গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর আক্রমণ ছিল ব্যাপক এবং পরিকল্পিত
- গত বছর মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশব্যাপী ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরে এবং সেনাবাহিনী নাগরিকদের উপর প্রাণঘাতী হামলা চালায়
- বিশ্লেষক বলছেন যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ক্রমবর্ধমান চাপ কিছু জেনারেলকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবে
২০১৭ সালে সামরিক বাহিনীর নৃশংস দমন অভিযানের পর থেকে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্য থেকে ৭৩০,০০০-এরও বেশি মানুষ পালিয়ে গেছে।দেশটির সামরিক জান্তা এখন আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে অভিযোগের মুখোমুখি।
পাঁচ বছর আগে, সহিংস সামরিক দমন-পীড়নের পর মিয়ানমারের লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে জঙ্গল পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে পৌঁছেছিল।
মিয়ানমারের রাখাইনে অনেক গণহত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে।
বিশ্ব এই অভিযোগগুলোর সাক্ষী হয়ে আছে, তার ভিত্তিতে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এটিকে গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে ঘোষণা করলো।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ইউএস হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলছেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আক্রমণটি ছিল ব্যাপক এবং পরিকল্পিত, যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ নির্ণয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেসব প্রমাণ পাওয়া গেছে তাতে বোঝা যায় এই গণহত্যার পিছনে একটি স্পষ্ট উদ্দেশ্য আছে, আর তা হলো রোহিঙ্গাদের সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস করা।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সেই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে।
তাদের মধ্যে ৬০ বছর বয়সী সালাউদ্দিন বলছেন, গণহত্যা ঘোষণায় আমরা খুবই খুশি, অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এটি আশা করছিলাম কারণ ১৯৬২ সাল থেকে শুরু করে ৬০ বছর হয়ে গেছে মিয়ানমার সরকার আমাদের রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য অনেক সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে।
গত বছর মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর আরও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। দেশব্যাপী ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরে এবং সেনাবাহিনী নাগরিকদের উপর প্রাণঘাতী হামলা চালায়।
মিঃ ব্লিঙ্কেন বলেছেন যে চলমান নৃশংসতার তদন্তে সহায়তা করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক মিলিয়ন ডলারেরও বেশি দান করবে।
এদিকে জাতিসংঘ বারবার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার নিন্দা করেছে, কিন্তু আমেরিকার গণহত্যার ঘোষণাকে সমর্থন করতে অস্বীকার করেছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক বলেছেন, এটি গণহত্যা কিনা সে রায় অবশ্যই একটি আদালত দিবে।
তিনি বলছেন, জাতিসংঘ মহাসচিব সবসময় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে মিয়ানমারের জনগণের দুর্ভোগের জন্য জবাবদিহিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
অভ্যুত্থানের পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা মিত্রদের দ্বারা সামরিক বাহিনীর উপর কোন নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। তবে কিছু বিশ্লেষক বলছেন যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ক্রমবর্ধমান চাপ এতে প্রভাব ফেলতে পারে।
ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অফ পিস-এর প্রিসিলা ক্ল্যাপ বলছেন, এর মানে তারা এখন যা করছে তার জন্য জবাবদিহিতা থাকবে। এখন এটি কিছু জেনারেলকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবে। তবে মিন অং হ্লাইং-এর কাছে এটি গুরুত্বপূর্ণ না হলেও তার সময় শেষ হয়ে আসছে। অনেকে দলত্যাগও করতে পারে।
কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে, এই সপ্তাহে মিয়ানমারে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় পিস্ এনভয় জান্তা প্রধানের সাথে সংকট সমাধানের চেষ্টা ও সমাধানে বৈঠক করবেন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন:
আরও দেখুন: