দীর্ঘ দুই শতাব্দি ধরে মানুষের ঘরে ঘরে চিঠি বিতরণ করে আসছে অস্ট্রেলিয়া পোষ্ট। অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রীয় ডাক পরিষেবা প্রদানকারী ঐতিহ্যবাহী এই সংস্থাটি আগের মত আর নিয়মিত চিঠি বিলি করবে না। পরিবর্তিত বাজার ব্যবস্থায় কী কী পরিবর্তন আসছে অস্ট্রেলিয়া পোষ্টের পরিষেবায় জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগ মন্ত্রী মিশেল রোল্যান্ড। তিনি বলেন,
“পরিবর্তিত বাজারা কাঠামোয় অস্ট্রেলিয়া পোষ্ট প্রতিনিয়ত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে যেমন গিগ ইকোনমি, আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর উত্থান ইত্যাদি।”
Gig-ing along.
নিয়মিত এই পরিষেবার বদলে অষ্ট্রেলিয়া পোষ্ট অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রেরিত চিঠি বা দ্রব্য যেমন এক্সপ্রেস পোষ্ট, প্রায়োরিটি লেটার এবং পার্সেল পরিষেবায় অধিক গুরুত্ব দিতে চায়। এদিকে ই-কমার্স ভিত্তিক ডাক পরিষেবার চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। অস্ট্রেলিয়া পোষ্টের ডেলিভারি পারসন জুলি কোয়িন জানান, বর্তমানে তাদের পার্সেল সেবার চাহিদা বহুগুন বৃদ্ধি পেয়েছে।
Online shopping Source: AAP
অস্ট্রেলিয়া পোষ্ট সরকারী মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান যা নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হয়ে থাকে। সংস্থাটির চার হাজারেরও অধিক পোষ্ট অফিস দেশ জুড়ে ডাক সেবা দিয়ে থাকে। চিঠি বিতরণ পরিষেবায় পরিবর্তন আসলেও তার অন্যান্য পরিষেবা আগের মতই থাকবে বলে জানান মিস রোল্যান্ড।
গত বছর চিঠিপত্র বিতরণ বাবদ সংস্থাটির ৩৮৪ মিলিয়ন ডলার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। গত ত্রিশ বছরে দ্বিতীয়বারের মত এই খাতে লাভের বদলে লোকসান হতে দেখা গেছে। অন্যদিকে পার্সেল পরিষেবায় সংস্থাটির সাত বিলিয়ন ডলারেরও অধিক লাভ হয়েছে ।
ভোক্তা আচরণে পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে ডাক বিতরণ কর্মী ক্রিস রাসেল বলেন, মানুষ এখন চিঠি বা বিলের কাগজের জন্য নয়, পার্সেলের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে সারি ধরে অপেক্ষা করে থাকে।
Australia Post Indigenous Manager Chris Heelan with the new packaging. Credit: Australia Post
এদিকে ডাক টিকেটের দাম বাড়ানোর জন্য অস্ট্রেলিয়া কনজিউমার এন্ড কম্পিটিশন কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া পোষ্ট। চিঠি বিতরণ পরিষেবায় হ্রাস হবার প্রেক্ষিতে ডাকবিভাগের কর্মীদের ভাবনা জানিয়েছেন সংস্থাটির শ্রমিক ইউনিয়নের সেক্রেটারি অফ কমিউনিকেশন শেইন মার্ফি। তিনি বলেন, তারা গত বারো মাস ধরে কর্তৃপক্ষের সাথে দেন দরবার করে আসছেন।
অস্ট্রেলিয়া পোষ্ট চিঠি বিতরণের পরিবর্তনগুলি ছয়টি স্থানে কার্যকর করেছে। ক্রিস রাসেলের এলাকা তার মধ্যে অন্যতম। তাদের মতামতের ভিত্তিতে অস্ট্রেলিয়া পোষ্ট ভবিষ্যৎ নীতিমালা ও কৌশল নির্ধারণ করবে।