ব্রিটেনের সরকারের বিরুদ্ধে এক আইনি লড়াইয়ে জয়লাভ করেছেন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এ যোগ দিতে সিরিয়ায় যাওয়া শামীমা বেগম। ব্রিটেনের আপিল আদালত গত বৃহস্পতিবার রায় দিয়েছে, ব্রিটিশ সরকার তার নাগরিকত্ব বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য এই নারী ব্রিটেনে ফিরতে পারবেন।
তবে, তাকে আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবি।
হোম অফিস যদি ব্রিটেনের আপিল আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে তাহলে সেটা চলে যাবে সুপ্রিম কোর্টের হাতে।
শামীমার আইনজীবি তাসনিম আখুঞ্জি বিবিসি বাংলার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, পুরো বিষয়টি এখন নির্ভর করছে ব্রিটিশ হোম অফিসের ওপর।
যুক্তরাজ্য তার নাগরিকত্ব বাতিল করলে এর বিরুদ্ধে আবেদন করেন শামীমা বেগমের আইনজীবি। কিন্তু, গত ফেব্রুয়ারিতে সেই মামলার প্রথম ধাপে হেরে যান তিনি।
A handout photo from on 20 February 2015 showing Shamima Begum. Source: LONDON METROPLITAN POLICE
কে এই শামীমা? কেন তিনি আইএস-এ যোগদান করতে গিয়েছিলেন?
ইসলামিক স্টেটে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে লন্ডন ছেড়েছিলেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত শামীমা বেগম। আরও দু’জন বান্ধবীসহ পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির এই ছাত্রী সিরিয়ায় গমন করেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর।
আইএস-এ যোগদানের পর তিনি ডেনমার্কের বংশোদ্ভূত এক ধর্মান্তরিত ‘জিহাদি’কে বিয়ে করেন বলে দাবি করেন তিনি। এর পর তার তিনটি সন্তান হলেও এখন তারা কেউই জীবিত নেই।
চার বছর পরে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবির থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
বর্তমানে তার বয়স ২০ বছর। শামীমা বর্তমানে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের ‘আলরোজ’ নামের একটি শরণার্থীশিবিরে আছেন।
যুক্তরাজ্যের পর শামীমা বেগম কি বাংলাদেশেও প্রবেশের সুযোগ পাবেন?
যুক্তরাজ্যের স্পেশাল ইমিগ্রান্ট অ্যাপিলস কমিশন মন্তব্য করেছিল, শামীমা বাংলাদেশে নাগরিকত্ব চাইতে পারেন। তিনি তার মায়ের দিক থেকে ‘বংশানুক্রমিকভাবে বাংলাদেশের নাগরিক’ এবং তিনি রাষ্ট্রহীন নন।
একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এম আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হককে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, “শামীমা বেগমের বিষয়টি বাংলাদেশের কোনো বিষয় নয়- এটি ব্রিটিশ সরকারের বিষয়।”
গত ১৬ জুন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক জানায়, ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগম কখনও বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন না। বাংলাদেশের স্পষ্ট অবস্থান হলো, এ দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার কোনো অধিকার তার নেই। তাকে বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ারও সুযোগ নেই।