যাত্রী ও ক্রু মিলিয়ে সর্বমোট ৪৯ ব্যক্তি নিয়ে ১৬,২০০ কিলোমিটার যাত্রাপথ পাড়ি দিয়ে বোয়িং ৭৮৭-৯ ফ্লাইটটি নিউ ইয়র্ক থেকে সিডনি পৌঁছায় রবিবার সকালে। এতে সময় লেগেছে ১৯ ঘণ্টা ১৬ মিনিট। যাত্রীদের বেশিরভাগই অবশ্য এয়ারওয়েজের কর্মী।
বার্তা সংস্থা সূত্রে জানা যায়, কোয়ান্টাসের চিফ একজিকিউটিভ অফিসার অ্যালান জয়েস যাত্রীবাহী বিমানটির অবতরণের পর বলেন,
“কোয়ান্টাসের জন্য এটি সত্যিই একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। অস্ট্রেলিয়ান এভিয়েশনের জন্যও এটি ঐতিহাসিক ঘটনা এবং বিশ্বের এভিয়েশনের জন্যও এটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।”
ইতোপূর্বে কোনো বাণিজ্যিক এয়ারক্রাফ্টই যাত্রী ও মালপত্র নিয়ে বিরতিহীনভাবে এতটা দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয় নি। সেজন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি ভর্তি করে নেওয়া হয়েছিল ফ্লাইটটিতে। এছাড়া স্বল্প-সংখ্যক যাত্রী ও কম ওজনের ব্যাগপত্র সঙ্গে নেওয়া হয়।
একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, যাত্রীরা তাদের ঘড়িগুলোতে সিডনির সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে নেয় এবং জেটল্যাগ কমাতে ইস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার সময় অনুসারে রাত হওয়া পর্যন্ত জেগে থাকে।
ছয় ঘণ্টা পরে তাদেরকে উচ্চ মাত্রায় শর্করাযুক্ত খাবার প্রদান করা হয় এবং তাদের ঘুমের সুবিধার্থে লাইটের আলো কমিয়ে দেওয়া হয়।
আগামী মাসে তারা লন্ডন-সিডনি বিরতিহীন ফ্লাইট পরীক্ষা করার পরিকল্পনা করছে।
এই রুটগুলোতে যাত্রীসেবা চালু করার বিষয়ে এ বছরের শেষ নাগাদ কোয়ান্টাস সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে জানা গেছে। যদি তারা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে ২০২২ কিংবা ২০২৩ সাল থেকে এগুলো শুরু করা হতে পারে।
‘দীর্ঘ বিমানযাত্রা’ নামক পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের উদ্যোগ হাতে নিয়েছে কোয়ান্টাস এয়ারওয়েজ। সেই কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই এই ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়েছে। মূলত বিরতিহীন এই দীর্ঘ বিমানযাত্রায় যাত্রীদের ওপর কী রকম প্রভাব পড়ে, সেটিই পরীক্ষা করে দেখতে চেয়েছে সংস্থাটি।
এ ছাড়া যাত্রীদের ঘুমের ধরন, মেলাটোনিন হরমোনের মাত্রা ও খাবার গ্রহণের ধরন সম্পর্কে গবেষণা করাও ছিল এর উদ্দেশ্য।
নিউ ইয়র্ক ও সিডনির মধ্যে প্রায় ১৫ ঘণ্টার সময়ের পার্থক্য রয়েছে। এ গবেষণার অন্যতম আরেকটি উদ্দেশ্য হলো যাত্রীদের ওপর জেটল্যাগের প্রভাব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা।