যেসব ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসছে
ইনকাম ফ্রী এরিয়া (Income free area)
সার্ভিসেস অস্ট্রেলিয়া সূত্রে জানা যাচ্ছে যে, জবসীকার এবং ইয়ুথ এলাউন্স গ্রহীতাদের ইনকাম ফ্রী এরিয়া ৩০০ ডলারে উন্নীত করা হবে। তার মানে আপনার সেন্টারলিংক পেমেন্ট হ্রাস পাওয়ার পূর্বে আগের তুলনায় আপনি আরো বেশি আয় করতে পারছেন।
জবসীকার পেমেন্ট এবং ইয়ুথ এলাউন্স গ্রহীতাদের এর আগে ইনকাম ফ্রী এরিয়া ছিল যথাক্রমে ১০৬ ও ১৪৩ ডলার। এছাড়া পার্টনারদের ইনকাম টেস্টের বেলাতেও কিছু পরিবর্তন এসেছে।
তবে করোনাভাইরাস সাপ্লিমেন্ট বলে যে পেমেন্ট দেয়া হচ্ছে তা আয় হিসেবে গণ্য করা হয় না।
মীনস টেস্ট (Means test)
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ থেকে পেমেন্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে মীনস টেস্ট পুনরায় শুরু হবে। এতে অ্যাসেট টেস্টিংও অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া নতুন আবেদনের জন্য লিকুইড অ্যাসেট (নগদ অর্থ) টেস্টও চালু হবে।
লিকুইড অ্যাসেট ওয়েটিং পিরিয়ড (Liquid asset waiting period)
সেন্টারলিংক থেকে প্রথম পেমেন্ট পেতে যে সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে তাকে 'লিকুইড অ্যাসেট ওয়েটিং পিরিয়ড' বলা হচ্ছে, এই পেমেন্ট নির্ভর করছে আপনার কাছে কি পরিমান অর্থ খরচের জন্য রয়েছে। তবে এই 'লিকুইড অ্যাসেট ওয়েটিং পিরিয়ড' প্রযোজ্য হবে তাদের জন্য যারা ২৫ সেপ্টেম্বরের পর পেমেন্টের জন্য নতুন আবেদন করবেন। কেউ যদি ইতিমধ্যে পেমেন্ট পেতে শুরু করেন তার ক্ষেত্রে এই অপেক্ষা প্রযোজ্য হবে না।
অ্যাসেট টেস্ট (Asset test)
সেন্টারলিংক থেকে পেমেন্ট পেতে আপনি যোগ্য কিনা এজন্য সাধারণত 'অ্যাসেট টেস্ট' করা হয়, এজন্য আবেদনকারীর সম্পদ যেমন বাড়ী-গাড়ী, নগদ অর্থ কিংবা ফিক্সড ডিপোজিট-শেয়ার ইত্যাদির মূল্য বিবেচনা করা হয়। বর্তমানে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের জন্য কোন কোন পেমেন্টের ক্ষেত্রে অ্যাসেট টেস্ট বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ২৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে এসব পেমেন্টের জন্য অ্যাসেট টেস্ট পুনরায় চালু হবে। যে সব পেমেন্টের জন্য অ্যাসেট টেস্ট প্রযোজ্য সেগুলো হচ্ছে: জবসীকার পেমেন্ট, প্যারেন্টিং পেমেন্ট, ইয়ুথ এলাউয়েন্স, অসস্টাডি (Austudy), এবস্টাডি (ABSTUDY)।
২৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে ওয়েলফেয়ার পেমেন্টের জন্য অ্যাসেট টেস্ট পুনরায় চালু হবে। Source: Services Australia
আপনি যদি ২৩ মার্চ, ২০২০ থেকে কোন পেমেন্ট পেতে শুরু করেন তবে আপনাকে ২৫ সেপ্টেম্বরের পূর্বেই আপনার সম্পদের তথ্য হালনাগাদ করতে বলা হবে। সেন্টারলিংক একাউন্টের 'টাস্ক'-এর মাধ্যমে এই তথ্য হালনাগাদ করতে হবে।
পার্টনার ইনকাম টেস্টিং (Partner income testing)
