জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি: ২০২৪ সাল ছিল রেকর্ড উষ্ণতম বছর

ENERGY AND POWER STATION STOCK

Stock images of a power station in the Hunter Valley region, Tuesday, July. 15, 2014. (AAP Image/Nikki Short) NO ARCHIVING Credit: Nikki Short/AAPIMAGE

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা এবং নাসা নিশ্চিত করেছে যে গ্রিনহাউস গ্যাস চালিত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধির রেকর্ডে ২০২৪ সাল ছিল সবচেয়ে উষ্ণ বছর। এবং আবহাওয়া ব্যুরো বলছে ২০১৯ সালের পর এটি অস্ট্রেলিয়ায় রেকর্ডে দ্বিতীয় উষ্ণতম বছর।


প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজি বলেছেন, জলবায়ু সংকটের কারণে আরও চরম আবহাওয়ার ঘটনা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য মানুষদের ও বিভিন্ন সংস্থাকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

তার এ কথার সমর্থনে প্রাথমিক কারণটি হলো গ্রিনহাউস গ্যাস-চালিত জলবায়ু পরিবর্তন।

রেকর্ডে ২০২৪ সালকে সবচেয়ে উষ্ণতম বছর হিসাবে নতুন তথ্য নিশ্চিত করার পর জলবায়ু বিজ্ঞানীরা আরো বিপদের কথা শোনাচ্ছেন।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (W-M-O) এবং নাসা (NASA) সহ ছয়টি জলবায়ু সংস্থা তাদের ২০২৪ সালের তাপমাত্রার তথ্য প্রকাশ করেছে, যা দেখিয়েছে যে বছরটি সকল বৈশ্বিক রেকর্ড ভেঙেছে এবং - প্রথমবারের মতো - প্রাক-শিল্প সময়ের চেয়ে তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে।

২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির অধীনে বিশ্বজুড়ে সরকারগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে জরুরিভাবে কাজ করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঠেকাতে চেষ্টা করবে।

নাসার সিনিয়র জলবায়ু উপদেষ্টা ডঃ ক্যাথরিন ক্যালভিন বলেছেন যে জলবায়ুর এই পরিবর্তনগুলি সারা বিশ্বের মানুষ এবং ইকোসিস্টেমের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।

বার্ষিক তাপমাত্রার প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো যখন দাবানল দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়াকে ধ্বংস করে দিয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেসের কিছু অংশ ধ্বংস করেছে এবং এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অন্তত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

দাবানলের অন্যতম কারণ হচ্ছে, এ অঞ্চলের খরা, যেখানে ২০২৪ সালের শেষ তিন মাসে এই অঞ্চলে মাত্র ০.০৩ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়, যার ফলে গাছপালা শুকিয়ে গিয়ে আগুনের জ্বালানীর জন্য অনুকূল হয়ে উঠে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ডেপুটি সেক্রেটারি-জেনারেল কো ব্যারেট বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন এই ধরনের আরও ভয়াবহ দাবানলের পরিস্থিতি তৈরি করতে সাহায্য করছে।

কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার রিপাবলিকান মিত্ররা দাবানলের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করতে অস্বীকার করেছেন, তারা বরং ডেমোক্র্যাট নীতির দিকে আঙুল তুলেছেন।

ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভানিয়ার জলবায়ু বিজ্ঞানী ডঃ মাইকেল মান, ইউ-কে-এর চ্যানেল ফোর-কে বলেছেন যে রাজনীতিবিদরা জলবায়ুতে জীবাশ্ম জ্বালানি উত্তোলন এবং পোড়ানোর নীতিগুলির কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে তা উপেক্ষা করতে পারবেন না।

বিজ্ঞানীরা আরও সতর্ক করছেন যে ২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্য্যন্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে সীমার মধ্যে রাখার যে দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যমাত্রার কথা বলা হয়েছিল, তা ইতিমধ্যে ছাড়িয়ে বিশ্ব উষ্ণায়নের এক অজানা অধ্যায়ে প্রবেশ করছে।

লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স-এর গ্রান্থাম ইনস্টিটিউট অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড দ্য এনভায়রনমেন্ট-এর নীতি পরিচালক বব ওয়ার্ড বলেছেন, যদি এটি মোকাবেলা করা না হয়, তাহলে জলবায়ু পরিবর্তন মানুষের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে।

এদিকে আবহাওয়া ব্যুরো অস্ট্রেলিয়ায় ২০২৪ সালকে ১৯১০ সালের রেকর্ড শুরুর পর থেকে দ্বিতীয় উষ্ণতম বছর হিসাবে রিপোর্ট করেছে।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সাল ছিল সবচেয়ে উষ্ণতম বছর, সে বছরই বিধ্বংসী ব্ল্যাক সামার বুশফায়ারের ঘটনা ঘটেছিল।

শীতল লা নিনা গ্রীষ্মের পর, অস্ট্রেলিয়া আবারও বুশফায়ারে জর্জরিত হয়েছে। এই সাম্প্রতিক সময়ে ভিক্টোরিয়ার গ্র্যাম্পিয়ান অঞ্চলে ছুটির সময়কালে এক বিশাল দাবানলে ৭৬,০০০ হেক্টরেরও বেশি জাতীয় উদ্যান এবং কৃষি জমি পুড়ে গেছে৷

প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থোনি আলবানিজি সতর্ক করে বলেছেন যে জলবায়ু পরিবর্তন বাস্তব।

"শুধু সাম্প্রতিক বছরগুলোতেই নয়, বরং কয়েক দশক ধরে আমরা সবচেয়ে উষ্ণতম বছরের রেকর্ড দেখতে পাচ্ছি, এবং এমন আরও চরম আবহাওয়ার ঘটনার জন্য মানুষ ও বিভিন্ন সংস্থাকে প্রস্তুত থাকতে হবে," বলেন তিনি।

সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ার বাটনে ক্লিক করুন।

এসবিএস বাংলার আরও শুনতে ভিজিট করুন আমাদের 

আপনি কি জানেন, এসবিএস বাংলা অনুষ্ঠান এখন ইউটিউব এবং পাওয়া যাচ্ছে?

এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।

এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন 

আর, এসবিএস বাংলার এবং ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন 

চ্যানেল। উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় 




Share