গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি:
- অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনগুলোতে ভোট দিতে হলে আপনাকে অবশ্যই ১৮ বছরোর্ধ্ব অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক হতে হবে এবং ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত হতে হবে।
- অনলাইন মাধ্যমে বা কাগজে ফর্ম পূরণ করে নিবন্ধিত হওয়া যায়।
- অস্ট্রেলিয়ান ইলেক্টোরাল কমিশনের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ভাষা সহ সচিত্র ও সহজ বর্ণনায় নির্বাচন বিষয়ক সব তথ্য পাওয়া যায়।
প্রতি তিন বছর অন্তর অস্ট্রেলিয়ায় ফেডারেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোট দেওয়ার মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ানরা তাদের কাঙ্ক্ষিত সরকার নির্বাচন করে নিজের রাজনৈতিক আকাংক্ষার বাস্তবায়ন করে।
আমি কি নিবন্ধনের যোগ্য?
বেশিরভাগ অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক, তবে আপনি নির্বাচনে ভোট দিতে যোগ্য বা উপযুক্ত কিনা তা আগে জানা জরুরী। অস্ট্রেলিয়ান ইলেক্টরলা কমিশন, বা এ ই সি এর মুখপাত্র ইভান একিন- স্মিথ বলেন,
“১৮ বছরোর্ধ্ব যে কোন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ভোট দিতে পারেন তবে সেজন্যে ভোটার হিসাবে আপনাকে নিবন্ধিত হতে হবে। ভোটের দিন-ক্ষণ ঘোষণার পর নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে সব ভোটারদের বর্তমান ঠিকানায় নিবন্ধিত হতে হয়।”
অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচন কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী চলতি নির্বাচনের জন্য প্রায় চার লক্ষ অস্ট্রেলীয় নাগরিক ভোটার হিসাবে নিবন্ধন করেছেন।
Voting Centre Source: AEC
কখন নিবন্ধন করবেন?
ফেডারেশন অফ এথনিক কমিউনিটিস' কাউন্সিলস অফ অস্ট্রেলিয়া (FECCA)'র প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আল খাফাজি বলেন,
"আমরা অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব অর্জনকারী সবাইকেই ভোটদানে উৎসাহিত করি যাতে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যৎ নির্মানে শরীক হতে পারেন।"
সাধারণত নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা হওয়ার পর ইলেক্টরাল রোল পেতে বা নিবন্ধিত হতে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। অস্ট্রেলিয়া নির্বাচন কাউন্সিলের মুখপাত্র ইভান একিন স্মিথ জানান,
“ নিবন্ধনের জন্য আপনাকে নির্বাচন ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করার দরকার নেই। অনলাইনে ফরম পূরণ করে আপনি এখনই নিবন্ধিত হতে পারেন, এজন্যে আপনাকে নির্বাচন কমিশনের যেতে হবে; আর এ কাজটা আপনি মোবাইল ফোনেও করতে পারেন।"
কীভাবে নিবন্ধন করবেন?
নিবন্ধন করা খুব সোজা! আপনার মোবাইল বা যেকোন ডিভাইস থেকে গেলেই আপনি নিবন্ধনের অনলাইন আবেদন ফর্ম পেয়ে যাবেন।
অস্ট্রেলিয়ান পরিচয় পত্রের তথ্য দিয়ে আপনাকে উক্ত নিবন্ধন ফর্ম পূরণ করতে হবে যেমন অস্ট্রেলিয়ান পাসপোর্ট, ড্রাইভার্স লাইসেন্স বা নাগরিগত্বের সনদ, তাই অনলাইন আবেদনের আগে এসব তথ্য হাতের কাছে রাখুন। অনলাইন নিবন্ধনের সময় এসব নথিপত্র সংযুক্ত করার প্রয়োজন নেই, কিন্তু তার তথ্যগুলো উল্লেখ করা আবশ্যক।
Source: AEC
আমাকে কি সব ধরনের নির্বাচনের জন্য আলাদা করে নিবন্ধন করতে হবে?
ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত হলে আপনি সব ধরনের নির্বাচন যেমন ফেডারেল নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আর রাজ্য নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।
আপনার যাবতীয় তথ্য হালনাগাদ করা জরুরী বলে মত প্রকাশ করেন ফেডারেশন অফ এথনিক কাউন্সিলস অফ অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আল কাফাজি।
আপনার পরিচয়পত্র হারিয়ে ফেললে সময় থাকতে তার জন্য আবেদন করুন কেননা পরিচয়পত্র ইস্যু করতে সময় লাগে। কোন কোন প্রশাসনিক এলাকায় পরিচয়পত্র পেতে চার সপ্তাহ পর্যন্ত লাগতে পারে।
READ MORE
নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
বাসার ঠিকানা বা আপনার অবস্থা বা অবস্থানগত যে কোন পরিবর্তন আপনি নির্বাচন কমিশনকে অবগত করতে পারেন, তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে।
আপনি কি নিজের ইলেক্টরাল রোল নিয়ে অনিশ্চিত অর্থাৎ নির্বাচনের জন্য নিবন্ধিত কিনা বা অস্ট্রেলিয়ায় ভোটদান বিষয়ে বুঝতে পারছেন না? তাহলে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন অথবা ডায়াল করুন ১৩ ২৩ ২৬ নাম্বারে।
নিবন্ধনে সহায়তা কোথায় পাবেন?
যারা ইন্টারনেট ব্যবহারে অভ্যস্ত নন বা ইন্টারনেট পরিষেবার বাইরে আছেন, তারা এইসির অফিস প্রেরিত চিঠি আর কাগজের নিবন্ধন ফর্ম পেতে পারেন; অথবা নির্বাচন কমিশনের ১৩ ২৩ ২৬ নাম্বারে কল করলেই তারা আপনাকে চিঠি সহ কাগজে ছাপানো নিবন্ধন ফর্ম পাঠাবে।
অভিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা বিবেচনা করে বিশেষ পরিষেবা যেমন অনুবাদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ বিষয়ে এফইসিসি-এ’র প্রধান নির্বাহী মিস্টার আল-খাফাজি বলেন,
এইসির ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত হবার সব ধরনের তথ্য যেমন নিবন্ধনের শর্তাবলী, গাইডলাইন ইত্যাদি আপনার ভাষায় অনুবাদ করা আছে। আপনি চাইলে টেলিফোনে অনুবাদক সুবিধাও পেতে পারেন।এছাড়াও আছে ইজি রিড গাইড, যা সহজ ইংরেজীতে সচিত্র বর্ণনার মাধ্যমে নির্বাচন এবং নিবন্ধনের তথ্যাবলী তুলে ধরে।
Source: AEC
নির্বাচনী নিবন্ধনে সব ধরনের সাহায্য পেতে আপনার নিকটস্থ মাইগ্রেন্ট রিসোর্স সেন্টারে যোগাযোগ করুন।
তাসমানিয়াতে অবস্থিত মাইগ্রেন্ট রিসোর্স সেন্টার এর সমাজকর্মী বা সেটলমেন্ট সাপোর্ট ওয়ার্কার আইভি ঝুও নতুন নাগরিকদের নির্বাচনী নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করে থাকেন।
মিস ঝুও জানান, তাদের অধিকাংশ সেবা গ্রহণকারী অনলাইনে যোগাযোগ করে থাকেন এবং ইংরেজীর দক্ষতা সীমিত হলেও তারা সাধারণত অনলাইনে সাহায্য পেতে পছন্দ করেন। তাদের সব ধরনের সেবার তথ্য দেওয়া আছে।
যারা ভোট নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হন বা ভোট না দেন তাদের ক্ষেত্রে কী হয়?
যারা ভোট দিতে ব্যর্থ হন, তাদের জন্য জরিমানা ধার্য্য করা আছে। ভোট দেওয়া নাগরিক দায়িত্ব এবং ভোট দিতে সব নাগরিক আইনগতভাবে বাধ্য। তবে মিস্টার ইভান একিন স্মিথ মনে করেন, ভোট দেওয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের রাজনৈতিক ভাবনা বা অভিমতের প্রতিফলন ঘটাই। ফলে এই প্রক্রিয়ায় ভোট দিতে ব্যর্থ নাগরিকেরা প্রকারান্তরে তাদের রাজনৈতিক অভিমত প্রকাশেও ব্যর্থ হন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: