পৃথিবীর সর্বাধিক বহুসংস্কৃতির দেশগুলির মধ্যে অন্যতম হিসাবে অস্ট্রেলিয়া বর্তমানে একটি অনন্য সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করছে। এ দেশে এখন শিষ্টাচারের নিয়মগুলোও এরকম যা এ দেশের মানুষদের বৈচিত্র্যময় প্রকৃতিকে ঐক্যবদ্ধ করে। যদিও অস্ট্রেলিয়ায় 'ভাল শিষ্টাচার' হিসাবে বিবেচিত কিছু আচরণ সহজেই চিহ্নিত করা যায়, তবে কোন আচরণ নম্র ও ভদ্র বা কোন আচরণটি অভদ্রতা বলে বিবেচিত হবে, তার জন্য কিছু অলিখিত নিয়মও রয়েছে।
অ্যামান্ডা কিং ‘অস্ট্রেলিয়ান ফিনিশিং স্কুল’-এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি সমস্ত সাংস্কৃতিক পটভূমির মানুষকে অস্ট্রেলিয়ান প্রেক্ষাপটে গ্রহণযোগ্য আচরণগুলো কী কী সেই সম্পর্কে শিক্ষাদান করেন।
মিজ কিং বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় শিষ্টাচার সাধারণত নির্দিষ্ট পরিবেশ এবং পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে।
তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, অভিবাসীদের পেশাগত পরিমন্ডলে প্রবেশের চেষ্টা তাদের ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা এবং সাংস্কৃতিক ভিন্নতার কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। তিনি বলেন, স্বীকৃত আচরণবিধি বোঝা এবং অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
READ MORE
নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
যদিও অস্ট্রেলিয়ায় নতুন আগত অভিবাসীদের এখানকার শিষ্টাচারের আচরণবিধি শিখতে সময় লাগে এবং এর জন্যে অনুশীলনের প্রয়োজন পড়ে, তবে এই শিক্ষা খুব সহজেই শুরু করা যেতে পারে কিছু অভ্যাসের মাধ্যমে। যেমন, কাউকে কোনও অপ্রয়োজনীয় বা অগ্রহণযোগ্য প্রশ্ন করা এড়িয়ে যাওয়া।
যেহেতু প্রতিটি সংস্কৃতিতেই কোন আচরণ গ্রহণযোগ্য অথবা বর্জনীয় তা নির্ধারণের ভিন্ন ভিন্ন মান রয়েছে, আমরা তাই দীর্ঘসময় ধরে এদেশে থাকা কয়েকজন অভিবাসীদের জিজ্ঞাসা করেছি তাদের অভিজ্ঞতার কথা।
উইনমাস ইউ হংকং থেকে এসেছেন এবং দশ বছর ধরে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন। তিনি বলেন, কেউ দেখতে মোটা অথবা কারও ওজন কম কিনা, এটা এ নিয়ে মন্তব্য করা এ দেশে গ্রহণযোগ্য নয়।
Asking prying questions could land people into uncomfortable territory. Credit: Getty Images/NicolasMcComber
সারার মতে, অনেক ব্যক্তিগত প্রশ্ন যেমন, কারও আর্থিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করাও অপ্রচলিত নয়।
কিছু কিছু আরব সংস্কৃতিতে সদ্যই দেখা হওয়া মানুষদেরকে তাদের বৈবাহিক অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
ফ্যাবিওলা ক্যাম্পবেল ১৮ বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছেন। তিনি এসেছেন ভেনিজুয়েলা থেকে, এবং এখানে ২০১৯ সালে ‘প্রফেশনাল মাইগ্রেন্ট উইমেন’ নামের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।
এই নেটওয়ার্কটি অস্ট্রেলিয়ান চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে চাওয়া বিদেশী নারীদের দরকারী পরামর্শ দিয়ে থাকে।
মিজ ক্যাম্পবেল বিশ্বাস করেন যে সাংস্কৃতিক ভিন্নতা কর্মক্ষেত্রে অভিবাসীদের জন্য একটি বাধা হয়ে উঠতে পারে, কারণ নেটওয়ার্কিং এবং শিষ্টাচারের মাধ্যমেই ভাল সম্পর্ক গড়ে তুলতে হয়।
Networking etiquette are crucial skills when job hunting or in the professional workplace. Getty Images/Kosamtu
কাউকে অপ্রত্যাশিত আঘাত দেয়ার সম্ভাবনা এড়াতে মিজ ক্যাম্পবেলের পরামর্শগুলির মধ্যে রয়েছে ‘অনুগ্রহ করে' এবং 'ধন্যবাদ' এর মতো নমনীয় শব্দগুলি নিয়মিত ব্যবহার করা। তবে এই শব্দগুলি অনেক বেশি বলাও উচিত নয় কারণ তাহলে সেটি দরকারের চেয়ে অতিরিক্ত বলে শোনাতে পারে।
In some cultures, constantly apologising or saying 'thank you' are signs of polite behaviour. In Australia however, these phrases should be used frequently, but not repeatedly. Getty Images/RRice1981
শিষ্টাচার প্রশিক্ষক অ্যামান্ডা কিং পরামর্শ দেন যে সামাজিক বা পেশাগত অনুষ্ঠানে সময়মতো উপস্থিত থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোনও সমাবেশ বা মিটিংয়ের জন্য দেরী হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে অনুষ্ঠানের আয়োজকদের কমপক্ষে ১৫ বা ২০ মিনিট আগে জানানো জরুরি।
এছাড়াও অন্যদের সঙ্গে নিজেকে পরিষ্কারভাবে ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া নিশ্চিত করা উচিত।
সবশেষে মিজ ক্যাম্পবেল চান অভিবাসীরা যেন সবখানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে, কারণ অস্ট্রেলিয়ার অনেকেরই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পটভূমির লোকদের সাথে ওঠাবসা করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ার বাটনে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: