গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- ২৫ মার্চ ২০২৩, শনিবার ভোট গ্রহণ করা হবে।
- পুনরায় নির্বাচিত হলে নিউ সাউথ ওয়েলস লিবারাল সরকার বাংলা নববর্ষ এবং বৈশাখী মেলার মতো সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে।
- নির্বাচিত হলে লেবার সরকার নিউ সাউথ ওয়েলসে বাংলাদেশী সাংস্কৃতিক উৎসব ও কর্মকাণ্ডে আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের রাজ্য নির্বাচনে আগামী ২৫ মার্চ থেকে ভোট গ্রহণ করা হবে। আর, ১৮ মার্চ থেকে আগাম ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে।
এই রাজ্যটিতে ক্ষমতাসীন লিবারাল সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, তারা যদি পুনরায় নির্বাচিত হয় তাহলে এই রাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশী জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তারা ১০০,০০০ (এক লাখ) ডলার সহায়তা করবে। চার বছর ধরে এই অর্থ ব্যয় করা হবে বাংলা নববর্ষ এবং বৈশাখী মেলার মতো সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে।
গত ১০ মার্চ ২০২৩ লিবারাল পার্টির নিউ সাউথ ওয়েলস ডিভিশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে নির্বাচনী আসন কোগারাতে লিবারাল পার্টির প্রার্থী ক্রেইগ চাং বলেন,
“আমি অত্যন্ত খুশি যে, পেরোটে লিবারাল সরকার বাংলাদেশী কমিউনিটিকে সহায়তা করার ও তাদের ক্ষমতায়নের সদিচ্ছা প্রকাশ করেছে।”
নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার ডমিনিক পেরোটে বলেন, এই রাজ্যটিতে শক্তিশালী বাংলাদেশী কমিউনিটি রয়েছে। সেজন্য লিবারাল সরকার তাদের গুরুত্বপূর্ণ উৎসবগুলোর অংশীদার হতে চায়।
তিনি বলেন, “বৈশাখী মেলা, যা কিনা সিডনি অলিম্পিক পার্কে উদযাপিত হয়, বাংলাদেশের বাইরে এ জাতীয় অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এটি অন্যতম বড় একটি আয়োজন।”
“এই রাজ্যের এবং অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার লোক এতে যোগ দেয়।” এটিকে আরও বড় এবং বর্ণাঢ্য করার ক্ষেত্রে তারা সহায়তা করতে চান, বলেন মিস্টার পেরোটে।
মিনিস্টার ফর মাল্টিকালচারিজম মার্ক কুরি এমপি বলেন, বাংলাদেশের বাইরে সবচে’ বড় বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয় নিউ সাউথ ওয়েলসে। এতে বোঝা যায় যে, এই রাজ্যটিতে বহুসাংস্কৃতিক সমাজ রয়েছে। এর জন্য নিউ সাউথ ওয়েলস লিবারালস-এর অবদান রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে, গত ১৭ মার্চ ২০২৩ নিউ সাউথ ওয়েলস লেবার পার্টির পক্ষ থেকে একটি মিডিয়া রিলিজে বলা হয়, তারা নির্বাচিত হলে বাংলাদেশী সাংস্কৃতিক উৎসব ও কর্মকাণ্ডে ১১০,০০০ ডলার সহায়তা প্রদান করবে।
এই বিবৃতিটিতে আরও বলা হয়, সিডনি অলিম্পিক পার্কে বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়ার আয়োজিত বার্ষিক বৈশাখী মেলায় তারা অর্থায়ন করবে। এই মেলাটি অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশীদের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান এবং বাংলাদেশের বাইরে এ জাতীয় অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম বৃহৎ একটি অনুষ্ঠান বলে উল্লেখ করে আরও বলা হয়, আগামী চার বছর ধরে প্রতিবছর ২৭,৫০০ ডলার করে অর্থায়ন করা হবে।
শ্যাডো মিনিস্টার ফর মাল্টিকালচারিজম স্টিভ ক্যাম্পার এ সম্পর্কে বলেন,
“এই অর্থায়ন থেকে বোঝা যায়, নিউ সাউথ ওয়েলস লেবার বাংলাদেশী কমিউনিটি এবং তাদের জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয় উৎসবগুলোকে সহায়তা করে।”
“মাল্টিকালচারিজম আমাদের রাজ্যটিকে আরও শক্তিশালী করে এবং আরও বেশি বৈচিত্রময় করে। আর, যে প্রকল্পগুলোতে আমরা অর্থায়ন করতে যাচ্ছি তার ফলে নিউ সাউথ ওয়েলস জুড়ে জনগণের মাঝে প্রকৃত পরিবর্তন সূচিত হবে।”
“ওয়েস্টার্ন সিডনিতে ক্রমবর্ধমান বৈচিত্রময় কমিউনিটিগুলোকে সহায়তা করার জন্য নিউ সাউথ ওয়েলস লেবারের ফ্রেশ স্টার্ট প্লানের অংশ হলো এই প্রতিশ্রুতি।”
বৈশাখী মেলা
সিডনিতে গত প্রায় ৩০ বছর নিয়মিত বৈশাখী মেলার আয়োজন করে আসছে বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়া। কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর পূর্বে স্বাভাবিক সময়ে সিডনি অলিম্পিক পার্কে অনুষ্ঠিত এই মেলায় ২০ হাজারের অধিক জনসমাগম হতো, বলেন এই মেলার অন্যতম আয়োজক, বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়ার প্রেসিডেন্ট শেখ শামীমুল হক।
লিবারাল সরকারের দেওয়া অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে তিনি বলেন,
“এটি নতুন নয়। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে এ ধরনের অর্থায়ন এর আগে ভারতীয় কমিউনিটি-সহ বহু এথনিক কমিউনিটিকে প্রদান করা হয়েছে। ২০১৯ সালেও বঙ্গবন্ধু কাউন্সিলের বৈশাখী মেলার জন্য অর্থায়ন করেছিল লিবারাল সরকার। বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য এটাই ছিল এ রকম ক্ষেত্রে প্রথম উদ্যোগ।”
লেবার পার্টির দেওয়া অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে তিনি বলেন,
“এটি তাদের একটি প্রশংসনীয় ঘোষণা। শ্যাডো মিনিস্টার স্টিভ ক্যাম্পার বঙ্গবন্ধু কাউন্সিলের এই বৈশাখী মেলা সম্পর্কে যে দারুণভাবে ওয়াকিবহাল সেটা তার ঘোষণার মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করলেন। বিরোধী দলীয় নেতা ক্রিস মিনসের অফিসকেও আমি ধন্যবাদ জানাই এবং ক্রিস মিনস এর আগেও কোভিডকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়ার সাথে জুম মিটিংয়ে বসেছিলেন বাংলাদেশ কমিউনিটির সমস্যাগুলো জানতে।”
২০২১ সালের সেনসাস বা জনশুমারি রিপোর্ট অনুসারে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাভাষী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৭০,১১৬ জন। বাংলাভাষী অধ্যুষিত সাবার্বগুলোর মধ্যে এই জনগোষ্ঠীর সংখ্যার দিক দিয়ে শীর্ষস্থানীয় প্রথম পাঁচটি সাবার্বই নিউ সাউথ ওয়েলসের। এগুলো হলো লাকেম্বা, মিন্টো, ওয়ালি পার্ক, ম্যাকোয়েরি ফিল্ডস এবং ব্যাংকসটাউন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত।