চাকরির জন্য সাক্ষাৎকারে ভাল করার একমাত্র উপায় হলো পূর্ব-প্রস্তুতি গ্রহণ করা

How to prepare for a job interview in Australia.

সাক্ষাৎকারে ভালো করতে বন্ধুদের সঙ্গে চর্চা বা অনুশীলন করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা Source: SBS

অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম বারের মতো কাজ পেতে বা নতুন কাজ খুঁজতে দীর্ঘ সময় লাগে। তাই, চাকরির সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হলে মানুষ প্রথমে উত্তেজিত ও আনন্দিত হন। তবে অনেক সময় মানুষ এর ফলে মানসিক চাপের শিকারও হন। চাকরির জন্য সাক্ষাৎকারে ভাল করার একমাত্র উপায় হলো পূর্ব-প্রস্তুতি গ্রহণ করা এবং সেখানে কী হতে পারে সে সম্পর্কে পূর্ব-ধারণা রাখা।


অস্ট্রেলিয়ায় চাকরির বাজার অনেক প্রতিযোগিতাপূর্ণ। এর মানে হলো, এখানে একটি পদের জন্য শত শত লোক আবেদন করতে পারেন।

আপনি যদি কাজের সাক্ষাৎকারের জন্য নির্বাচিত হন, তাহলে আপনি আপনার লক্ষ্যের আরও একধাপ কাছে চলে গেলেন।

AMES-এর ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট কো-অর্ডিনেটর Marg Davis বলেন, জব ইন্টারভিউ বা চাকরির সাক্ষাৎকারে সফল হওয়ার জন্য পূর্ব-প্রস্তুতি গ্রহণ করাটা অনেক বড় নিয়ামক।

অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় রিক্রুটমেন্ট ফার্ম Hays-এর স্টেট ম্যানেজিং ডাইরেক্টর Tim James বলেন, আপনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চান সে সম্পর্কে আগে-ভাগে খোঁজ-খবর নেওয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার প্রস্তুতি গ্রহণ করা শুরু করতে পারেন।

যে কাজের জন্য চেষ্টা করছেন সেটার সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। সেজন্য জব ডেসক্রিপশন ভালভাবে পড়ুন এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বা কি-ওয়ার্ডগুলো হাইলাইট করুন। তাহলে সাক্ষাৎকারের সময়ে আপনি এগুলো ব্যবহার করতে পারবেন। নিয়োগদাতা আসলে কী খুঁজছেন তা বোঝার চেষ্টা করুন। আর, সম্ভাব্য প্রশ্নগুলোর উত্তরে কী বলবেন সে সম্পর্কেও আগে-ভাগেই পরিকল্পনা করুন।

বন্ধুর সঙ্গে চর্চা বা অনুশীলন করার পরামর্শ দেন ক্যারিয়ার কোচ Ray Pavri.

আপনি কোন খাতে কাজ করতে যাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করবে আপনি কী ধরনের পোশাক পরিধান করবেন। যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চাচ্ছেন তাদের ড্রেস কোড বা পোশাক-রীতি অনুসরণ করুন। কোনো কোনো ইন্ডাস্ট্রিতে বিজনেস স্যুট এবং টাই পরিধান করার রেওয়াজ রয়েছে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে একটু ক্যাজুয়াল তবে স্মার্ট পোশাক পরিধান করা যায়।

প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার সময়ে আপনি ড্রেস কোডের বিষয়টি দেখে নেবেন। তবে আপনি যদি নিশ্চিত না হন, তাহলে তাদের রিসিপশনে ফোন করেও জেনে নিতে পারবেন।

যেখানেই আপনার সাক্ষাৎকার নেওয়া হোক না কেন, আপনাকে অবশ্যই পরিপাটি হয়ে পরিষ্কার পোশাক ও জুতা পরিধান করে যেতে হবে।

সাক্ষাৎকারের দিনে অন্তত পাঁচ থেকে দশ মিনিট আগে আগেই সেখানে পৌঁছান। তাহলে আপনাকে আর তাড়াহুড়ো করতে হবে না।

সাক্ষাৎকার হয়তো শুরু হবে মামুলি ধরনের কথাবার্তা দিয়ে। যেমন, আপনি এখানে কীভাবে এলেন কিংবা সেদিন পর্যন্ত আপনি কী করছেন ইত্যাদি।

Pavri বলেন, এসব কথাবার্তাও গুরুত্বপূর্ণ।

তারা হয়তো আপনার সম্পর্কে নানা প্রশ্ন করবে। আপনি তাদের কোম্পানি সম্পর্কে কী জানেন এবং আপনার কাজের ইতিহাস সম্পর্কেও প্রশ্ন করতে পারে।

আচরণ-বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নও তারা করবে। ডেভিস বলেন, সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী আপনার অতীত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাইবে এবং আপনি কীভাবে সেই অভিজ্ঞতা আপনার নতুন কাজে প্রয়োগ করতে পারবেন সেটাও বলতে হবে।

সাক্ষাৎকারের সময়ে আপনাকে অবশ্যই ইতিবাচক মন-মানসিকতা প্রকাশ করতে হবে এবং যে কাজের জন্য আবেদন করেছেন তার প্রতি উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখাতে হবে। মৃদু হাসুন, সোজা হয়ে বসুন এবং সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের চোখে চোখ রেখে কথা বলুন।

কণ্ঠস্বরের প্রতি সবসময় মনোযোগ দেওয়ার কথা বলেন ডেভিস।

সাক্ষাৎকারের শেষে আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হবে, আপনার কোনো প্রশ্ন আছে কিনা? কিছু প্রশ্ন আগেভাগেই তৈরি করে রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ।

জেমস বলেন, তাদেরকে প্রশ্ন করে সেই সময়টিতে আপনি এটা বুঝিয়ে দিতে পারেন যে, আপনি আসলে এই কাজটিই চাচ্ছেন। এটা গুরুত্বপূর্ণ।

সাক্ষাৎকার শেষ হলে, সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীদেরকে ধন্যবাদ দিতে ভুলবেন না। আর তাদেরকে জিজ্ঞাসা করুন পরবর্তী ধাপগুলো সম্পর্কে। ডেভিস পরামর্শ দেন ফলো-আপ ইমেইল পাঠানোর।

আশা করা যায় যে, আপনাকে এ কাজের জন্য ডাকা হবে। তবে, যদি তা না ঘটে সেজন্য হতাশ হবেন না। কাজ পাওয়ার আগে বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারের মধ্য দিয়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক বিষয়।

শুধু এটা নিশ্চিত করুন যে, প্রতিটি সাক্ষাৎকার থেকে আপনি কিছু না কিছু শিখছেন। আপনি সেখানে ভাল কী করেছেন এবং কোন কোন বিষয়ে আপনার আরও উন্নতি করতে হবে নোট করুন। এভাবে আপনি পরবর্তী সাক্ষাৎকারে আরও ভাল করতে পারবেন।

পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে ওপরের লিংকে ক্লিক করুন
আরো পড়ুন:

Share