গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি:
- গ্রীষ্মেকালে শরীরের পানিশূন্যতা রোধে পানি ও খনিজ বা ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয় পান করতে হবে।
- ঘরের বাইরে বের হলে এসপিএফ ৫০ বা তার অধিক মাত্রার সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
- ঘরের বাইরে বের হওয়ার আগে সবসময় ইউ ভি ইন্ডেক্স বা অতিবেগুনি রশ্মির তীব্রতা দেখে নিন।
শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখার জন্য আমাদের দেহের নিজস্ব তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আছে আর তা হচ্ছে ঘাম। গরমকালে স্বাভাবিকভাবে আমাদের শরীর ঘামে।
সিডনীর জিপি এঞ্জেলা স্কট বলেন, ঘামের মাধ্যমে আমাদের শরীর থেকে তাপ বের হয় এবং আমাদের শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকে।
অত্যাধিক গরমে আমাদের শরীর অস্বাভাবিক রকমের অবসন্ন হতে পারে। তাপজনিত এই অবসন্নতাকে হিট এক্সজশ্চন (heat exhaustion)বলা হয়ে থাকে। যথাসময়ে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে তার পরিণতিতে হিট স্ট্রোকও হতে পারে।
সাধারণত শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে অত্যাধিক লবন ও পানি বেরিয়ে যাওয়ার কারণে তাপজনিত অবসন্নতা দেখা দেয়।
হিট স্ট্রোক বা আতপাঘাতকে প্রাণঘাতি অসুস্থতা হিসাবে গন্য করা হয়। হিট স্ট্রোক হলে আমাদের শরীরের আভ্যন্তরীন তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কাজ করতে পারে না, এ কারণে একে মেডিক্যাল ইমারজেন্সি হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
ডক্টর স্কট তাপজনিত অবসন্নতার লক্ষণসমূহ ব্যাখ্যা করে বলেন,
তাপজনিত অবসন্নতার ক্ষেত্রে সাধারণত মাথাব্যথা, প্রচন্ড গরম লাগার পাশাপাশি শরীরে অত্যাধিক ঘাম দেখা দেয়। পরিশ্রান্ত অনুভূতি হয় কেননা মগজ থেকে শরীরে সব ক্রিয়াকলাপ ধীর গতিতে সম্পন্ন করার বার্তা পৌঁছে যায়।
তাপজনিত অসুস্থতা এড়াতে হলে গরমের দিনগুলোতে হাইড্রেটেড থাকা জরুরী বলে জানান ডক্টর স্কট। হাইড্রেটেড থাকার মানে, ঘাম দিয়ে শরীর থেকে যে লবন ও পানি বেরিয়ে যায়, তার ঘাটতি হতে না দেওয়া। তবে গরমের সময় তৃষ্ণা মেটানোর জন্য মিষ্টি পানীয় এড়াতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

Stay hydrated throughout the day as a critical preventive measure against heat exhaustion. Credit: The Good Brigade/Getty Images
এছাড়াও তিনি রোদে বের হলে ত্বকের যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। গরম আবহাওয়ায় হালকা কাপড় পরা উচিৎ এবং রোদের আড়াল থেকে বাঁচিয়ে ছায়াযুক্ত স্থানে আশ্রয় নিতে হবে এবং উপযুক্ত “সান প্রটেকশন ফ্যাক্টর” কাজে লাগাতে হবে। কোনো সানস্ক্রিনের কার্যকারিতা নির্ণয়ের জন্য সান প্রটেকশন ফ্যাক্টর ব্যবহার করা হয়।
অস্ট্রেলিয়ার সূর্যকিরণে অতিমাত্রার অতিবেগুনি রশ্মি রয়েছে। ত্বকের ক্যান্সার রক্ষার্থে তাই সান স্ক্রিন ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। এ প্রসংগে ক্যান্সার কাউন্সিলের ন্যাশনাল স্কিন ক্যান্সার কমিটি চেয়ার প্রফেসর অ্যান কাস্ট বলেন,
“অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে স্কিন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার হার ইউরোপের দ্বিগুন।”
অস্ট্রেলিয়ায় অতিবেগুনী রশ্মি কতটা তীব্র তা ব্যাখ্যা করে প্রফেসর কাস্ট আরও বলেন,
“অস্ট্রেলিয়ার অধিকাংশ স্থানে গ্রীষ্ম মৌসুমে অতিবেগুনী রশ্মির তীব্রতা ১২ থেকে ১৪ সূচকে পৌঁছে।”
তিনি জানান, অতিবেগুনী রশ্মি অনুভব করা যায় না বা দেখা যায় না। কোনো কোনো মেঘলা এবং ঠান্ডা দিনে এর তীব্রতা উষ্ণ দিনের চাইতে বেশি হতে পারে।

Most places in Australia have a UV index that peaks at around 12 to 14 in the summer months Credit: Six_Characters/Getty Images
“ডোন্ট লেট ক্যান্সার ইন” শীর্ষক এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সৈকত আর সাগরে ভ্রমণ বা বিনোদনমূলক ক্রিয়াকলাপের সময় সূর্যরশ্মি থেকে সুরক্ষা গ্রহনের পরামর্শ দেওয়া হয়।
এই ক্যাম্পেইন থেকে সূর্যালোকে রোজকার কর্মকাণ্ড পরিচালনার সময়েও সুরক্ষা গ্রহন করার আহবান জানানো হয়। সান স্মার্টের প্রধান এমা গ্লাসেনবারি আশা করেন তাদের ক্যাম্পেইনের বার্তা দেশব্যাপি প্রসার লাভ করবে।
মিস গ্লাসেনবারি বাহ্যিক কর্মকান্ডে যাওয়ার আগে “ইউভি লেভেল” বা সূর্যকিরণে অতিবেগুনী রশ্মির তীব্রতা কেমন তা জানার উপর জোর দেন। কীভাবে এই তথ্য জানা যায়, তা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন,
“যেকোনো আবহাওয়া পূর্বাভাস জানার অ্যাপে ইউভি লেভেল জানা যায়। এছাড়াও আপনি চাইলে সানস্মার্ট গ্লোবাল ইউভি অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারেন।”
ইউভি লেভেল জানার পাশাপাশি গ্রীষ্মে নিজেকে শীতল রাখার পাঁচটি উপায় জানিয়ে মিস গ্লাসেনবারি বলেন,
ইউভি লেভেল তিন বা তার উপর গেলে উপযুক্ত পদ্ধতিতে শরীর ঢাকা আবশ্যক।
পর্যাপ্ত কাপড় পরা, চওড়া হ্যাট আর সানগ্লাস পরা, শরীরের যে অংশ কাপড়ে ঢাকা যায় না সেখানে সানস্ক্রিন লাগানো এবং ছায়াযুক্ত স্থানে আশ্রয় নেওয়া।”
প্রতিবেদনটি পড়তে উপরের লিঙ্কে ক্লিক করুন।
এসবিএস রেডিও সম্প্রচার-সূচী হালনাগাদ করেছে, এখন থেকে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার, বিকাল ৩টায়, এসবিএস পপদেশীতে আমাদের অনুষ্ঠান শুনুন, লাইভ।
কিংবা, পুরনো সময়সূচীতেও আপনি আমাদের অনুষ্ঠান শোনা চালিয়ে যেতে পারেন। প্রতি সোম ও শনিবার, সন্ধ্যা ৬টায়, এসবিএস-২ তে।