সিডনিতে স্বজনহীন-নিঃসঙ্গ বৃদ্ধের মৃত্যু, যেভাবে পাওয়া গেলো তাঁর দেহাবশেষ

NSW Ambulances park in the receiving bay for the Emergency Department at the Liverpool Hospital in Sydney.

NSW Ambulances (File Image). Source: AAP

সম্প্রতি সিডনিতে আহসান উল্লাহ নামের এক ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়, ধারণা করা হচ্ছে ৬৪ বছর বয়স্ক স্বজনহীন নিঃসঙ্গ এবং অসুস্থ ওই ব্যক্তি হয়তো কয়েকমাস আগেই মারা গিয়েছিলেন, তার সাথে যোগাযোগ ছিল অহিদুল ইসলাম সোহেলের। মি. আহসান উল্লাহ্‌র মৃতদেহ উদ্ধার এবং তার দাফন প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত ছিলেন মি. সোহেল। তিনি কথা বলেছেন এসবিএস বাংলার সাথে।


সিডনির বাসিন্দা অহিদুল ইসলাম সোহেলের সাথে আহসান উল্লাহর পরিচয় প্রায় দু'দশক ধরে।

যদিও শুরুতে মি. আহসান উল্লাহ কীভাবে অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে শুরু করেন সে ব্যাপারে পরিষ্কার কিছু জানা যায় নি, তবে সোহেল তাকে কাজ পেতে সাহায্য করেছিলেন, এবং সে সূত্রেই তাঁর সাথে পরিচয়।

এবং মৃত্যুর কয়েক বছর আগে আহসান উল্লাহ পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি পেয়েছিলেন বলে এসবিএস বাংলাকে জানান মি. সোহেল।

আহসান উল্লাহ কিডনি জটিলতা, চোখের অসুখসহ নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন, পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি পাওয়ার আগে মেডিকেয়ার সুবিধা না থাকায় তিনি দীর্ঘদিন এসবের চিকিৎসা করাতে পারেননি বলে ধারণা করছেন মি. সোহেল।

দুয়েকজনের সাথে যোগাযোগ ছাড়া বাংলাদেশ বা অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর আর কোন আত্মীয়-স্বজন ছিল কীনা জানা যায়নি।

বেশ কিছুদিন যোগাযোগ না থাকায় সোহেল আহসান উল্লাহর খোঁজে তাঁর এপার্টমেন্টে গেলে কোন সাড়া শব্দ পাননি, প্রতিবেশী একজন জানান তাঁকে তাঁরা অনেকদিন দেখেননি, তবে 'গন্ধ' পেয়েছেন।
7ad18bf4-af93-4789-aa6f-6781865c4cff.jpg
Wahidul Islam Sohel was involved with the recovery and burial process of Ahsan Ullah’s body. Credit: Wahidul Islam Sohel
মি. সোহেল এরপর পুলিশ ও পাবলিক হাউজিং অফিসে যোগাযোগ করেন, তিনি যখন ঘরে ফিরছিলেন তখন পুলিশ তাকে ফোনে জানায় আহসান উল্লাহকে মৃত অবস্থায় তাঁর এপার্টমেন্টে পাওয়া গেছে।

"মৃতদেহের অবস্থা থেকে তাঁরা ধারণা করেছেন, তিনি হয়তো বেশ কয়েক মাস আগেই মারা গেছেন," বলেন মি. সোহেল।

দাফনে সহায়তা

প্রায় এক মাস কোন আত্মীয়-স্বজন না পাওয়া যাওয়ায় এবং পাবলিক হাউজিং অফিসে আহসান উল্লাহ আগে থেকেই সোহেলকে 'নেক্সট অফ কিন' হিসেবে ঘোষণা দেওয়ায় তাঁর দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে উদ্যোগ নেন তিনি।

অহিদুল ইসলাম সোহেল বলেন, বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যদের আর্থিক অনুদান এবং অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম ওয়েলফেয়ার কমিটির ড. আনিসুল আফসার ও অন্যান্য সদস্যদের সহযোগিতায় আহসান উল্লাহর দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

তবে দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া এবং পাবলিক হাউজিংয়ে থাকা আহসান উল্লাহর খোঁজ কেউই করেনি - না হাসপাতাল, না হাউজিং কর্তৃপক্ষ; এই বিষয়টা ভীষণ আহত করেছে মি. সোহেলকে।

তিনি প্রশ্ন রাখেন, তার মানে স্বজনহীন বৃদ্ধদের কেউ যদি কখনো খোঁজ না করে কিংবা তাঁরা মারা যায়, তবে কী এভাবেই অন্তর্ধান থাকবেন তাঁরা?

অহিদুল ইসলাম সোহেলের পুরো সাক্ষাৎকারটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।

এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত।

রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন 

Share