নিউ সাউথ ওয়েলস সরকার নিশ্চিত করেছে যে পাঁচটি অঞ্চলের কয়েক মিলিয়ন মানুষের জন্য লকডাউন এক সপ্তাহ বর্ধিত করা হয়েছে। রাজ্যটিতে বুধবার ২৭টি নতুন স্থানীয় সংক্রমণ রেকর্ড করা হয়েছে।
এই সংক্রমণগুলোর মধ্যে ১৮টি জ্ঞাত উৎস থেকে এবং ৯টি কেইস তদন্তাধীন আছে। নতুন সংক্রমিতদের অর্ধেকই তাদের সংক্রমণ ধরা পড়ার আগে আইসলেশনে ছিলেন।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বৃহত্তর সিডনি, উলংগং, শেলহারবার, ব্লু মাউন্টেন এবং সেন্ট্রাল কোস্ট এলাকায় আগামী ১৬ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানো হয়েছে যেটি শেষ হওয়ার কথা ৯ জুলাই।
নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার গ্ল্যাডিস বেরেজিক্লিয়ান বলেন, "আমরা এটা নিশ্চিত করতে চাই যে আমাদের বিপুল সংখ্যক নাগরিকদের ভ্যাকসিন না দেয়া পর্যন্ত এটিই যেন একমাত্র লকডাউন হয়।"
"আমরা চাচ্ছি না ব্যপারটা এমন হোক যেমন এক লকডাউন থেকে আরেক লকডাউন, লকডাউন নেই, আবার লকডাউন দাও, লকডাউন নেই, আবার লকডাউন দাও।
প্রিমিয়ার বলেন, ফেয়ারফিল্ড, কেন্টারব্যারি-ব্যাঙ্কসটাউন এবং লিভারপুল স্থানীয় সরকার এলাকার সংক্রমণ ঘনত্ব বেশি।
কর্তৃপক্ষ এই তিনটি এলাকায় আরও কঠোর বিধি আরোপ করতে যাচ্ছে।
চীফ মেডিকেল অফিসার ডঃ কেরি চ্যান্ট বলেন, "আমাদের দুশ্চিন্তা হচ্ছে, যে সংখ্যায় কমিউনিটিতে সংক্রমণ হচ্ছে তার পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যাচ্ছে, আমরা যখনি কোন সংক্রমিত ব্যক্তির বাড়িতে যাচ্ছি, ততক্ষণে তাদের বাড়ির অন্যরাও সংক্রমিত এবং এজন্য কমিউনিটিতে সবার অজ্ঞাতেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে।"
মিজ বেরেজিকলিয়ান বাসিন্দাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তারা যাতে অন্তত ওই তিন এলাকা এড়িয়ে চলে, তাছাড়া বর্তমান রেস্ট্রিকশন অনুযায়ী পুলিশের তৎপরতাও থাকবে।
দক্ষিণ-পূর্ব সিডনির সংক্রমণগুলো এখনো পরীক্ষা করা হচ্ছে, তবে এদের বেশিরভাগই নিজ বাড়িতে সংক্রমিত, তাদের সংক্রমণ ধরা পড়ার আগে তারা বিচ্ছিন্ন ছিল।
এখনো পর্যন্ত ৩৭ জন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তাদের ১৪ জন ৫৫ বছর বয়সের নিচে, এবং আটজনের বয়স ৩৫-এর নিচে।
সাতজনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে, তাদের একজনের বয়স ত্রিশের ঘরে। এই পরিসংখ্যানটি 'তরুণদের জন্য ওয়েইক আপ কল' বলে উল্লেখ করেন ডঃ চ্যান্ট।
শিক্ষার্থীরা দূর শিক্ষন পদ্ধতিতে ফিরে যাবে
যদিও আগামী সপ্তাহ থেকে স্কুল শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এই পাঁচটি অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বাড়ি থেকেই পড়াশোনা করবে, যাতে কমিউনিটিতে চলাফেরা সীমাবদ্ধ রাখা যায়।
মিজ বেরেজিকলিয়ান বলেন, "আমাদের হাজার হাজার প্রাপ্ত বয়স্করা সাধারণত যখন বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে আসে বা নিয়ে আসে তখন চলাচল বেড়ে যায়, তারা একে অপরের সাথে নিজের অজান্তেই যোগাযোগ করে, এই দিকটি বন্ধ করতে হবে।"
''এমন না যে বাচ্চারা স্কুলে নিরাপদ না, কিন্তু এখানে অনেক লোক একসাথে চলাচল করছে এবং যোগাযোগ করছে।"
তবে অপরিহার্য কর্মীদের বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারবে, এবং লকডাউনের বাইরের অঞ্চলগুলোর বাচ্চারাও ক্লাসরুমে যেতে পারবে।
ব্যবসায়ের জন্য 'বড় ধাক্কা'
বিজনেস নিউ সাউথ ওয়েলস বলেছে লকডাউন বাড়ানো ব্যবসাগুলোর জন্য 'বিরাট ধাক্কা', এবং মন্তব্য করেছে যে এসময়ে কোন জবকীপার নেই যা তাদের রাজস্ব আয়ে প্রভাব ফেলবে।
তবে এর চিফ এক্সেকিউটিভ ড্যানিয়েল হান্টার বলেন, স্বাস্থ্য এবং আর্থিক চাপের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা সরকারের জন্য 'খুবই দুরূহ কাজ', এবং ব্যবসায়ী সম্প্রদায় জানে যে কমিউনিটির নিরাপত্তার গুরুত্ব সবকিছুর উপরে।
এদিকে ন্যাশনাল রিটেইল এসোসিয়েশন (এনআরএ) বলেছে, সরকার জনগণের নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়েছে যা সঠিক, তবে বর্ধিত লকডাউনের ক্ষতিও অস্বীকার করা যাবে না।
এনআরএ জাতীয় মন্ত্রিসভার প্রতি আহবান জানিয়েছে ব্যবসায়ি মহলের আস্থা ফিরিয়ে আনতে তারা যাতে মহামারীর ক্ষতি থেকে বেরিয়ে আসার চার-পর্বের আর্থিক পরিকল্পনার বিস্তারিত প্রকাশ করে।
এসবিএস বাংলার রেডিও অনুষ্ঠান শুনুন প্রতি সোমবার এবং শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় এবং আরও খবরের জন্য আমাদের ফেইসবুক পেইজটি ভিজিট করুন।
আরো দেখুন: