দিল্লির মুন্ডকা মেট্রো স্টেশনের কাছে তিন তলা একটি বিল্ডিংয়ের নিচের অফিস থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দমকলের ৩০টি ইঞ্জিন প্রায় ৭ ঘণ্টা ধরে চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। দিল্লি দমকল বিভাগের প্রধান অতুল গর্গ জানিয়েছেন, আগুন লাগার সময় প্রায় ১২০ জন উপস্থিত ছিলেন ওই বিল্ডিংয়ে। এদের মধ্যে ৪০ জন এখনও নিখোঁজ বলে খবর।
READ MORE
নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৫০ জনকে ওই বিল্ডিং থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। চার তলা বিল্ডিংটিতে যে কোম্পানি ছিল, তার দুই মালিক হরিশ গোয়েল এবং বরুণ গোয়েলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে বিল্ডিংটির মালিক মণীশ লাকরা এখনও পলাতক।
শুক্রবার বিকেল পৌঁছে পাঁচটা নাগাদ দিল্লির মুন্ডকা মেট্রো স্টেশনের কাছে চারতলা বিল্ডিংটিতে আগুন লাগায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ, দমকল বাহিনী। ৩০টি ইঞ্জিনের চেষ্টায় ৭ ঘণ্টারও বেশি সময় পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু ততক্ষণে চলে গিয়েছে বহু প্রাণ।
জানা গিয়েছে, ওই বিল্ডিংটিতে কাজের জন্য অন্তত ১২০ জন উপস্থিত ছিলেন। এর দোতলায় ছিল একটি সিসিটিভি ক্যামেরা এবং রাউটার সারাইয়ের কোম্পানি। তৃতীয় তলে মোটিভেশনাল স্পিচের একটি অনুষ্ঠান হচ্ছিল। সেখানে অনেকেই অংশ নিয়েছিলেন। ফলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিলতলাতে প্রাণহানির ঘটনা বেশি ঘটেছে। ভিতরে যারা ছিলেন, কিছু লোক বেরিয়ে আসেন। সামাজিক-যোগাযোগ-মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে, কেউ দড়ি ধরে দেওয়াল বেয়ে নামছেন। কেউ আগুন থেকে বাঁচতে লাফ দিচ্ছেন। ওই দৃশ্য মনে করিয়ে দিয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে স্টিফেন কোর্টের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে।
শনিবার সকালেও দিল্লির মুন্ডকা মেট্রো স্টেশনের কাছে ভস্মীভূত তিন তলা বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে দগ্ধ দেহাংশ। এর ফলে মৃতের সংখ্যা ২৭ থেকে আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই অগ্নিকাণ্ডে এখনও ২৫ জন মহিলা এবং ৫ জন পুরুষ নিখোঁজ বলেও সূত্রের খবর। সূত্রের খবর, ভস্মীভূত ওই তিন তলা বাড়িতে আগুন লাগার সময় প্রায় ২০০ জন উপস্থিত ছিলেন। যার মধ্যে ৩০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও ৪০ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। উদ্ধার করা হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ জনকে।
দিল্লি দমকল বিভাগের প্রধান অতুল গর্গ জানিয়েছেন, এই অফিসের মালিকেরা অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যাচাই করে দমকলের অনুমোদনের জন্য আবেদনই করেন নি। এমনকি, ওই বাড়ির বেশির ভাগ অফিসেই দমকল বিভাগের প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র নেই। প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা না মেনে ওই বাড়িতে অফিসগুলি চলছিল বলেও অভিযোগ করেছেন অতুল গর্গ।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অনেকেই।
প্রধানমন্ত্রী টুইট করেছেন, দিল্লির অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনায় আমি অত্যন্ত দুঃখিত। শোকাহত পরিবারগুলিকে সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। টুইটারে শোক প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টুইটারে লিখেছেন, আমি সংশ্লিষ্ট অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। প্রশাসন উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী শীঘ্রই পৌঁছচ্ছে। মানুষগুলিকে ওখান থেকে বার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াটাই এখন অগ্রাধিকার।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে নিহতদের পরিবারের জন্য ২ লাখ টাকা এবং আহতদের পরিবারের জন্য ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করা হয়েছে।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: