সৌদি আরব গতকাল সোমবার ঘোষণা করেছে তারা এ বছরের হজ্জ্ব আয়োজন করবে সীমিত পরিসরে। তবে সেখানে হজ্জ্ব পালনের উদ্দেশ্যে যারা ইতিমধ্যেই অবস্থান করছেন তাদেরকে অনুমতি দেয়া হচ্ছে। সৌদি কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাস মহামারী নিয়ন্ত্রণে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
হজ্জ্ব পালন ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি, সামর্থ্যবান যে কোন সুস্থ মুসলিম ব্যক্তির জীবনে একবার হজ্জ্ব পালন আবশ্যক। তবে যেহেতু এই সময়টিতে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম হবে তাই এতে করোনা সংক্রমণের বিরাট ঝুঁকি রয়ে যাচ্ছে।তবে জুলাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য হজ্জ্ব আয়োজনের ব্যবস্থা সীমিত করার সিদ্ধান্তের সাথে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সংকটের বিষয়টিও যুক্ত। এছাড়া অনেক মুসলিম অধ্যুষিত দেশ এবারের হজ্জ্ব পালন থেকে বিরত থাকছে।
Muslim pilgrims pray during the annual hajj pilgrimage, near the holy city of Mecca August 2019. Source: AP
হজ্জ্ব মিনিস্ট্রিকে উদ্ধৃত করে সৌদি প্রেস এজেন্সী জানিয়েছে " বিভিন্ন দেশের মুসল্লিদের নিয়ে এ বছরের হজ্জ্ব খুবই সীমিত পরিসরে আয়োজিত হবে। "
"জনস্বাস্থ্য প্রেক্ষিত বিবেচনায় এবং জীবন বাঁচাতে ইসলামের শিক্ষার আলোকে হজ্জ্ব পালন যাতে নিরাপদ হয় এজন্যই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। "
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সৌদি সরকার ব্যাপক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, দেশটিতে অদ্যাবধি ১৬১,০০০ রোগী শনাক্ত এবং ১,৩০০ মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের পক্ষে এটাও একটি বড়ো কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে এই সিদ্ধান্তের জন্য দেশটিকে মুসলিম চরমপন্থীদের বিরাগভাজন হওয়ার ঝুঁকি নিতে হচ্ছে, যারা স্বাস্থ্য সমস্যার চেয়েও ধর্মকে অধিক গুরুত্ব দেয়।
হজ্জ্ব আয়োজনের কাটছাঁটের ফলে দেশটির রাজস্ব আয়ে প্রভাব পড়বে। করোনার ক্ষতির পাশাপাশি বিশ্ব বাজারে তেলের দামও কমে যাওয়ায় দেশটি ইতিমধ্যেই সংকটে পড়েছে।মার্চ থেকে বছর জুড়ে চলতে থাকা ওমরাহও বাতিল করা হয়েছে। ওমরাহ এবং হজ্জ্ব মিলিয়ে সরকারি হিসেবে এই আয়োজন সৌদি অর্থনীতিতে বছরে ১২ বিলিয়ন ডলার যোগ করে।
Saudi Ministry of Hajj and Umrah Source: Foriegn Ministry of KSA/Twitter
তবে গতকাল সোমবারের হজ্জ্ব বাতিলের ঘোষণা অনেক মুসলিম হজ্জ্ব প্রত্যাশীদের হতাশ করেছে, যাদের অনেকেই সারাজীবনের সঞ্চয় ব্যয় করে থাকেন এই আয়োজনে, হজ্জ্বযাত্রায় তাদের অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময় ধরে।
এই মাসের শুরুতে বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো মুসলিম অধ্যুষিত দেশ ইন্দোনেশিয়া হজ্জ্ব পালন না করার সিদ্ধান্ত নেয় যা রিয়াদের ওপর হজ্জ্ব বিষয়ে পরিষ্কার অবস্থান নিতে একটি চাপ সৃষ্টি করে। এরপরে মালয়েশিয়া, সেনেগাল এবং সিঙ্গাপুরও একই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।
আরো পড়ুন: