিলে এর পর তাকে টেস্ট করা হয়।
টেস্টের ইতিবাচক ফল পাওয়া গেলে তখন তাকে কোয়ারেন্টিন করা হয়।
মেলবোর্নের নাক, কান ও গলা বিষয়ক সার্জন ড. স্টেফান ক্লেইড বলেন, এই ভাইরাসটির এটি কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ নয়।
“কারণ, নাক ও সাইনাসের মতো ফুসফুসের লাইনিংও একই। আর ফুসফুস হলো এই ভাইরাসটির আক্রমণের লক্ষ্যস্থল।”
বৈশ্বিকভাবে, এটি আমাদের চিন্তার চেয়েও বেশি দেখা যায়। দক্ষিণ কোরিয়ায় মৃদু সংক্রমণ ঘটা ২০০০ রোগীর মাঝে জরিপ চালিয়ে দেখা যায়, শতকরা ১৫ ভাগ রোগী কোনো না কোনো মাত্রায় তাদের ঘ্রাণ-শক্তি হারিয়েছে।জার্মেনিতে, সুনিশ্চিতভাবে আক্রান্ত প্রতি তিনটি কেসের মধ্যে দু’টিতেই ঘ্রাণ-শক্তি হারানোর লক্ষণ রয়েছে।
Laura Bramante is seen during her period of self-isolation. Source: Supplied/SBS News
যুক্তরাজ্যে, নাক, কান ও গলার সার্জনরা একটি চিঠি লিখেছিলেন। সেটাতে বলা হয়েছে, “কোভিড-১৯ এর বিস্তারের জন্য এই রোগীরা এখন পর্যন্ত হয়তো অজান্তেই বহনকারী হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছেন।”
অস্ট্রেলিয়ায় করোনা-আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেরই এ রকম অভিজ্ঞতা হচ্ছে। তাই, এদেশে করোনাভাইরাসের লক্ষণ হিসেবে ঘ্রাণ-শক্তি হারানোকে অফিশিয়ালি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। অনেকে নিজের অজান্তে এই ভাইরাসটি শরীরে বহন করছেন এবং হয়তো বা তাদের মাধ্যমে এর বিস্তৃতিও ঘটছে।
“আমি পরামর্শ দিব যে, যে-সব রোগী তাদের ঘ্রাণ-শক্তি হারিয়েছেন তাদেরকে পরীক্ষা করতে হবে এবং আইসোলেট (বিচ্ছিন্ন) করতে হবে। তারা হয়তো এই ভাইরাসটি শরীরে বহন করছেন। তাদেরকে সেভাবেই চিকিৎসা করতে হবে।”
তবে, অন্যরা মনে করছেন এ বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ, অস্ট্রেলিয়ায় বিষয়টি এখনও খুব একটা ব্যাপকতা লাভ করে নি।
ইউনিভার্সিটি অফ নিউ সাউথ ওয়েলসের সিনিয়র মেডিকেল ভাইরোলজিস্ট প্রফেসর বিল রোলিন্সন বলেন,
“আমরা শিখছি এবং ভিন্ন ভিন্ন জনগণের মাঝে এটি ভিন্ন ভিন্ন রূপে দেখা যাবে।”
বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ একমত হয়েছেন যে, করোনাভাইরাস পরীক্ষণের মানদণ্ড আরও বিস্তৃত করা হবে। এটা মূলত নির্ভর করবে কিটস-এর সংখ্যা এবং বিভিন্ন উপায়-উপকরণের উপর। সবাই যদি ঘরে অবস্থান করে তাহলে হয়তো এসবের দরকার হবে না।অস্ট্রেলিয়ানদেরকে অবশ্যই পরস্পরের মাঝে কমপক্ষে ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্যদের সঙ্গে হলে দু’জনের বেশি একত্রিত হওয়া যাবে না।
Source: SBS
আপনি যদি মনে করেন যে, আপনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাহলে আপনার ডাক্তারকে কল করুন। ডাক্তারের কাছে যাবেন না। আপনি ন্যাশনাল করোনাভাইরাস হেলথ ইনফরমেশন হটলাইনেও কল করতে পারেন এই নম্বরে: 1800 020 080
আপনার যদি শ্বাস-কষ্ট কিংবা মেডিকেল ইমার্জেন্সি দেখা দেয়, তাহলে 000 নম্বরে কল করুন।
আপনার ভাষায় কোভিড-১৯ এর সর্বশেষ আপডেট জানাতে এসবিএস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ৬৩ টি ভাষায় এ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য পাবেন। ভিজিট করুন: .
বাংলায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিষয়ক আমাদের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ভিজিট করুন: