সিডনির একুশের বইমেলায় সাহিত্যিক আনিসুল হক বলেন, “আমাদের বইগুলো সম্পাদিত হওয়া খুব জরুরি”

Anisul Haque.jpg

সিডনির অ্যাশফিল্ড পার্কে গত ৩ মার্চ, ২০২৪, রবিবার, একুশে বইমেলায় সাহিত্যিক-সাংবাদিক আনিসুল হক বলেন, “আমার নিজের ধারণা, প্রযুক্তি এত দ্রুত বদলাচ্ছে যে, আগামী ২০-২৫ বছর পরে হয়তো আমরা অন্য কোনো একটা ফর্মে বইটা দেখবো। আমরা এখন যেভাবে কাগজের বই মেলে ধরে পড়ি, এটা হয়তো আস্তে আস্তে জনপ্রিয়তা হারাবে।” Source: SBS / Sikder Taher Ahmad

কবি, সাহিত্যিক ও বাংলাদেশের একটি প্রথম সারির দৈনিকের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিক আনিসুল হক কথা বলেছেন এসবিএস বাংলার সঙ্গে।


প্রকৌশলে স্নাতক, মেধাবী শিক্ষার্থী আনিসুল হক সাহিত্যাঙ্গনে পা রাখেন কবিতার মাধ্যমে। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘খোলা চিঠি সুন্দরের কাছে” (১৯৮৯)। সাপ্তাহিক পূর্বাভাষ ও আরও কিছু পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত তার তীক্ষ্ম রাজনৈতিক কলামগুলো নিয়ে পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত হয় গদ্যকার্টুন ও ১৯৯৫ সালে কথা কার্টুন।

গদ্য, কবিতা, কলাম লেখার পাশাপাশি নাটক ও সিনেমার স্ক্রিপ্টও লিখেছেন তিনি। তার সাহিত্য কর্মের মধ্যে ‘মা’ উপন্যাসটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছে। এটি অনুবাদিত হয়েছে বেশ কয়েকটি ভাষায়।

বাংলা অ্যাকাডেমী পুরস্কার-সহ বেশ কয়েকটি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন আনিসুল হক।

একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়া-র উদ্যোগে সিডনির অ্যাশফিল্ড পার্কে আয়োজিত একুশে বইমেলা ২০২৪ উপলক্ষে সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন তিনি।
৩ মার্চ, ২০২৪, রবিবার বইমেলায় এসবিএস বাংলাকে তিনি বলেন,

“আমাকে যদি শুধু সাহিত্যিক বলা যেত, তাহলে আমি বেশি খুশি হতাম। কিন্তু, আসলে জীবনের প্রায় ৩২-৩৩ বছর সাংবাদিকতা করছি। কাজেই সাংবাদিক-সাহিত্যিক, সাহিত্যিক-সাংবাদিক, কোনোটাতেই আমার কোনো আপত্তি নাই।”

সাংবাদিকতা কি তার কবি-সত্তাকে দূষিত করেছে? এ রকম প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,

“আমি সারল্যে বিশ্বাস করি। এবং আমি অহিংসা নীতিতে বিশ্বাস করি।”

“আমি একজন মানুষকেও আঘাত দিয়ে কোনো একটা আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে চাই না।”

সাংবাদিকতা কি সাহিত্যের হন্তারক? এ প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন,

“এটা সত্য যে, শুধু সাহিত্যিক হতে পারলে হয়তো ভাল হতো। কিন্তু, বাংলাদেশে শুধু সাহিত্য করে কেউ জীবন নির্বাহ করেছেন, এটা একদম কঠিন।”

“শুধু সাহিত্য করে বাংলাদেশে টেকা খুব মুশকিল; বাংলা ভাষায় টেকা খুব মুশকিল।”

“আমার ক্ষেত্রেও কিন্তু সাংবাদিকতা আমাকে অনেক হেল্প করেছে আমি বলবো।”

“কাজেই, সাংবাদিকতা সাহিত্যের হন্তারক, এটা [বলাটা] একটু বাড়াবাড়ি ধরনের সরলীকরণ হয়ে যাবে।”
বর্তমানে ‘অন্ধকারে একশ’ বছর’-এর মতো বই লেখা কি সম্ভব কিনা, তার উত্তরে তিনি বলেন, সম্ভব। এ নিয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি বলেন,

“কর্তৃত্ববাদী যে-কোনো কিছুই খারাপ।”

কাগজে প্রকাশিত বইয়ের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,

“এখনও পর্যন্ত কাগজে প্রকাশিত বইয়ের ভবিষ্যৎ আমরা ভালই দেখি।”

“আমার নিজের ধারণা, প্রযুক্তি এত দ্রুত বদলাচ্ছে যে, আগামী ২০-২৫ বছর পরে হয়তো আমরা অন্য কোনো একটা ফর্মে বইটা দেখবো। আমরা এখন যেভাবে কাগজের বই মেলে ধরে পড়ি, এটা হয়তো আস্তে আস্তে জনপ্রিয়তা হারাবে।”

বই প্রকাশের আগে সম্পাদনার গুরুত্ব সম্পর্কে আনিসুল হক বলেন,

“প্রকাশকদের কাছে আমরা চাই যে, ওদের একটা পূর্ণাঙ্গ সম্পাদনা পরিষদ থাকবে।”

“সবার আগে দরকার হচ্ছে পাণ্ডুলিপি জমা দেবার একটা ঘোষিত এবং আচরিত নীতি।”

“আমাদের দেশে আমরা কিন্তু জানি না যে, একটা প্রকাশকের কাছে পাণ্ডুলিপি নিয়ে কীভাবে জমা দিতে হয়।”

“তারপরও, প্রকাশকদেরকে বলবো, আপনারা নির্ভুলভাবে যেন একটা বই বের করে সেটা দেখেন।”

“আমাদের বইগুলো সম্পাদিত হওয়া খুব জরুরি।”

আনিসুল হকের সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকারটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
এসবিএস রেডিও সম্প্রচার-সূচী হালনাগাদ করেছে, এখন থেকে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার, বিকাল ৩টায়, এসবিএস পপদেশীতে আমাদের অনুষ্ঠান শুনুন, লাইভ।

কিংবা, পুরনো সময়সূচীতেও আপনি আমাদের অনুষ্ঠান শোনা চালিয়ে যেতে পারেন। প্রতি সোম ও শনিবার, সন্ধ্যা ৬টায়, এসবিএস-২ এ।
Bangla_New time_screenshot.png
৫ অক্টোবর থেকে নতুন চ্যানেলে ও নতুন সময়ে যাচ্ছে SBS Bangla Credit: SBS
রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

এ সম্পর্কে আরও জানতে ভিজিট করুন:

আমাদেরকে অনুসরণ করুন 

Share