উইল বা ইচ্ছাপত্র কেন জরুরি

অনেক ধরনের ভুল ধারণা ও অপবিশ্বাসের কারণে মানুষ উইল করেননা।

অনেক ধরনের ভুল ধারণা ও অপবিশ্বাসের কারণে মানুষ উইল করেননা। Source: Getty Images

Get the SBS Audio app

Other ways to listen


Published 29 May 2021 5:11pm
By Zoe Thomaidou
Presented by Pychimong Marma
Source: SBS

Share this with family and friends


উইল বা ইচ্ছাপত্র বা অছিয়তনামা তৈরিতে বেশীরভাগ অস্ট্রেলিয়ানের আগ্রহ নেই বলে এক গবেষণায় দেখা গেছে। যদিও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বয়স, আর্থসামাজিক অবস্থান এবং সাংস্কৃতিক বা জাতিগত অবস্থান নির্বিশেষে অস্ট্রেলিয়ার সবাইকে উইল করায় গুরুত্বারোপ করে আসছেন। সেটলমেন্ট গাইডের এই পর্বে আমরা উইল করার গুরুত্ব নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত জানবো।


গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো

  • অনেক ধরনের ভুল ধারণা ও অপবিশ্বাসের কারণে মানুষ উইল করেননা।
  • যদি ইচ্ছাপত্র না থাকে তখন উত্তরাধিকারীদের মধ্যে রাজ্যের আইনের মাধ্যমে সম্পত্তি বন্টন ও উত্তরাধিকারীত্ব নির্ধারিত হয়।
  • অভিবাসী, যাদের এদেশে আত্মীয় স্বজন নেই অন্যদিকে ১৮ বছরের নিচে সন্তানাদি আছে তাদের জন্য উইল রাখা অতি জরুরি।

 

২০১৫ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী কেবলমাত্র বিত্তশালী বায়োজ্যষ্ঠ অস্ট্রেলিয়ানরাই উইল করে থাকেন।

ডিকিন ইউনিভার্সিটির প্রোফেসর অফ প্রাকটিস, এডাম স্টিন তার দু বছর পর এই বিষয়ে বিস্তৃত এক জরীপ চালান। জরীপে দেখা যায় যে তার অর্ধেক সংখ্যক অংশগ্রহণকারীই কোনো উইল করেননি।
অনেক ধরনের ভুল ধারণা ও অপবিশ্বাসের কারণে মানুষ উইল করেননা।
Source: Getty Images
অনেক ধরনের ভুল ধারণা ও অপবিশ্বাসের কারণে মানুষ উইল করেননা বলে প্রোফেসর স্টিন জানান।

উইল বা ইচ্ছাপত্র না রেখে কেউ মারা গেলে তখন তাকে ইন্টেসটেসি বলা হয়। ইন্টেসটেসির ফলে নানান জটিলতার সৃষ্টি হয়।

এরকমক পরিস্থিতিতে স্টেট বা টেরিটরির আইন অনুযায়ী সম্পত্তির বণ্টন হয়ে থাকে।
এই আইনী জটিলতা এড়াতে আর পরিবারকে অযথা হয়রানী থেকে বাঁচাতে যথাসময়ে উইল করা উচিৎ বলে পরামর্শ দেন আইনজীবী ডীন ক্যালিমনিওস।

যদি ইচ্ছাপত্র না থাকে তখন উত্তরাধিকারীদের মধ্যে রাজ্যের আইনের মাধ্যমে সম্পত্তি বন্টন ও উত্তরাধিকারীত্ব নির্ধারিত হয়। যদিও সম্পত্তির বণ্টন বিধিবিধান মোতাবেক নিষ্পত্তি করা যায়, তবে এরুপ বিলিবন্টনে ওই ব্যক্তির ইচ্ছার প্রতিফলন নাও দেখা যেতে পারে।
যদি ইচ্ছাপত্র না থাকে তখন উত্তরাধিকারীদের মধ্যে রাজ্যের আইনের মাধ্যমে সম্পত্তি বন্টন ও উত্তরাধিকারীত্ব নির্ধারিত হয়।
যদি ইচ্ছাপত্র না থাকে তখন উত্তরাধিকারীদের মধ্যে রাজ্যের আইনের মাধ্যমে সম্পত্তি বন্টন ও উত্তরাধিকারীত্ব নির্ধারিত হয়। Source: Getty Images
আজকাল অনলাইনে নিজের মত করে উইল বানানোর উপায় আছে। অস্ট্রেলিয়ায় তার ব্যবহার বাড়ছে। তবে আইনী পরামর্শ নেওয়াকেই নিরাপদ বলে মনে করা হয়।

কেবলমাত্র আইনজীবীর কাছেই এ বিষয়ে সহায়তা পাওয়া যায় তা নয়। প্রত্যেক স্টেট ও টেরিটোরিতেই সরকারী স্টেট ট্রাস্টি অফিস আছে যেখানে আপনি আপনার ইচ্ছাপত্র লেখাতে পারবেন।

পাবলিক ট্রাস্টির মাধ্যমে উইল লেখাতে ফি দেয়া লাগে তবে তা আইন নিয়ন্ত্রিত মূল্যে বা নামমাত্র মূল্যেও করা যায়। পেনশনভোগী ও ষাটোর্ধ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই ফি মওকুফের ব্যবস্থা আছে।
যদি ইচ্ছাপত্র না থাকে তখন উত্তরাধিকারীদের মধ্যে রাজ্যের আইনের মাধ্যমে সম্পত্তি বন্টন ও উত্তরাধিকারীত্ব নির্ধারিত হয়।
যদি ইচ্ছাপত্র না থাকে তখন উত্তরাধিকারীদের মধ্যে রাজ্যের আইনের মাধ্যমে সম্পত্তি বন্টন ও উত্তরাধিকারীত্ব নির্ধারিত হয়। Source: Getty Images
মাইকেল স্পিজেল ট্রাস্টি সার্ভিস ডিভিশনের একজিকিউটিভ জেনারেল ম্যানেজার যা ভিক্টোরিয়া স্টেট ট্রাস্টির অন্তর্ভুক্ত ।

তাঁর মতে, শুধু সম্পত্তি বণ্টনের জন্য ইচ্ছাপত্রের দরকার আছে তা নয়, অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের দেখাশোনা করার অভিভাবক মনোনয়নের জন্যও উইলের দরকার আছে।
অভিবাসী, যাদের এদেশে আত্মীয় স্বজন নেই অন্যদিকে ১৮ বছরের নিচে সন্তানাদি আছে তাদের জন্য উইল রাখা অতি জরুরি বলে মনে করেন মিস্টার স্পিজেল।

ডীন ক্যালিমনিওস অনেক বছর ধরে তার মক্কেলদের জন্য উইল প্রস্তুত করে আসছেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি বেশ কিছু জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। এদেশে প্রচলিত উত্তরাধিকার এবং সম্পত্তি বণ্টনের ধারণার সাথে বিভিন্ন জাতিগত ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ধ্যান ধারণার সাঙ্ঘর্ষিক পরিস্থিতি প্রায়ই দেখা যায়।

 

আগে থেকে ইচ্ছাপত্র করা থাকলে এসব ক্ষেত্রে জটিলতা ও অনিশ্চয়তা এড়ানো যায় বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।

ভিক্টোরিয়ান স্টেট ট্রাস্টি হিসাবে নিজের কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে মাইকেল স্পিজেল জানান, জাতি-সংস্কৃতি নির্বিশেষে সবারই উইল ছাড়া পারিবারিক অন্তর্কলহ ও বিবাদ হতে পারে।

অনলাইনে কোন উইল প্রস্তুত উপকরণ বা ডিজিটাল টুলকিট ব্যবহার করতে পারলেও আপনি চাইলে আইনজীবী বা পাবলিক ট্রাস্টির সাহায্য নিতে পারবেন।

পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন। 

এসবিএস বাংলার রেডিও অনুষ্ঠান শুনুন প্রতি সোমবার এবং শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় এবং আরও খবরের জন্য আমাদের ফেইসবুক পেইজটি ভিজিট করুন।

আরও দেখুনঃ


 


Share