ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেবে, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১৪৬ জনের। এই নিয়ে ভারতে কোভিডের কারণে মৃত্যু হল মোট চার হাজার ১৬৭ জনের।এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৬৯৫ জনের।৮৮৮ জন মারা গিয়েছেন গুজরাতে।মধ্যপ্রদেশে মৃতের সংখ্যা ৩০০, পশ্চিমবঙ্গে ২৭৮। শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে দিল্লি ,রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু।
ভারতে প্রথম করোনা সংক্রমণের সন্ধান মিলেছিল কেরলে।তার কয়েক দিনের মধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষে উঠে এসেছিল মহারাষ্ট্র।তার পর থেকে মহারাষ্ট্রের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়নি অন্য কোনও রাজ্যে।মহারাষ্ট্রে এখন আক্রান্তের সংখ্যা ৫২ হাজার ৬৬৭। পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৮১৬ জন।কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৪৯ জন।রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৭৮ জনের।
এদিকে করোনাভাইরাসের চিকিত্সায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ট্রায়াল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করোনা সংকটের সময় ভারতের থেকে এই ওষুধই আমদানি করে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিল বিভিন্ন দেশ।গত সপ্তাহে প্রকাশিত মেডিক্যাল জার্নালে এক গবেষণার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, কোভিড-১৯ রোগীদের উপর এই ওষুধ প্রয়োগ করা হলে মৃত্যুর সম্ভাবনা বাড়বে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-এর প্রধান টেডরস আধানম ঘেব্রেইসাস ভার্চুয়াল জানিয়েছেন,সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ট্রায়াল হু সাময়িকভাবে বন্ধ রাখছে।তিনি জানিয়েছেন, ডেটা সেফটি মনিটরিং বোর্ড সুরক্ষার দিকটি খতিয়ে দেখছে।তাই সাময়িকভাবে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ট্রায়াল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় এগজিকিউটিভ গ্রুপ।
এর আগে,মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাশাপাশি অন্যান্য রাষ্ট্রনেতারা করোনার চিকিত্সায় এই ওষুধের জন্য সওয়াল করলে ভারত আরও বেশি পরিমাণে এই ওষুধ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়।এই অবস্থায় বিপুল পরিমানে উৎপাদিত হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে বিপদে পড়তে পারেন ভারতের উৎপাদকরা।
এর মধ্যেই ভালো খবর,করোনা প্রতিরোধে পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই), মাস্ক ও গ্লাভস তৈরিতে গোটা দেশে অগ্রণী ভূমিকা নিতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ। বিশেষজ্ঞদের হিসাবে, গোটা দেশে ২০ হাজার কোটি টাকার বাজারের মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ৪ হাজার কোটি টাকার পণ্য সরবরাহ করবে এ রাজ্যেরই বিভিন্ন সংস্থা।
আগামী মাসেই কলকাতা সহ দেশের বড় শহরগুলির বাজারে আসছে বাংলায় তৈরি ডানলপ ব্র্যান্ডের করোনা-রোধক এন৯৫ মাস্ক। এন৯৫ মাস্ক তৈরি করার জন্য তাঁরা কলকাতার কাছে গঙ্গানগর ও রাজস্থানের নিমরানায় দুটি নয়া কারখানা গড়ে তুলেছেন।
এন৯৫ মাস্ক তৈরি করার জন্য তাইওয়ান অথবা দক্ষিণ কোরিয়া থেকে প্রয়োজনীয় মেশিন আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দাবি, প্রতি দিন এক লক্ষ এন৯৫ মাস্ক, ২ লক্ষ সার্জিকাল মাস্ক ও মাসে ১০,০০০ পিপিই উৎপাদন করা যাবে। অন্যদিকে, রাজ্যে হোসিয়ারি সংস্থাগুলি নেমেছে মাস্ক তৈরিতে।
২৫ মার্চ থেকে লকডাউন চালু হওয়ার পরে শুধু এ রাজ্যে হোসিয়ারি ক্ষেত্রের ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি। তাই এ রাজ্যের কারখানাতেও মাস্ক তৈরি শুরু হবে।এখন মাস্কের বিপুল চাহিদা। এই ব্যবসা ক্ষেত্রে সরকার রপ্তানি অনুমোদন করলে বছরে ২০০ কোটি মার্কিন ডলার পর্যন্ত রপ্তানি হতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গে বছরে ৪ হাজার কোটি টাকার মাস্ক ও পিপিই আগামী এক বছরে উৎপাদন হওয়ার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।বর্তমানে চিনের পর ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পিপিই উৎপাদনকারী দেশ।রাজ্যের এমএসএমই দপ্তরের সচিব রাজেশ পাণ্ডে জানিয়েছেন,স্যানিটাইজার থেকে শুরু করে মাস্ক, গ্লাভস ও পিপিই-তে পশ্চিমবঙ্গ একেবারে স্বয়ংনির্ভর।শুধুমাত্র এন৯৫ মাস্ক ছাড়া এখন আর অন্য কিছু রাজ্যকে বাইরে থেকে আমদানি করতে হয় না।