আটকে পড়া বাংলাদেশীদের নিয়ে সিডনি থেকে ঢাকায় গেল দ্বিতীয় বিশেষ ফ্লাইট

কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির কারণে আটকে পড়া ১৭৫ জন বাংলাদেশী যাত্রী নিয়ে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের বাণিজ্যিক বিমানের একটি ফ্লাইট গতকাল ১৫ জুন সিডনি থেকে ঢাকায় গিয়েছে।

Australia arranges more flights to bring citizens home

Australia arranges more flights to bring citizens home. Source: Facebook/Bhc Canberra

আটকে পড়া বাংলাদেশীদের নিয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটি ছিল দ্বিতীয় বিশেষ ফ্লাইট। এর আগে গত ৮ মে ২০২০ তারিখে শ্রী লঙ্কান এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে করে ১৫৭ জন আটকে পড়া বাংলাদেশী যাত্রী মেলবোর্ন থেকে ঢাকায় ফেরত যান।

এ দুটি ফ্লাইটের আয়োজনের পেছনে ছিল অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশী হাইকমিশন। তারা সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এ সম্পর্কে সিডনিতে কনসুলেট জেনারেল অফ বাংলাদেশ-এর কনসাল জেনারেল খন্দকার মাসুদুল আলম বলেন,

“এটি মূলত ক্যানবেরাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকেই সমন্বয় করা হয়। আমরা সিডনি কনসুলেট অফিস থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করি।”
Second non- scheduled flight evacuated stranded Bangladeshis from Australia
Source: Facebook/Bhc Canberra
ক্যানবেরাস্থ বাংলাদেশী হাইকমিশনেরে ডেপুটি হাইকমিশনার তারেক আহমেদ বলেন,

“লকডাউন শুরুর পর থেকে বাংলাদেশী যারা এখানে আটকে পড়েছে তাদের দেশে ফেরার ব্যাপারে চিন্তা করতে শুরু করি। প্রাথমিকভাবে ঢাকায় আমরা যোগাযোগ করি এবং আমাদের হাইকমিশন ওয়েবসাইটে নিডস অ্যাসেসমেন্ট নামে একটা টেম্পলেট আপলোড করি। এখানে আটকে পড়া বাংলাদেশীরা যারা এখানে রেজিস্টার করেছে সেই সংখ্যার ভিত্তিতে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য কতো জন আগ্রহী সেই অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।”

“প্রথম ফ্লাইট ৮ মে মেলবোর্ন থেকে ১৫৭ জন বাংলাদেশীকে নিয়ে যায়। আর দ্বিতীয় ফ্লাইটটি গতকাল ১৫ জুন ১৭৫ জন আটকে পড়া বাংলাদেশীকে নিয়ে দেশে ফিরেছে।”

প্রথম ফ্লাইটটির মতো দ্বিতীয় ফ্লাইটের আয়োজনের ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করে মেলবোর্ন-ভিত্তিক মেল্টন ট্রাভেল সেন্টার। মেল্টন ট্রাভেল সেন্টারের ডাইরেক্টর মাহতাব খান লিটু বলেন,

“আমাদের কমিউনিটির প্রতি আমাদের নিজস্ব একটা দায়িত্ব আছে। এই দায়িত্ববোধ থেকেই যখনই কোনো প্রয়োজন হয় তখন আমরা কমিউনিটির জন্য এগিয়ে আসার চেষ্টা করি। তাই যখনই জানলাম যে, অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশীরা আটকে পড়েছেন, তারা দেশে ফিরে যেতে চাচ্ছেন। তখন তাদেরকে সহায়তা করার জন্য এগিয়ে আসি।”

প্রথম ও দ্বিতীয় ফ্লাইটের আয়োজন সম্পর্কে মাহতাব বলেন,

“যখনই এ রকম চার্টার্ড ফ্লাইটের বন্দোবস্ত করা হয়, তখন এর পেছনে কূটনৈতিক কিছু বিষয়ও জড়িত থাকে। এই বিষয়গুলো বাংলাদেশ হাইকমিশন দেখে। আর যখন তারা এই ফ্লাইটগুলোর আয়োজনের ক্ষেত্রে সহায়তা চেয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তখন আমি একজন ট্রাভেল এজেন্ট হিসেবে, বাংলাদেশী কমিউনিটির একজন সদস্য হিসেবে যতোটুকু পারি সাহায্য করি।”

দ্বিতীয় ফ্লাইটটি সম্পর্কে তিনি বলেন,

“আমার জানা মতে, অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশের যে দূরত্ব, সে বিচারে এটাই সবচেয়ে সস্তা চার্টার্ড ফ্লাইট ছিল, যেটা আমরা হাইকমিশনকে বন্দোবস্ত করে দিতে সক্ষম হয়েছি।”

অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ হাইকমিশনের ‘নিডস অ্যাসেসমেন্ট’ এর রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী এই দুটি ফ্লাইট যোগে অস্ট্রেলিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশীদের বেশিরভাগ দেশে ফেরত গেলেন। শীঘ্রই বেশ কিছু গন্তব্যের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক বিমান চালু হতে যাচ্ছে। তাই অস্ট্রেলিয়া থেকে বিশেষ ফ্লাইট আয়োজনের আর কোনো প্রয়োজনীয়তা থাকবে না বলে আশা করা যায়।

কনসাল জেনারেল খন্দকার মাসুদুল আলম বলেন,

“ইতোমধ্যেই কাতার এয়ারওয়েজ তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। আজকে থেকেই বাংলাদেশ থেকে তাদের ফ্লাইট চালু হওয়ার কথা রয়েছে।”

অস্ট্রেলিয়ায় আটকে পরা বাংলাদেশীরা যদি আগ্রহী হন এবং যদি বিশেষ ফ্লাইটের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক যাত্রী পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে আবারও এ রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে বলে হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে।

বাংলাদেশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার তারেক আহমেদ বলেন,

“অ্যাসেসমেন্ট টেম্পলেট এখনও খোলা রয়েছে। বাংলাদেশীদের প্রয়োজন অনুসারে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে হাইকমিশন।”

“আমাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া হটলাইন নম্বরগুলো এখনও খোলা আছে। আটকে পড়া বাংলাদেশীরা তাদের যে-কোনো সমস্যায় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। ডাক্তারদের পুলও এখন রয়েছে।”

Follow SBS Bangla on .

Share
Published 16 June 2020 12:11pm
Updated 16 June 2020 2:50pm
By Sikder Taher Ahmad

Share this with family and friends