ক্যানবেরায় অস্ট্রেলিয়ার মিয়ানমার দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভকারীরা ‘ফ্রি বার্মা’ স্লোগান দেয়ার সাথে সাথে মিয়ানমারের সামরিক শাসকদের ছবি পোড়াচ্ছিলেন।
এই বিক্ষোভের অন্যতম সংগঠক ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান কোয়ালিশন ফর ডেমোক্রেসি ইন বার্মার মং মং থান।
তিনি বার্মা থেকে শরণার্থী হিসাবে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিলেন এবং ১৯৮৮ সাল থেকে সিডনিতে অবস্থান করছেন।
তিনি বলেন, বার্মায় যা ঘটছে তা মেনে নেয়া খুব কঠিন এবং তিনি সেখানে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্যে লড়াই করতে প্রস্তুত।
অস্ট্রেলিয়া সরকার সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেছেন, মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবে অস্ট্রেলিয়া নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।
গৃহবন্দী দশা থেকে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির মুক্তির মাধ্যমে মিয়ানমারে এক দশক ধরে যে রাজনৈতিক সংস্কারের সূচনা হয়েছিল, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের মাধ্যমে তার অবসান ঘটে।
সেই অভ্যুত্থানের রাতে সু চি এবং তাঁর অস্ট্রেলিয়ান উপদেষ্টা শন টার্নেলসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এর প্রতিবাদে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নামলেও কোনো সমাধান আসেনি বরং বহু মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। কারণ সেনাবাহিনী যে কোনো ভিন্নমতকে দ্রুততার সাথে দমন করছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলি বলছে, প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত, প্রায় ১৪ হাজার আটক এবং ১৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
তারা বলছে, আরও অনেককে ধর্ষণ ও নির্যাতন করা হয়েছে।
গণতন্ত্রপন্থীরা এই নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানালেও তারা বলছেন, সামরিক সরকারের পতন ঘটাতে আরো রাজনৈতিক চাপের প্রয়োজন।
ড. টুন শে তাদের মধ্যে একজন।
তিনি মিয়ানমার জাতীয় ঐক্য সরকারের অস্ট্রেলিয়ান প্রতিনিধি।
মিয়ানমারের অনেকে যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তারা বলছেন যে তারা কখনই হাল ছেড়ে দিবেন না।
গত বছর একটি সামরিক হামলার সময় ২১ বছর বয়সী প্রতিরোধ যোদ্ধা চ্যান আয়ে এক বিস্ফোরণে তার পা হারিয়েছিলেন।
বিস্ফোরণের পরে একজন সহযোদ্ধা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি বলেন যে জ্ঞান ফিরে পেলে তিনি দেখেন তার একটি পা হাঁটুর থেকে নীচ থেকে কেটে ফেলা হয়েছে।
পা হারানো সত্ত্বেও তিনি বলেন যে এই প্রতিরোধে যোগ দেওয়ার বিষয়ে তার কোনও অনুশোচনা নেই বরং এর শেষ পর্যন্ত তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: