অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। তারা বছরে ৪০ বিলিয়ন ডলারের অবদান রাখে এবং ২৫০,০০০ কর্ম-সংস্থানে ভূমিকা রাখে। তাদের মধ্য থেকে একটি অংশ পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকে পরিণত হয়।
সাম্প্রতিক করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীর কারণে অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের খাতটিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা যারা পড়াশোনার পাশাপাশি নানা ধরনের কাজ করতো, কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য আরোপিত বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের অনেকেই এখন কর্মহীন হয়ে পড়েছে। একদিকে দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে গিয়ে তাদের সঞ্চিত অর্থে টান পড়েছে, অপর দিকে তারা চাইলেও নিজের দেশ থেকে, পরিবার-পরিজন বা অভিভাবকদের কাছ থেকে অর্থ আনতে পারছে না, কারণ, সে-সব দেশেও করোনাভাইরাসের কারণে লোকজন অসুবিধার মধ্যে আছে। আর, ভিসাগত সীমাবদ্ধতার কারণে তারা অস্ট্রেলিয়া সরকারের সেন্টারলিঙ্ক এবং অন্যান্য সহায়তাগুলোও পাওয়ার উপযুক্ততা লাভ করছে না।
এসবের বাইরে রয়েছে ভিসা-জটিলতা। করোনাভাইরাসের কারণে তাদের কোর্স যদি সময়মতো সম্পন্ন না হয়, তাহলে কী হবে? যারা শিক্ষার্থী ভিসা পেয়েছেন কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করতে পারছেন না, তারাই বা কী করবেন?
এসব কারণে যদি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা অস্ট্রেলিয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়? আন্তর্জাতিক শিক্ষা খাতে অস্ট্রেলিয়ার সুনাম ধরে রাখার বিষয়টি তাই গুরুত্বপূর্ণ।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য সম্প্রতি পাঁচটি ক্ষেত্রে ভিসার নিয়ম পরিবর্তিত করার ঘোষণা এসেছে।
গত সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০ অস্ট্রেলিয়ার অ্যাক্টিং ইমিগ্রেশন মিনিস্টার অ্যালান টাজ এমপির পক্ষ থেকে একটি বলা হয়েছে,
অস্ট্রেলিয়ার বাইরে থেকে জমা দেওয়া সমস্ত শিক্ষার্থী ভিসা অনুমোদন করা পুনরায় শুরু করবে সরকার। এর মানে হলো, যখন সীমান্তগুলো পুনরায় খোলা হবে, সেই সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের ভিসা মঞ্জুর হয়ে যাবে এবং তারা ভ্রমণের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।
মিডিয়া রিলিজটিতে আরও বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ এর কারণে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা যদি তাদের মূল ভিসার মেয়াদকালের মধ্যে তাদের পড়াশোনা সম্পন্ন করতে না পারে, সেক্ষেত্রে তারা বিনামূল্যে আরেকটি শিক্ষার্থী ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে।
কোভিড-১৯ এর কারণে বর্তমানে শিক্ষার্থী ভিসাধারী যারা অস্ট্রেলিয়ার বাইরে থেকে অনলাইনে কোর্স করছেন তারা পোস্ট-স্টাডি ওয়ার্ক ভিসার জন্য এই পড়াশোনাকে অস্ট্রেলিয়ান স্টাডি হিসেবে উল্লেখ করতে পারবেন।
কোভিড-১৯ এর কারণে অস্ট্রেলিয়ায় ফেরত আসতে পারছেন না যারা, শিক্ষার্থী ভিসাধারী সেসব গ্রাজুয়েটরা পোস্ট-স্টাডি ওয়ার্ক ভিসার জন্য অস্ট্রেলিয়ার বাইরে থেকে আবেদন করতে পারবেন।
কোভিড-১৯ এর কারণে যারা ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার ফলাফল সময়মতো সংগ্রহ করতে পারছেন না, সে রকম আবেদনকারীদেরকে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে।
মিডিয়া রিলিজটিতে অ্যাক্টিং ইমিগ্রেশন মিনিস্টারকে উদ্ধৃত করে বলা হয়,
“এসবের মাধ্যমে আমরা শুধু শিক্ষা খাতকেই সহায়তা করছি না, এর সুপ্রভাব পড়বে স্থানীয় কমিউনিটি ও ব্যবসাগুলোতে, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে আবাসন, পর্যটন, হসপিটালিটি এবং রিটেইল।”
এই জয়েন্ট মিডিয়া রিলিজটিতে এডুকেশন মিনিস্টার ড্যান টিহান বলেন,
“এই ভাইরাসটির বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আমাদের লক্ষণীয় প্রচেষ্টাগুলোর মানে হলো, যখন রাজ্যগুলোর সীমান্ত পুনরায় খুলে দেওয়া হবে এবং মুখোমুখি শিক্ষাপ্রদান পুনরায় চালু করা হবে তখন আমরা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদেরকে কোভিড-নিরাপদ উপায়ে আবারও স্বাগত জানাতে পারি।”