জবসীকার পেমেন্ট পার্টনার ইনকাম টেস্ট-এর ক্ষেত্রে যেসব পরিবর্তন আসছে: আপনার পার্টনার প্রতি দুসপ্তাহে যদি ১১৬৫ ডলারের ওপরে আয় করেন তাহলে ডলার প্রতি আপনার জবসীকার পেমেন্ট হ্রাস পাবে ২৭ সেন্ট করে, যা আগে ছিল ২৫ সেন্ট।
জবসীকার পেমেন্ট গ্রহীতা হিসেবে আপনি যদি পাক্ষিক ৩০০ ডলারের কম আয় করেন, তাহলে আপনার পার্টনার পাক্ষিক ৩০৮৬.১১ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। দুজনের আয় পাক্ষিক ৩৩৮৬.১১ ডলার হলে আপনি কোন জবসীকার পেমেন্ট পাবেন না।
এখানে উল্লেখ্য যে, জবসীকারসহ যেকোন পেমেন্ট পেতে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে অ্যাসেট টেস্ট হালনাগাদ করতে হবে। এ সংক্রান্ত তথ্য হালনাগাদ করতে সেন্টারলিংকের ওয়েবসাইটে বা অনলাইন একাউন্টে হোমপেজে টাস্ক দেয়া হবে।
করোনাভাইরাস সাপ্লিমেন্ট (Coronavirus supplement) পেমেন্ট কমবে
করোনাভাইরাস সাপ্লিমেন্ট হিসেবে দেয়া পেমেন্ট বর্তমানে ৫৫০ ডলার করে দেয়া হচ্ছে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে এটি কমে ২৫০ ডলার হবে, যা বলবৎ থাকবে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত।
এখানে উল্লেখ্য যে করোনাভাইরাস সাপ্লিমেন্ট হিসেবে দেয়া পেমেন্টকে আয় হিসেবে গণ্য করা হবে না এবং এটি আয়কর মুক্ত। কোন পেমেন্টের জন্য আপনার আয় ঘোষণা করতে করোনাভাইরাস সাপ্লিমেন্ট উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই।
কমিউনিটিতে উদ্বেগ
এদিকে করোনাভাইরাস ওয়েলফেয়ার পেমেন্ট কমিয়ে দেয়া নিয়ে কমিউনিটিতে উদ্বেগ বেড়েছে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে অন্তত ৮০ ভাগ পেমেন্ট গ্রহীতা যথেষ্ট খাবার পাবেন না। বর্তমানে ২.২ মিলিয়ন জবসীকার, তরুণ, এবং পিতামাতারা পাক্ষিক ৫৫০ ডলার করে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের জন্য অতিরিক্ত অর্থ পাচ্ছেন। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে তা কমে আসছে ২৫০ ডলারে, আর এতে উদ্বিগ্ন পেমেন্ট গ্রহীতারা। তারা বলছেন এর ফলে বাড়ি ভাড়া, বিল দেবার পর অনেককেই দৈনিক ১৪ ডলারেরও কমে জীবন ধারণ করতে হবে, থাকতে হতে পারে উপোস।
A file photo of people lining up at a Melbourne Centrelink office. Source: AAP
অস্ট্রেলিয়ান কাউন্সিল অফ সোশ্যাল সার্ভিস সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল নিয়ে সরকারকে চাপ দিচ্ছে যাতে বর্তমান হারে যে অতিরিক্ত অর্থ দেয়া হচ্ছে তা যেন বজায় থাকে।
সংস্থার চিফ এক্সেকিউটিভ ক্যাসান্দ্রা গোল্ডি কোলিয়ালিশন সরকারের প্রতি সেপ্টেম্বরের পরেও ইনকাম সাপোর্ট চলমান রাখতে আহবান জানিয়েছেন। তিনি জবসীকারসহ অন্যান্য ওয়েলফেয়ার পেমেন্টও স্থায়ীভাবে বাড়াতে আহবান জানিয়েছেন।
ওই সমীক্ষার ৯০ শতাংশেরও বেশি উত্তরদাতা জানিয়েছেন যে তারা ভীতির মধ্যে আছেন, কারণ জবসীকার পেমেন্ট যদি আগের রেটে দেয়া হয় তবে ক্রিস্টমাসের সময়ে তাদের আর্থিক অবস্থা আরো খারাপ হবে।
আরও পড়ুনঃ