ওয়ানডে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসরে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের্ আগেই পাল্টে ফেলেছে নিজেদের। কেপ টাউন টেস্টে বল টেম্পারিং কাণ্ডের পর অনেকটা অগোছালো হয়ে গিয়েছিলো টিম অস্ট্রেলিয়া। দলের সেরা দুই ব্যাটসম্যান স্মিথ ও ওয়ার্নারকে হারিয়ে ২৬ম্যাচের মধ্যে জয় ছিল মাত্র চারটিতে। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে বেরিয়ে এসেছে তারা। স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার শাস্তি কাটিয়ে দলে ফিরেছেন।
বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে ও নিজেদের সবশেষ সিরিজে উড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তানকে। এর আগের সিরিজে তারা জিতেছে ভারতের মাটিতে। যেখানে প্রথম দুই ম্যাচ হারার পর ঘুরে দাঁড়িয়ে শেষ তিন ম্যাচ জিতে নেয় অ্যারন ফিঞ্চের দল। সব মিলিয়ে টানা আট ম্যাচে জিতে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টে খেলতে যাচ্ছে শিরোপাধারীরা। বিশ্বকাপ মিশনের প্রথম খেলা ১ জুন আফগানিস্তান এর বিপক্ষে।পাঁচবারের বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ী অস্ট্রেলিয়ার নজর এখন ষষ্ঠ শিরোপায়।
বিশ্বকাপ মিশনেবেশ কষ্টকর ছিল নির্বাচকদের দল নির্বাচন নিয়ে, প্রায় সবাই ছন্দে থাকায় সমস্যায় পড়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকরা। কাকে রেখে কাকে বাদ দেবেন এই সিদ্ধান্তটা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি সিরিজে দারুণ ব্যাটিং করা উসমান খাওয়াজা ধরে রাখেন তার জায়গা। তবে একাদশে জায়গা পাওয়া কঠিন হবে বাঁহাতি এই ওপেনারের জন্য। ছন্দ ফিরে পেয়েছেন অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। ওয়ার্নারের সঙ্গে তিনি করতে পারেন ইনিংস উদ্বোধন।বিশ্বকাপ দলে নেই পিটার হ্যান্ডসকম। ভারতের বিপক্ষে সিরিজে ভালো করেও বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাননি তিনি। এ বছর ১৩ ওয়ানডেতে এক সেঞ্চুরি ও তিন ফিফটিতে তার গড় ৪৩.৫৪, স্ট্রাইক রেট ৯৮.১৫। গত মাসে ভারত সফরে ৩৫৯ রান তাড়া করে অস্ট্রেলিয়ার জেতা ম্যাচে খেলেছিলেন ১০৫ বলে ১১৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। অস্ট্রেলিয়ার শেষ আট ওয়ানডেতে টানা জয়ে একশর বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করা তিন ব্যাটসম্যানের একজন তিনি। ভারতের বিপক্ষে মোহালিতে ৩৫৯ রান তাড়া করে পাওয়া জয়ে ৪৩ বলে ৮৪ রান করা অ্যাশটন টার্নারও জায়গা পাননি স্কোয়াডে। চোটের কারণে সুযোগ পাননি পেসার জশ হেইজেলউডও।
Queen Elizabeth II joins the captains of the teams taking part in the ICC Cricket World Cup for a photograph in the 1844 Room at Buckingham Palace. Source: Yui Mok/PA Wire
ইংল্যান্ডের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে যে কোনো বোলিংয়ের বিপক্ষে তাণ্ডব চালাতে সক্ষম অস্ট্রেলিয়া।বিস্ফোরক উদ্বোধনী জুটি, মিডল অর্ডারের স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, শন মার্শ, অ্যালেক্স কেয়ারি, মার্কাস স্টয়নিস মতো প্রতিভাবান ব্যাটসম্যানরা মিলে স্কোর নিয়ে যেতে পারেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। দুই অলরাউন্ডার স্টয়নিস ও ম্যাক্সওয়েলের উপস্থিতিতে বেড়েছে ব্যাটিং গভীরতা।
গত বিশকাপে অস্ট্রেলিয়ার জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল তিন বাঁহাতি পেসারের। এদের একজন মিচেল স্টার্ক আছেন এবারও। বিশ্বকাপের আগে স্টার্ককে প্রমাণ করতে হবে ফিটনেস। চোটের জন্য ছিটকে গেছেন জাই রিচার্ডসন। তার জায়গায় দলে এসেছেন কেন রিচার্ডসন। বোলিংয়ে বেড়েছে অনেক বিকল্প।
বোলিংয়ে বৈচিত্র্যের কমতি নেই অস্ট্রেলিয়ার স্কোয়াডে। গতিময় পেসার কামিন্স, স্টার্ক-রিচার্ডসন-কামিন্সের সঙ্গী বাঁহাতি পেসার জেসন বেহরেনডর্ফ ও ডানহাতি পেসার ন্যাথান কোল্টার-নাইল। বিশেষজ্ঞ স্পিনার দুই জন, অভিজ্ঞ অফ স্পিনার ন্যাথান লায়ন ও তরুণ লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা।
বিশ্বকাপ শিরোপা কী করে জিততে হয় অস্ট্রেলিয়ার ভালো করে জানা আছে। ১৯৮৭, ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭ ও ২০১৫ এর শিরোপা জয়ের ধারবাহিকতায় এবারো জয়ের প্রত্যাশা নিয়ে ১ জুন মাঠে নামছে অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়া দল: অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক, ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, উসমান খাওয়াজা, শন মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিস, অ্যালেক্স কেয়ারি, প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, কেন রিচার্ডসন, ন্যাথান কোল্টার-নাইল, জেসন বেহরেনডর্ফ, অ্যাডাম জ্যাম্পা, ন্যাথান লায়ন।