Feature

ভারতে কার্যকর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন - প্রতিবেশী দেশগুলোর সংখ্যালঘুরা 'ধর্মীয় উৎপীড়নের' কারণে আশ্রয় পাবেন

লোকসভা নির্বাচনের আগেই ভারতে কার্যকর হয়ে গেলো সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন।

India: Krishak Mukti Sangram Samity (KMSS) supporters holding placards, raise slogans during a protest against the Citizenship Amendment Act (CAA)

Guwahati, Feb 29 (ANI): Krishak Mukti Sangram Samity (KMSS) supporters holding placards, raise slogans during a protest against the Citizenship Amendment Act (CAA), in Guwahati on Thursday. (ANI Photo via Hindustan Times/Sipa USA) Credit: Hindustan Times/Sipa USA/AAP

সোমবার সন্ধ্যায় একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সিএএ কার্যকরের কথা জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।

উল্লেখ্য ২০১৯ সালে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে সিএএ পাশ করিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। এই আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো দেশ থেকে যদি সংখ্যালঘুরা 'ধর্মীয় উৎপীড়নের' কারণে ভারতে আশ্রয় চান, তাহলে তা দেবে ভারত।
সংসদের দু’কক্ষে পাশ হওয়ার পরে রাষ্ট্রপতিও অনুমোদন দিয়েছিলেন সিএএ বিলে। কিন্তু এতদিন ধরে সিএএ কার্যকর করা নিয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। ফেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের আগেই দেশে সিএএ কার্যকর হবে। ইতিমধ্যে সিএএ নিয়ে একটি ট্রায়াল হয়েছে।

জানা গেছে, প্রথমে নিজের স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে ইন্ডিয়ান সিটিজেনশিপ অনলাইন,এনআইসি.ইন ওয়েবসাইটে যেতে হবে। তারপরেই ফোনে একটি ওটিপি আসবে। এরপরে প্রয়োজনীয় নথি ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে।

কিন্তু এই বিষয় নিয়ে দুটি প্রশ্ন উঠেছে। প্রথমত, একটি পরিবারে যদি একাধিক সদস্য থাকে,তাহলে কি সকলের তথ্যই ওই ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে। দ্বিতীয়ত, কোনও ব্যক্তি যদি তাঁর ঠিকানা বদলায় সেক্ষেত্রে কি করবেন তিনি। আইন অনুযায়ী, ভিসা বা পাসপোর্টের মতো নথি না থাকলেও ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
India's government is set to introduce a controversial citizenship law. Source: EPA / Mast Irham
India's government is set to introduce a controversial citizenship law. Source: EPA / Mast Irham
এতদিন ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছিল, নাগরিকত্ব পেতে টানা এক বছর ভারতে থাকতে হবে। এ ছাড়াও বিগত ১৪ বছরের মধ্যে ১১ বছর ভারতে থাকা বাধ্যতামূলক।

কিন্তু সংশোধনী আইনে সেই ১১ বছরের সময়কাল কমিয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে।প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ (২০১৯)-কে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক জনস্বার্থ মামলা হয়েছে দেশের বিভিন্ন আদালতে।

২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর সিএএ-র বিরুদ্ধে আর্জির প্রথম শুনানি শুরু হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। ওই বছরেরই ১১ ডিসেম্বর সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পর দেশ জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। তার পরেও অবশ্য ২০২০-এর ১ জানুয়ারি বিলটি আইনে পরিণত হয়।

এদিকে,বৈষম্য থাকলে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন তথা সিএএ মানবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে ভোটের আগে বিজেপির 'ললিপপ' বলে মন্তব্য করেছেন। এই আইনের জন্য কারো নাগরিকত্ব বাতিল হলে চুপ থাকবেন না, প্রতিবাদ করবেন বলে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনি।

একইসঙ্গে নতুন আইনের বিরোধিতায় অনড় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। সাংবাদিক সম্মেলন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, "চিন্তা করবেন না, কোনও ভয় নেই, কারোর নাগরিকত্ব কাড়তে দেব না।

তিনি কটাক্ষ করে বলেন, "এটা ছেলের হাতের মোয়া! চাইলেই কালকে নাগরিকত্ব দিতে পারবে না। যদি এখন সিএএ করে বলে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়, তবে কি এতদিন তারা নাগরিক ছিল না?"

তিনি আরো বলেন, কাউকে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে গেলে তিনি চুপ করে থাকবেন না।
অন্যদিকে, কিছুদিন আগেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর হচ্ছে, দাবি করেছিলেন বিজেপি সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর।

কেন্দ্রের ঘোষণার পরেই দেখা গিয়েছে, সীমান্ত লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকায় এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের ধর্মস্থান ঠাকুর বাড়িতে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে আনন্দ মেতে উঠেছেন মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা। দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে বলেই মনে করছেন তাঁরা।

যদিও বিরোধীদের বক্তব্য,সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ঘোষণা বিজেপির রাজনৈতিক চমক। সেই কারণেই তা লোকসভা ভোটের আগে ঘোষণা করা হয়েছে।

এর মধ্যে বিরোধী কংগ্রেসের নেতা কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, চার বছর তিন মাস লেগে গিয়েছে সিএএ কার্যকর করতে। যেটি সংসদে পাশ হয়েছিল ২০১৯ সালে।

"প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, তাঁর সরকার কর্পোরেট সংস্থার মতো সময় মেনে কাজ করেন।" তাঁর কথায়, "সিএএ কার্যকর করতে সময় নেওয়াতে বোঝা গেল, প্রধানমন্ত্রী কত বড় মিথ্যুক।"

এসবিএস রেডিও সম্প্রচার-সূচী হালনাগাদ করেছে, এখন থেকে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার, বিকাল ৩টায়, এসবিএস পপদেশীতে আমাদের অনুষ্ঠান শুনুন, লাইভ।

কিংবা, পুরনো সময়সূচীতেও আপনি আমাদের অনুষ্ঠান শোনা চালিয়ে যেতে পারেন। প্রতি সোম ও শনিবার, সন্ধ্যা ৬টায়, এসবিএস-২ তে।

রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

এ সম্পর্কে আরও জানতে ভিজিট করুন: 

Share

Published

By Partha Mukhopadhyay
Presented by Shahan Alam
Source: SBS

Share this with family and friends