দিল্লির নিজামুদ্দিন মসজিদে আসা তাবলীগ জামাতের সাতজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে

দিল্লির নিজামুদ্দিনের একটি মসজিদে তাবলীগ জামাতে যোগ দেওয়ার পর ফিরে গিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সাতজন মারা গেছে এবং আক্রান্তের লক্ষণ থাকায় আরো দু'শ জনকে পরীক্ষা করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে তাবলীগ জামাতের শাদপন্থীদের হেড-কোয়ার্টার হিসেবে পরিচিত সেই মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।সেই সঙ্গে সাড়ে আটশ মানুষকে সেখান থেকে বাসে করে বিভিন্ন স্থানে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।দিল্লির পশ্চিম নিজামুদ্দিনে তবলিগ-ই-জামাতের মসজিদ থেকে কমপক্ষে ৮৫০ জনকে অন্য একটি জায়গায় কোয়ারান্টাইন করে রাখা হয়েছে বলে খবর। ইতিমধ্যেই কম করে ২০০ জনের শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা সংক্রমণ হয়েছে কিনা তার জন্যে পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে।ইতিমধ্যেই ২৪ জনের শরীরে ওই সংক্রমণ হয়েছে বলে প্রমাণও মিলেছে। সংক্রমিতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছে দিল্লি সরকার।

Hazrat Nizamuddin Mosque Delhi

Hazrat Nizamuddin Mosque Delhi Source: Facebook

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন, হাজার মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলার কারণে ওই মসজিদ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলার ব্যাপারে।বিশাল ওই মসজিদে গত ৯ ও ১০ মার্চ তাবলীগ জামাতের উদ্যোগে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।সেখানে হাজার হাজার ভারতীয় এবং শত শত বিদেশি যোগ দিতে গিয়েছিলেন।সেখান থেকে ফিরে গিয়ে ছয়জন মারা গেছে তেলাঙ্গানায়। অন্যদিকে শ্রীনগরে মারা গেছে একজন। ওই মসজিদ থেকে ফেরার পর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে ১০ জন শনাক্ত হয়েছে আন্দামান এবং নিকোবার দ্বীপে। ওই মসজিদে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, মিয়ানমার, কিরগিজস্তান, সৌদি আরব, আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, জেবুতি, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, ফিজি, ফ্রান্স ও কুয়েত থেকে তাবলীগের সদস্যরা এসেছিলেন। ওই মসজিদে যারা যারা এসেছেন, তাদের সবাইকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে জানানো হচ্ছে।

এখন ঘটনা হলো মারাত্মক করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে দেশজুড়ে যেখানে সমস্ত রকম সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্যে বারবার অনুরোধ জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার, ঠিক সেই সময় ওই নিয়ম উপেক্ষা করে মার্চ মাসের শুরুর দিকে ১০০ বছরেরও পুরোনো ওই মসজিদে একটি ধর্মীয় সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ১৯২৬ সালে স্থাপিত ওই মসজিদে পৃথিবীর নানা দেশে থেকে মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষেরা ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর করোনা সংক্রমণের কারণে প্রাণ খোয়াতে হয়েছে তেলেঙ্গানার ৬ বাসিন্দাকে,মারা গেছেন শ্রীনগরেরও এক ব্যক্তি।এদিকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে ওই জমায়েতে অংশ নেওয়া ৯ ব্যক্তির মধ্যে করোনা সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে।পাশাপাশি তাঁদের মধ্যে এক ব্যক্তির স্ত্রীর দেহেও মিলেছে ওই মারণ ভাইরাস সংক্রমণের প্রমাণ।

এর মধ্যে খবর করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে আর্থিকভাবেও প্রস্তুত ভারত।কেন্দ্রের কাছে এই মুহূর্তে রয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।তারমধ্যে ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে স্টেট ডিজাস্টার রিলিফ ফান্ডে।একই সঙ্গে ২০২০-২১ অর্থবর্ষের ডিজাস্টার রিলিফ অ্যান্ড মিটিগেশনের জন্যেও বরাদ্দ করা হয়েছে একই অঙ্কের টাকা।এই তহবিলের পাশাপাশি বাড়তি অর্থ ভান্ডার হিসেবে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা পড়া আর্থিক সাহায্য।খবর, ৩০ মার্চ পর্যন্ত এসডিআরএফ তহবিলে ৩০ হাজার কোটি টাকা ছিল।প্রত্যেক বছর প্রতিটি রাজ্যের ত্রাণ এবং রিহ্যাবের জন্যে যে অর্থ বরাদ্দ হয় তা দিয়েই এই তহবিল গঠন করা হয়।যেহেতু এসডিআরএফ এবং এনডিআরএফ তহবিলের টাকা নন-ল্যাপসেবল, তাই প্রতি বছর পুরনো অঙ্কে যোগ হয় নতুন বরাদ্দ।


Share
Published 31 March 2020 11:10pm
By Partha Mukhapadhdhaya
Presented by Abu Arefin

Share this with family and friends