ভারত সফরের প্রথম দিনে দিল্লির হজরত নিজামউদ্দিন আউলিয়া দরগায় যাওয়ার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
মঙ্গলবার গান্ধীঘাটে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন তিনি। সফরের শেষ দিন রাজস্থানের অজমেঢ়ে যাবেন তিনি। সেখান থেকে বাংলাদেশ ফিরে যেতে পারেন। সূত্রের খবর, চারদিনের সফরে দু’দেশের মধ্যে জলবণ্টন, রেল, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি-সহ সাতটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
বাংলাদেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, তিনি আশাবাদী শেখ হাসিনার সফর সফল হবে। তাদের লক্ষ্যপূরণে সাহায্য করবে এই সফর। সফর শেষে ৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এর আগে, ২০১৯ সালের অক্টোবরে ভারতে এসেছিলেন তিনি।
এদিকে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের সফরে নেপাল থেকে জিএমআর-এর মতো কোম্পানি ভারতের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে জলবিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে চুক্তি সম্পাদন হবে। দিল্লির খবর, রাশিয়া থেকে যে তেল ভারতে আসে সেই তেলের একটা অংশ যাতে বাংলাদেশ ভারত থেকে সরাসরি কিনতে পারে তার জন্য আবেদন জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দিল্লির খবর, এই আবেদনে শুধু সাড়া নয়, যাতে ভর্তুকিও দেওয়া যায়, তার জন্য উদ্যোগী হয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেক্ষেত্রে পেট্রল এবং ডিজেল, দুটোই ভারত থেকে ভর্তুকি মূল্যে বাংলাদেশ পেলে সেখানে সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে তা অনেকটাই মিটে যাবে বলে আশাবাদী কূটনৈতিক মহল। কারণ, বিদ্যুৎ থেকে কৃষি সব ক্ষেত্রেই এই ডিজেলের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। পাশাপাশি, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর মোংলার পুনর্নির্মাণ ও পুনর্জীবন সংক্রান্ত এক বোঝাপড়া চুক্তিতে সাক্ষর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খুলনা-মোংলা রেল লাইনের জন্য রূপসা নদীর ব্রিজ তৈরি-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আরও বেশ কয়েকটি চুক্তি সম্পাদিত হতে পারে। তারমধ্যে রয়েছে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যৌথভাবে আরও রেল প্রকল্প, বাংলাদেশ টিভি ও ভারতের প্রসার ভারতীর মধ্যে যৌথভাবে কাজ করার কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হতে পারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীকে সামনে রেখে। এছাড়াও, বাংলাদেশে বহু আলোচিত এবং বিতর্কিত রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নিয়েও কথা হতে পারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর।
READ MORE
নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফরে এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রের তরফে আমন্ত্রণ জানানো হয় নি। তিস্তা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনড় মনোভাবের কারণেই কোনও রকম জটিলতা চাইছে না কেন্দ্র, এমনটাই খবর দিল্লির। তবে শেষ মুহূর্তে শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাকেও আমন্ত্রন জানানো হবে।
দিল্লির খবর, বাংলাদেশের জিও স্ট্র্যাটেজিক পজিশনও বিচার করে সীমান্ত লাগোয়া তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে আলাদা বৈঠকের কথা কেন্দ্রীয় সরকারের চিন্তাভাবনা রয়েছে।