ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ অস্ট্রেলিয়া বা ইউনিএসএ (UniSA)-এর বিজ্ঞানীরা কুইন্সল্যান্ড ও ভিক্টোরিয়ার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মিলে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রবাল প্রাচীরের ক্ষতি পর্যবেক্ষণ ও কমানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই প্রযুক্তিগুলো হচ্ছে, স্যাটেলাইট, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও মানচিত্র প্রযুক্তি (GIS)।
ইউনিএসএ-এর এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটির প্রধান গবেষক ও ডাটা এনালিস্ট ড. আবদুল্লাহি চৌধুরী।
তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে প্রবালপ্রাচীরগুলো বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে দ্রুত ধ্বংসের মুখে। গত দুই বছরে ৭৫ শতাংশ প্রবালপ্রাচীর তীব্র তাপমাত্রার ফলে ব্লিচিং হয়েছে।
ড. আবদুল্লাহি চৌধুরী বলেন, কোরাল রীফ বা প্রবালপ্রাচীরকে প্রায়ই “সমুদ্রের রেইনফরেস্ট” বলা হয়। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠের মাত্র ১% জায়গা দখল করে, কিন্তু ২৫% সামুদ্রিক প্রাণীর আবাসস্থল গঠন করে।
আরও শুনুন

ট্রাফিক সমস্যা নিরসনে ইন্টেলিজেন্ট ট্রাফিক সিস্টেমের ধারণা নিয়ে কাজ করছেন বাংলাদেশি গবেষক আব্দুল্লাহি কাফী
SBS Bangla
08:34
"বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রীফ, যা প্রবালপ্রাচীরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য এবং দেশটির পরিবেশ ও পর্যটনের একটি বড় সম্পদ।
"এটি ২০১৬ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে তীব্রভাবে ব্লিচিং হয়ে যাওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে
"এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কাউন্ট-অব-থর্নস স্টারফিশ বা বিষাক্ত তারা মাছের অতিসংখ্যা এবং উপকূলীয় উন্নয়ন কাজের নেতিবাচক প্রভাব", বলেন তিনি।
এই সংকট রোধে, সাউথ অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি (UniSA) নেতৃত্বাধীন একটি প্রকল্পে কুইন্সল্যান্ড ও ভিক্টোরিয়ার গবেষকদের সহযোগিতায় রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তি, মেশিন লার্নিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (GIS) একত্রিত করে একটি বৈশ্বিক বাস্তব-সময় মনিটরিং সিস্টেম তৈরি করা হচ্ছে।
UniSA's data analyst and lead researcher Dr Abdullahi Chowdhury says a centralised model will give real-time coral-reef predictions. Credit: Dr Abdullahi Chowdhury
এ প্রসঙ্গে ড. আবদুল্লাহি চৌধুরী জানান, একটি একক কেন্দ্রীয় মডেলের মাধ্যমে রীফের ওপর সব ধরনের প্রভাব ও তথ্য বিশ্লেষণ করে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা রিয়েল-টাইমে পূর্বাভাস পেতে সক্ষম হবে।
“বর্তমানে বিভিন্ন পৃথক মডেল রয়েছে যা প্রবালপ্রাচীরের স্বাস্থ্য বিশ্লেষণ করে—যেমন ব্লিচিং-এর মাত্রা, রোগ সংক্রমণ, নতুন প্রবালের ঘনত্ব ও রীফগুলোতে মাছের প্রাচুর্য—কিন্তু এ সব তথ্য একসাথে পাওয়া যায় না,” বলেন তিনি।
“ফলে প্রবালপ্রাচীরের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সামগ্রিক চিত্র পাওয়া কঠিন এবং বৃহৎ পরিসরে তাৎক্ষণিক বিশ্লেষণ সম্ভব হয় না।”
আরও শুনুন

অস্ট্রেলিয়ার অনন্য জলবায়ু ও মূল্যবান জল-সম্পদের উৎস সম্পর্কে যা জানা প্রয়োজন
SBS Bangla
11:06
গবেষকরা বলছেন, তাদের এই সমন্বিত সিস্টেমটি এই বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করতে পারবে।
এই প্রকল্পের সাথে যুক্ত ছিলেন মুসফেরা জাহান, যিনি সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটির পিএইচডি প্রার্থী ও জিআইএস (GIS) ডেটা বিশেষজ্ঞ।
তিনি বলেন, “সব তথ্য এক জায়গায়, তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়ার ফলে আমরা পূর্বাভাস দিতে পারে এমন মডেল তৈরি করতে পারবো, যা সংরক্ষণ করতে সহায়তা করবে এবং আগেভাগেই ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
“জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শুধু অস্ট্রেলিয়াতেই নয়, সারা বিশ্বে প্রবালপ্রাচীরগুলো খুব দ্রুত মারা যাচ্ছে, তাই আমাদের অবিলম্বে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে।”
গবেষকরা প্রত্যশা করছেন এই প্রযুক্তি NOAA, MBARI, HURL এবং CSIRO-এর মতো সংস্থাগুলোর তথ্য একত্র করবে।
ড. আবদুল্লাহি চৌধুরী বলেন, “প্রবালপ্রাচীর সংরক্ষণের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে প্রযুক্তি ও যৌথ উদ্যোগের প্রচেষ্টার মধ্যে। এই গবেষণা দেখাচ্ছে কীভাবে আমরা প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রবালপ্রাচীরকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রক্ষা করতে পারি।”
ড. আবদুল্লাহি চৌধুরীর পুরো সাক্ষাৎকারটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।
আরও দেখুন

নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।
এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন
চ্যানেল।