গুরুত্বপূর্ণ দিক:
- অস্ট্রেলিয়ানদের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদের জন্যে কর দিতে হয় না।
- উত্তরাধিকার বিতরণের জন্যে একজন নির্বাহক নিয়োগ করা হয়।
- উইল বা ইচ্ছাপত্র থাকলে এই বিতরণ সহজ হয়। নাহলে আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হতে পারে।
কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার সম্পদের মালিকানা তার আত্মীয় বা বন্ধুদের কাছে চলে যায়। এটিকে বলা হয় ‘ডিসিজড্ এস্টেট’, এবং এর গ্রহণকারীরা হয়ে ওঠেন এই এস্টেটের সুবিধাভোগী।
মেলিসা রেনল্ডস স্টেট ট্রাস্টি ভিক্টোরিয়ার ট্রাস্টি সার্ভিসের নির্বাহী মহাব্যবস্থাপক। মানুষ উত্তরাধিকার সূত্রে কী ধরণের সম্পদ পেতে পারেন সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘সম্পদ অনেক ধরনের হতে পারে। এটি বাণিজ্যিক কিছু হতে পারে, বা এর সাথে আবেগ জড়িত থাকতে পারে। হয়ত আমি আমার গাড়িটি কাউকে উপহার দিয়ে গেলাম, বা আমার প্রতিবেশীকে দশ হাজার ডলার দিয়ে গেলাম। আবার সাধারণভাবে আমার সম্পূর্ণ এস্টেট আমি সন্তানদের দিয়ে গেলাম।‘
উত্তরাধিকার বন্টন আরও অনেক সহজ হয় যদি কেউ তাদের মৃত্যুর পরে কীভাবে তাদের সম্পত্তি বিতরণ করা হবে সে বিষয়ে একটি উইল প্রস্তুত করে দিয়ে যান।
উইলে, একটি আইনী ব্যক্তি বা সংস্থাকেএস্টেটের ট্রাস্টি হিসাবে কাজ করার জন্য নিযুক্ত করা হয়, যারা একজিকিউটর বা নির্বাহক হিসাবে পরিচিত। নির্বাহকের দায়িত্ব হল মৃত ব্যক্তির ইচ্ছাগুলি সম্পাদন করা এবং সমস্ত বাধ্যবাধকতা পূরণ নিশ্চিত করা।
একজন এক্সিকিউটরও এস্টেটের সুবিধাভোগী হতে পারেন।
ফ্লোরান্টে অ্যাবাড যিনি ফিলিপাইন এবং অস্ট্রেলিয়া উভয় দেশেই আইন অনুশীলন করেছেন, তিনি বলেন যে-সব ক্ষেত্রে এক্সিকিউটর মনোনীত করা হয় না, সে-সব ক্ষেত্রে আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হতে পারে।
কেউ যদি আপনাকে নির্বাহক হিসেবে মনোনীত করে, তবে আপনি যদি মনে করেন যে দায়িত্বগুলি পরিচালনা করা আপনার জন্যে সম্ভব হবে না, সেক্ষেত্রে আপনার পক্ষ হয়ে কাজ করার জন্য আপনি স্টেট ট্রাস্টিদের অনুমোদন দিতে পারেন। এই সরকারী সংস্থাটি এ ধরণের বিষয়গুলিতে জনসাধারণকে সহায়তা প্রদান করে।
একজন নির্বাহককে অবশ্যই সুবিধাভোগীদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং 'প্রোবেট' এর জন্য আবেদন করতে হবে।
Melbourne Supreme Court issued widespread Australian gagging order over political bribery allegations revealed by 'Wikileaks' today 30-July-2014 Melbourne Australia Credit: Nigel Killeen/Getty Images
তবে, যদি কেউ উইল তৈরি করা ছাড়াই মৃত্যুবরণ করে, সেক্ষেত্রে উত্তরাধিকারী কে হবে তা নির্ধারণের দায়িত্ব এসে পড়ে আইনের ওপর।
উইল না থাকা সম্পদ বিতরণের জন্য ব্যবহৃত সূত্রটিকে সাকসেশন অ্যাক্ট বা উত্তরাধিকার আইন বলা হয়।
এ ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সম্পদ সাধারণত বেঁচে থাকা পার্টনার বা অংশীদারের কাছে যায়, বাকী যে কোনও সম্পত্তি সন্তানের কাছে যায়।
