অবশেষে ভারতের দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের প্রধান মৌলানা সাদের খোঁজ পেয়েছে দিল্লি পুলিশ

ভারতের দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের প্রধান মৌলানা সাদের খোঁজ পেয়েছে দিল্লি পুলিশ। দিল্লির জাকির নগর এলাকায় তাঁর হদিশ মিলেছে।তাঁকে জেরা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ।তবে তাঁর কোয়ারেন্টাইন পর্ব শেষ হলেই জেরা করা হবে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে।মৌলানা সাদের বিরুদ্ধে করোনা সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করার অভিযোগ উঠেছিল।সাবধান করা সত্ত্বেও তিনি নিজামুদ্দিন মারকাজে তাবলীগ জামাতের সমাবেশ চালিয়ে যান বলে অভিযোগ।

Hazrat Nizamuddin Mosque Delhi

Hazrat Nizamuddin Mosque Delhi Source: Facebook

মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ওই ধর্মীয় সমাবেশ ঘিরে বিতর্ক দেখা দেয়।মৌলানা সাদ-সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে সরকারি ফরমান অমান্য করার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।এর আগে দিল্লি পুলিশকে প্রতুত্তরে মৌলানা সাদ জানিয়েছিলেন,তিনি গৃহ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।তবে তিনি কোথায় রয়েছেন তা নিয়ে পরিষ্কার কোনো তথ্য ছিল না দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ এর কাছে। এবার তাঁর হদিশ পেয়েছে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ।এর আগে দিল্লি পুলিশ মৌলানা সাদকে দুবার নোটিস পাঠিয়ে তলব করে।কিন্তু দেখা করেননি সাদ।আর করোনা আতঙ্কে তাঁর কাছেও যেতে পারেনি পুলিশ কর্মকর্তারা ।কারণ এর আগে, নিজামুদ্দিন মারকাজে তদন্তের কাজে যাওয়ার জন্য ১২ জনেরও বেশি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও পুলিশকর্মীকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, তদন্তকারী কর্মকর্তারা মারকাজের অর্থ জোগানের উৎস খতিয়ে দেখছেন বলে সূত্রের খবর।জানা গিয়েছে,উপসাগরীয় দেশগুলি থেকে মারকাজে অর্থের জোগান হয়।সেগুলির তদন্ত হচ্ছে।পুলিশ জানিয়েছে,মৌলানা সাদকে জেরার পরই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।এর আগে তাঁকে নোটিস পাঠিয়ে মোট ২৬টি প্রশ্নের উত্তর চেয়েছিল দিল্লি পুলিশ।কিন্তু সেইসময় গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকার কারণে বেশিরভাগ প্রশ্নেরই উত্তর দেননি নিজামুদ্দিন মারকাজের প্রধান মৌলানা সাদ।

এদিকে ,মহামারি জাতি-ধর্ম মানে না, রোগ কখনও হিন্দু-মুসলিম-খ্রীষ্টান দেখে হয় না।তাই তা নিয়ে রাজনীতি করবেন না।নিজামউদ্দিন জামাত ফেরতদের কথা বলতে গিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তিনি আবারও বলেছেন, এই জামাতে কারা কারা গিয়েছিলেন, সেটি বিদেশমন্ত্রক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দেখার কথা।সেটা দেখা রাজ্যের বিষয় নয়।কিন্তু যে মুহূর্তে বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে, রাজ্য অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি বিবেচনা করেছে।তাঁদের চিকিত্সার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, নিজামুদ্দিন ফেরতদের কতদিন করোনা আক্রান্ত, সেবিষয়ে এর আগে কোনও সাংবাদিক সম্মেলনে কথা বলেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তা নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা।তাঁদের উদ্দেশ্যে নাম না করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,কেন্দ্র কিংবা রাজ্য-দুই সরকারকেই কিছু নিয়মকানন মেনে চলতে হয়।কিছুক্ষেত্রে গোপনীয়তা বজায় রাখতে হয়।আমি জানি, যে তথ্যটা মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করবে,সেটা কেনই বা প্রকাশ্যে আনব অযথা।তবে এরপরই একটি তথ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, রাজারহাটে একটি কোয়ারেন্টিন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে।সেখানে ২০০জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে,গোটা ভারতে ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে করোনা,কিন্তু যেভাবে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে ভারত জুড়ে যেভাবে মুসলিম সম্প্রদায়কে নিয়ে নানা অপপ্রচার চলছে সেই বিষয়ে এবার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি।তাঁর সমালোচনামূলক টুইটের লক্ষ্য এবার হল শাসক দল বিজেপি।ওয়াইসি বলেছেন যে,করোনা ভাইরাসের অজুহাতে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু মানুষজনকে।

আসলে করোনা জেরে ভারতে জারি সাম্প্রতিক লকডাউনের সমালোচনা এড়াতেই এ জাতীয় প্রচেষ্টা করা হচ্ছে, অভিযোগ এআইএমআইএম প্রধানের।আসাউদ্দিন ওয়াইসি টুইটে লিখেছেন,অপরিকল্পিতভাবে লকডাউনের সমালোচনা এড়াতে এবং নতুন করে করোনার সংক্রমণে ব্যর্থ সরকার মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরাতেই এসব করছে। তাঁর মতে,বিজেপি প্রচারকদের জানা উচিত যে এভাবে হোয়াটসঅ্যাপ ফরোয়ার্ডের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসকে হারানো সম্ভব নয়,মুসলিমদের বলির পাঁঠা বানালেই করোনা ভাইরাসের ওষুধ মিলবে না, আর তাছাড়া এটা করোনা সংক্রান্ত পর্যাপ্ত পরীক্ষার বিকল্পও হতে পারে না।


Share
Published 9 April 2020 5:02am
By Partha Mukhapadhdhaya
Presented by Abu Arefin

Share this with family and friends