মূল বিষয়:
- বৈষম্য-বিরোধী ফেডারেল আইনে কেবল ধর্মের ভিত্তিতে করা বৈষম্য বেআইনী নাও হতে পারে, তবে স্টেট ও টেরিটরির আইনে ধর্মীয় বৈষম্য বেআইনী বলে বিবেচিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
- আদালতের বাইরে ফেয়ার ওয়ার্ক কমিশন, অস্ট্রেলিয়ার মানবাধিকার কমিশন, এবং স্থানীয় অ্যান্টি-ডিসক্রিমিনেশন কর্তৃপক্ষের কাছে ধর্মীয় বৈষম্যের অভিযোগ উত্থাপন করা যায়।
- অনেক ক্ষেত্রে কাজের জায়গায় কোনো কর্মীর ধর্ম পালনের অধিকার সীমাবদ্ধ করার বৈধ ভিত্তি থাকতে পারে।
নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে অস্ট্রেলিয়া, যেটি একইসাথে মানুষের ধর্ম চর্চার স্বাধীনতার অধিকারকেও সুরক্ষা দিয়ে থাকে।
তবে এ দেশে ধর্মীয় বৈষম্য আইন প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া এখনও চলমান। আর তাই, সারা দেশে ধর্মীয় অধিকার অনুশীলনের বিধান নিয়ে কোনো অভিন্ন আইন নেই।
কর্মক্ষেত্রে ধর্মীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে কর্মীদের সুরক্ষা রয়েছে, যেটি নিশ্চিত করা হয় ফেয়ার ওয়ার্ক অ্যাক্ট ২০০৯ এর অধীনে। তবে সেগুলো ব্যবহারের সুযোগ সীমিত।
ক্যারিনা অকোটেল অস্ট্রেলিয়ান ক্যাপিটাল টেরিটরি ভিত্তিক ন্যাশনাল কম্যুনিটি লিগ্যাল সেন্টার রেসিয়াল অ্যান্ড রিলিজিয়াস ডিসক্রিমিনেশন লিগ্যাল সার্ভিস ইনকর্পোরেটেডের প্রধান আইনজীবী।
তিনি বলেন, ধর্মীয় বৈষম্যের শিকার কোনো কর্মীর জন্য প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে ফেয়ার ওয়ার্ক কমিশনের সাথে যোগাযোগ করে যাচাই করা যে তাদের অভিযোগটি এই আইনের অধীনে মামলার জন্য যোগ্য কিনা।
Complaints about workplace religious discrimination includes discrimination because of the lack of a religious belief. Credit: SDI Productions/Getty Images
এছাড়া সহকর্মীদের ভেতর যে ধর্মীয় বৈষম্য ঘটে, সেগুলি এই আইনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়।
ফেডারেল পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনেও অভিযোগ দায়ের করা যেতে পারে।
এসব ক্ষেত্রে কমিশনের মূল ভূমিকা হচ্ছে ঘটনার তদন্ত করে দুই পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা করা এবং সে-অনুযায়ী সুপারিশ করা। তবে কমিশনের সুপারিশ মানতে এখানে কেউ বাধ্য নয়।
তবে তারপরেও কমিশনে অভিযোগ দায়েরের গুরুত্ব রয়েছে, বলেন মিজ অকোটেল।
স্টেট ও টেরিটরি পর্যায়ে বৈষম্য বিরোধী আইন প্রচলিত রয়েছে, যেগুলির অধীনে ধর্মীয় বৈষম্য নিয়ে বিধানও রয়েছে। তবে ধর্মীয় অধিকার কতটা সুরক্ষিত তা নির্ভর করবে কোন স্টেট বা টেরিটরিতে আপনি বসবাস করছেন তার উপর।
যেসব স্টেটে ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য নিষিদ্ধ করে সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে, সেখানকার কর্মীরা তাদের স্থানীয় অ্যান্টি-ডিসক্রিমিনেশন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে পারবে।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ভিক্টোরিয়া স্টেটে এখানকার হিউম্যান রাইটস কমিশন এবং ভিক্টোরিয়ান ইকুয়াল অপরচুনিটিতে অভিযোগ দায়ের করা যায়।
কমিশনের আইন বিভাগের প্রধান এইমি কুপার বলেন, কর্মক্ষেত্রে ধর্মীয় বৈষম্য ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে। এবং কর্মীদের ধর্মীয় পোশাক, প্রার্থনার সুযোগ, এবং অন্যান্য ধর্মীয় আচার পালনের মতো বিষয়গুলিতে তাদের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
Some jurisdictions, including Queensland, Victoria and the ACT also have protections for freedom of religion in their respective Human Rights Acts. Credit: coldsnowstorm/Getty Images
কর্মক্ষেত্রে সংঘটিত কোনো বৈষম্যের ঘটনা সেই স্টেট বা টেরিটরির আইন অনুযায়ী যদি অবৈধ হয়ে থাকে, তাহলে অভিযোগকারী চাইলে আদালতে যেতে পারে, এবং সেখানে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সুষ্ঠ রায় পেতে পারে।
এর বিকল্প হিসেবে ভিক্টোরিয়ান ইকুয়াল অপরচুনিটি বা হিউম্যান রাইটস কমিশনের মত সংস্থাগুলি অভিযোগ শুনে নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিতে পারে, যেটি সাধারণত বিনামূল্যে হয়ে থাকে।
মিজ কুপার বলেন, এই মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া স্বেচ্ছাসেবার অংশ, এবং এর মাধ্যমে নিয়োগকর্তা ও কর্মীদের পারস্পরিক সম্মতির মাধ্যমে একটি সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হয়।
আইনে অবশ্য কিছু ব্যতিক্রমও থাকতে পারে। অর্থাৎ কিছু ক্ষেত্রে এরকম হতে পারে যে আইন অনুযায়ী কর্মীদের কিছু কিছু ধর্মীয় অধিকার নিয়োগকর্তারা মানতে বাধ্য নয়।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ভিক্টোরিয়া স্টেটে ধর্মীয় বিশ্বাস-ভিত্তিক সংস্থাগুলি কর্মী নিয়োগের সময় তাদের নিজস্ব কিছু বিধি-নিষেধ অনুসরণ করে, সেটি বেআইনী না-ও হতে পারে।
The kinds of mediation outcomes are “limitless, because it's really what the two parties are willing to agree to”. Credit: CihatDeniz/Getty Images
যে-কোনো কর্মক্ষেত্রে প্রয়োগ হতে পারে, আইনের অধীনে অনুমোদিত এরকম একটি বৈষম্যের উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, যদি ধর্ম পালন করতে গিয়ে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক ঝুঁকি তৈরি হয়, সে-ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা আইনের মধ্যে থেকে সেটি নিষেধ করতে পারেন। এটি ধর্মীয় কোনো পোশাক বা কোনো আচার-আচরণও হতে পারে।
জাস্টিন ক্যারল আরও বলেন, ধর্ম-পালনকারী কর্মীদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ সম্পর্কিত মামলা বা অভিযোগ এড়ানো সম্ভব, যদি নিয়োগকর্তা এ-বিষয়ে যত্নশীল হয়।
এটি করা যেতে পারে নিয়োগকর্তার পক্ষ থেকে সক্রিয় পদক্ষেপের মাধ্যমে। প্রাথমিকভাবে স্টেট ও টেরিটরির প্রচলিত আইন ও ফেয়ার ওয়ার্ক অ্যাক্টের অধীনে তাদের দায়িত্বগুলি মেনে চলার মাধ্যমে নিয়োগকর্তা এগুলি নিশ্চিত করতে পারেন।
“Health and safety issues are grounds on which employers can legitimately infringe upon religious practice or religious observance, in the form of religious dress for example,” Mr Carroll explains. (Getty) Credit: Maskot/Getty Images
তাই তার পরামর্শ হচ্ছে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া, এবং সর্বদা আইনী সহায়তা পাওয়ার উপায় খোঁজা।
আপনার স্টেট ও টেরিটরিতে ধর্মীয় বৈষম্য সংক্রান্ত অভিযোগ ও অন্যান্য তথ্যের জন্যে দেখুন:
ACT | ACT Human Rights Commission | |
NSW | Anti-Discrimination Board of NSW | |
NT | Northern Territory Anti-Discrimination Commission | |
QLD | Queensland Human Rights Commission | |
SA | South Australian Equal Opportunity Commission | |
TAS | Equal Opportunity Tasmania | |
VIC | Victorian Equal Opportunity & Human Rights Commission | |
WA | Western Australian Equal Opportunity Commission | |