এনএসডাব্লু উত্তরাধিকার আইনে মৃত ব্যক্তির আত্মীয়দেরও একটি নির্দিষ্ট ক্রমে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, মি. অ্যাবাড বলেন।
Cropped shot of a senior couple meeting with a consultant to discuss paperwork at home Credit: shapecharge/Getty Images
অস্ট্রেলিয়ান ট্যাক্সেশন অফিস উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তিতে কর বিধি প্রয়োগ করে থাকে, যদি সুবিধাভোগীরা তা বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়।
সার্টিফাইড পাবলিক অ্যাকাউন্ট্যান্ট আকরাম এল-ফাখরি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘যদি একমাত্র বাড়িটিতে কেউ নিজেরি বসবাস করতেন, সেক্ষেত্রে কোনো ট্যাক্স নেই। কিন্তু যদি দুটি বাড়ি থাকে এবং একটি ভাড়া দেয়া হয়, সে ক্ষেত্রে বিনিয়োগকৃত বাড়ির জন্যে কর দিতে হতে পারে।‘
সিজিটি বা ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স প্রযোজ্য যখন কেউ ১৯৮৫ সালের পরে কেনা কোনও বিনিয়োগ সম্পত্তি বিক্রি করতে চায়।
মি. এল-ফাখরি বলেন যে সাধারণ পরামর্শ হল বিক্রি করার পরিবর্তে সুবিধাভোগীদের কাছে সম্পত্তি বিতরণ করে দেয়া - এমনকি যদি বিক্রির অর্থ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার পরিকল্পনাও থাকে - কারণ আবাসিক সম্পত্তির জন্যে ট্যাক্স-ফ্রি বা কর-মুক্ত সময়ের বিধান রয়েছে।
ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ওপরেও উত্তরাধিকার আইন প্রযোজ্য। তাই ট্যাক্স রিটার্নের সময় ব্যাংক থেকে পাওয়া সুদ ঘোষণা করা গুরুত্বপূর্ণ।
যদি এস্টেটে শেয়ার অন্তর্ভুক্ত থাকে এবং সেগুলি বিক্রি করে নগদ টাকায় রূপান্তরিত করা হয় এবং সুবিধাভোগীদের মধ্যে ভাগ করা হয়, সেক্ষেত্রেও ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স প্রদান করতে হবে।
মি. এল-ফাখরি বলেছেন যে আপনি যদি বিদেশে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন, তাহলে সেটির ক্ষেত্রে ট্যাক্স-ফ্রি নিয়ম প্রযোজ্য।
কোনও সুবিধাভোগী অনাবাসী হলে বিশেষ সিজিটি বিধি প্রযোজ্য, তাই এ ক্ষেত্রে পেশাদার আইন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভাল।
codicil to a last will and testament and irrevocable trust being signed by a 50 year old woman. Credit: JodiJacobson/Getty Images
তখন উত্তরাধিকার আইনের অধীনে এটিকে চ্যালেঞ্জ করার অধিকার আপনার রয়েছে। একে বলা হয় পাবলিক ফ্যামিলি প্রভিশন ক্লেইম।
ফ্লোরান্টে অ্যাবাড বলেছেন যে সুপ্রিম কোর্ট চাইলে এমনকি উইলে পরিবর্তনও আনতে পারে।
উত্তরাধিকার বিতরণ প্রক্রিয়া জটিল হওয়া সম্ভব, তবে এ বিষয়ে সহায়তা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
ল ইনস্টিটিউট অব ভিক্টোরিয়া ও ল সোসাইটি অব এনএসডব্লিউ-র মতো সংস্থাগুলি আপনার এলাকার সেসব সলিসিটরদের তালিকা সরবরাহ করতে পারে যারা আপনার ভাষায় কথা বলে বা ডিসজড্ এস্টেট বিষয়ে অনুশীলন করে থাকে।
মেলিসা রেনল্ডস বলেছেন, এ ছাড়াও প্রতিটি স্টেট এবং টেরিটরিতে স্টেট ট্রাস্টিও রয়েছে।
পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা অডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত।