গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- অস্ট্রেলিয়ায় শুধু পাঁচ বছরে গৃহহীনতার হার বেড়েছে ৫.২ শতাংশ
- কমিউনিটি গ্রুপগুলি আবাসন সংকট সমাধানের জন্য সরকারের হাউজিং অস্ট্রেলিয়া ফিউচার ফান্ডকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানাচ্ছে
- সরকার বলেছে যে তাদের আবাসন খাতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা আছে
গত ২২ মার্চ প্রকাশিত অস্ট্রেলিয়ান ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিক্স ডেটা থেকে দেখা যায় যে দেশে গৃহহীনতা বাড়ছে৷
এই নতুন পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২১ সালের আদমশুমারির রাতে প্রায় এক লক্ষ তেইশ হাজার লোক বাড়ি-ঘর ছাড়া ছিল, যা ২০১৬ সালের গণনার তুলনায় প্রায় ছয় হাজার বেশি।
গৃহহীনদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ নারী ও শিশু; ১৬ শতাংশের বয়স ছিল ৫৫ বছরের বেশি; ১৪ শতাংশের বয়স ছিল ১৯ থেকে ২৪ বছর।
গৃহহীনদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে টাসমানিয়ায়, যেখানে এই হার ৪৫ শতাংশ।
ভিক্টোরিয়ায়, আদিবাসী এবং টরে' স্ট্রেট আইল্যান্ডারদের গৃহহীনতার অভিজ্ঞতা ৪০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে।
মেলবোর্নের কাউন্সিল টু হোমলেস পারসনস সহ অধিকার গোষ্ঠীগুলি গৃহহীনতা কমাতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ফেডারেল সরকার বলেছে যে তারা ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
লেবার সরকার বলেছে যে আবাসন খাতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা তাদের আছে, এবং এজন্য তারা প্রতি বছর ৫ লক্ষ ডলারের তহবিলের যোগান দেবে।
আবাসন মন্ত্রী জুলি কলিন্স বলেছেন যে লেবার সংসদে দশ বিলিয়ন ডলারের সাশ্রয়ী মূল্যে আবাসন তহবিলের জন্য একটি বিল এনেছে এবং এজন্য হাউজিং সেক্টর জুড়ে সমর্থন রয়েছে।
কিন্তু কয়েকজন ক্রসবেঞ্চার (পার্লামেন্টে স্বতন্ত্র এবং ছোটদলের সদস্য)বলছেন যে এটি চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট নয়।
গ্রিনস পার্টিও একই কথা বলছে। তারা সরকারের এই তহবিল মডেলটিকে অস্থিতিশীল মনে করছে এবং এর পরিবর্তে বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার চাইছে।
পার্টির নেতা অ্যাডাম ব্যান্ডট বলেছেন বছরে কমপক্ষে পাঁচ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন, সেইসাথে বাড়ি ভাড়া স্থির করে দেয়ার দাবী করেছেন।
তিনি বলেছেন এ বিষয়ে নিষ্ক্রিয়তা সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে।
সংকট এতটাই ভয়াবহ যে, আমাদের পেনশনভোগীরা অন্যদের সাথে এক ঘরে ভাগাভাগি করে থাকতেও প্রতিযোগিতা করছে, মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে তাঁবুতে ঘুমাচ্ছে, অন্যের বাড়িতে সোফায় ঘুমাচ্ছে, কারণ তারা থাকার জায়গা খুঁজে পাচ্ছে না।মেই আজিজি, এভরিবডি'স হোম ক্যাম্পেইন
গত ২২ মার্চ প্রকাশিত, অস্ট্রেলিয়ান কাউন্সিল অফ সোশ্যাল সার্ভিসেস-এর একটি নতুন প্রতিবেদন থেকে দেখা যায় যে একক পিতামাতা, অভিবাসী, বেকার এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে বেশি।
সংস্থাটির সিইও ড. ক্যাসান্দ্রা গোল্ডি বলেছেন, আবাসনের খরচ জোগাতেই মানুষ সবচেয়ে বড় আর্থিক চাপের মুখে পড়ে।
এই পরিসংখ্যানে সানশাইন স্টেট কুইন্সল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ বা ভাড়াটেরা অবাক হচ্ছেন না।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকে সেখানে প্রকাশিত পরিসংখ্যান ইঙ্গিত করে যে স্টেটে অন্তত এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার পরিবার গুরুতর আবাসন সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে এবং প্রায় তিন লক্ষ লোক গৃহহীন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
ডেপুটি প্রিমিয়ার স্টিভেন মাইলস বলেছেন যে সরকার ২৮ মার্চ একটি হাউজিং সামিটে বাড়ি ভাড়া ক্যাপ বা সীমা নির্ধারণের প্রস্তাবের দিকে নজর দেবে।
তবে স্টেট সরকারের এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেছে বাড়ির মালিকদের প্রতিনিধিত্বকারী গোষ্ঠীগুলি।
কুইন্সল্যান্ডের রিয়েল এস্টেট ইনস্টিটিউটের সিইও আন্তোনিয়া মেরকোরেলা বলেন, এর আগেও সংসদে ভাড়ার ক্যাপের প্রস্তাবে একাধিক বিল এসেছে , এবং সেই বিলগুলি ব্যর্থ হয়েছে।
এদিকে, কমিউনিটি গ্রুপগুলি আবাসন সংকট সমাধানের জন্য সরকারের হাউজিং অস্ট্রেলিয়া ফিউচার ফান্ডকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানাচ্ছে।
এমনি একটি সংগঠন "এভরিবডি'স হোম" ক্যাম্পেইন-এর মেই আজিজি এবিসিকে বলেছেন যে ফান্ডটি পার্লামেন্টের মাধ্যমে পাস হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলছেন, “সংকট এতটাই ভয়াবহ যে, আমাদের পেনশনভোগীরা অন্যদের সাথে এক ঘরে ভাগাভাগি করে থাকতেও প্রতিযোগিতা করছে, মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে তাঁবুতে ঘুমাচ্ছে, অন্যের বাড়িতে সোফায় ঘুমাচ্ছে, কারণ তারা থাকার জায়গা খুঁজে পাচ্ছে না।"
সম্পূর্ণ অডিও প্রতিবেদনটি শুনতে ক্লিক করুন উপরের অডিও প্লেয়ার বাটনে।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা অডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত।