করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীর সময়টিতে কাজ হারানোর পর সিঙ্গল মাদার কায়লাহ গ্রাইসকে দু’বার ঘর থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এসবিএস নিউজকে তিনি বলেন,
“আমার মূল উদ্বেগ ছিল এটা নিশ্চিত করা যে, আমাদের কাছে খাবার কেনার মতো পর্যন্ত অর্থ আছে।”
ইংল্যান্ডের লিভারপুল থেকে আসা ৩৩ বছর বয়সী এই নারী তার ১৪ বছর বয়সী ছেলে নিয়ে তিন বছর ধরে মেলবোর্নে বাস করছেন।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে তিনি ফেডারাল সরকারের ওয়েলফেয়ার সহায়তা পাওয়ার উপযুক্ত নন।
তিনি বলেন,
“আমি বাড়ি ভাড়া দিতে পারছিলাম না, আমার কাছে অর্থ ছিল না।”
“আমি নির্ভর করেছিলাম পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, ফুডব্যাংক এবং দাতব্যের উপরে।”
মিজ গ্রাইসের বাড়িওয়ালার সাথে আলাপ-আলোচনা ব্যর্থ হলে বিষয়টি ভিক্টোরিয়ান সিভিল অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল পর্যন্ত গড়ায়। তারা সিদ্ধান্ত দেয় যে, মিজ গ্রাইস তার ভাড়া করা বাসায় থাকতে পারবেন।
তখন থেকে মিজ গ্রাইসের ১২,০০০ ডলার ঋণ ছাড় দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, মাথার উপরে একটা ছাদ থাকার ব্যাপারে তাকে সহায়তা করেছে সেন্টার অ্যান্ড হাউজিং ইউনিয়ন।

International student Kayleigh Grice has twice been threatened with eviction. Source: Supplied
ভিক্টোরিয়ায় গত মে মাসে কোভিড-১৯ মহামারীর এর পরিপ্রেক্ষিতে এটি গঠিত হয়। এটি মূলত স্বেচ্ছাসেবীরা পরিচালনা করেন।
এই রেন্টার অ্যান্ড হাউজিং ইউনিয়নের সেক্রেটারি আইরিন-সলিডিস নইয়েস এসবিএস নিউজকে বলেন,
“শত ভাড়াটিয়াদেরকে আমরা সহায়তা করেছি মেনে নেওয়ার বদলে ভাড়া কমানোর ক্ষেত্রে এবং ঋণ ও ভাড়ার মেয়াদ শেষ হওয়া থেকে বাঁচতে।”
“এই ঋণগুলো পরিশোধ করা সম্ভব নয় এবং এগুলো আমার করা প্রায় অসম্ভব। মানুষের কোনো উপার্জন নেই এবং বাড়ির মালিক ও এজেন্টদেরকে বুঝতে হবে যে, তাদের কাছে কোনো অর্থ নেই।”
অস্থায়ী ভিসাধারীদেরকে তারা অনেক সহায়তা করেছে। তবে, মিজ সোলিডিস বলেন, ভাড়ার কারণে বহু অস্ট্রেলিয়ান মানসিক চাপে রয়েছেন।
তিনি বলেন,
“অস্ট্রেলিয়ায় ৩০ শতাংশ লোক ভাড়াটিয়া। এদের মধ্যে শতকরা ৪০ ভাগ ভাড়া হিসেবে তাদের উপার্জনের অর্ধেকেরও বেশি অর্থ প্রদান করেন আর তার স্বল্প-আয়ে জীবনধারণ করেন।”
ভিক্টোরিয়ায় ২০২১ সালের মার্চের শেষ পর্যন্ত বাড়ি থেকে উচ্ছেদের ক্ষেত্রে মরাটোরিয়াম বা ঋণ পরিশোধ বিলম্বানাধিকার রয়েছে।
বাড়িওয়ালা যদি বাড়ি বিক্রি করেন কিংবা তার পরিবারের সদস্যরা যদি সেই বাড়িতে উঠতে চায়, সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রয়েছে।
বাড়িওয়ালারা মর্টগেজ ডিফেরাল পেতে পারেন। আর, তাদের মধ্যে যারা ভাড়াটেদেরকে ৫০ শতাংশ বা আরও বেশি ভাড়া ছাড় দেবেন তারা রেন্ট রিলিফ এবং ল্যান্ড ট্যাক্স রিলিফ পাওয়ার উপযোগী হবেন।
ইতালির রোম থেকে আসা মার্টিনা পিটোটি এবং ইরোস লেপোরিকে এখন নতুন বাড়ি খুঁজতে হচ্ছে। কারণ, তাদের বাড়িওয়ালা বাড়ি বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মিজ পিটোটি এসবিএস নিউজকে বলেন,
“(এটি) অনেক বেশি মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী। কারণ, আমাদেরকে অনেক কিছু নিয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে। ইরোসের কোনো কাজ নেই।”
ইউনিয়নের সহায়তায় এবং বাড়িওয়ালার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ৮০০০ ডলার বকেয়া ভাড়া এখন ছাড় দেওয়া হয়েছে।
মিজ পিটোটি বলেন,
“আমরা অনুভব করছি, নতুনভাবে শুরু করার বিষয়ে আশাবাদী হওয়ার মতো কারণ রয়েছে।”
যখন জবসিকার এবং জবকিপার পেমেন্ট বন্ধ হয়ে যাবে এবং তখন কাকতালীয়ভাবে মরাটোরিয়ামও তুলে নেওয়া হবে। সেই সময়ে উচ্ছেদের আশঙ্কা এবং বাড়ি ভাড়া বিষয়ক মানসিক চাপ বৃদ্ধি পাবে।
মরাটোরিয়াম তুলে নেওয়ার পরবর্তী সময়ের তারিখ উল্লেখ করে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ প্রদান করা হচ্ছে।
মিজ মোলিডিস বলেন,
“এই সঙ্কটের আরও দীর্ঘমেয়াদী সমাধান চাই আমরা।”