বাংলাদেশ হাই কমিশন ক্যানবেরার উদ্যোগে যথাযথ মর্যাদা ও ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ক্যানবেরায় পালিত হলো শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
বৈদেশিক কূটনৈতিক-সহ অস্ট্রেলিয়ান ও প্রবাসী বাংলাদেশীরা এতে স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে ক্যানবেরাস্থ তেলোপিয়া পার্কে মানুকা সার্কিট ও নিউ সাউথ ওয়েলস স্ট্রীটে এর ক্রসরোডে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। প্রত্যুষ ৬.২০ মিনিটে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রভাত ফেরী অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন এসিটি গভর্ণমেন্টের জাস্টিস মিনিস্টার সেইন রেটেনবারি, বিরোধী দলের নেতা মি. এলিষ্টর কো, ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল, পেরুর রাষ্ট্রদূত অষ্ট্রেলিয়ান ইনডোজেনিয়াস এজেন্সীর প্রতিনিধি মাল্টি কালচারাল অথরিটির প্রতিনিধিসহ ও বিভিন্ন দেশের কূননৈতিকবৃন্দ, অষ্ট্রেলিয়ার ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন ট্রেড (DFAT) এর প্রতিনিধি অষ্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী ও অভিবাসীগণ এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ।
Source: Supplied
অংশগ্রহণকারীরা সমবেত স্থল থেকে পদব্রজে ক্যানবেরাস্থ অ্যাভিনিউর মানুকা অ্যাভাল প্রদক্ষিণ শেষে অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং ভাষা শহীদদের স্মরণে ০১ মিনিট দাড়িয়ে নীরবতা পালন করেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার, ভারতের হাইকমিশনার, এসিটি জাষ্টিস মিনিষ্টার এবং বিরোধী দলের নেতা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন। এতে বক্তাগণ মহান শহীদ দিবস ও আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস এর তাৎপর্য তুলে ধরেন। হাই কমিশনার সুফিউর রহমান তাঁর বক্তব্যে সকল ভাষা শহীদ ও ভাষা সংগ্রামীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ব্যক্ত করেন। তিনি ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীর ভাষাকে যথাযথ মর্যাদা প্রদান ও বিলুপ্ত ভাষা রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সকলকে সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানান। ভারতের রাষ্ট্রদূত সাম্প্রতিক বাংলাদেশের অর্জনের ভূয়সী প্রসংশা করনে।
হাইকমিশনার তাঁর বক্তব্যে সান্ধ্যকালীন আয়োজনে “মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” এর তাৎপর্য বিষয়ে আলোচনায় হাইকমিশনারসহ অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশীরা অংশগ্রহন করেন। হাইকমিশনার তাঁর বক্তব্যে বিলুপ্ত ভাষার প্রেক্ষিত বর্ণনা করে বাংলাসহ সকল মাতৃভাষার উন্নয়ন ও অধিকতর চর্চার উপর গুরাত্বারোপ করেন। তিনি রাজনৈতিক ক্ষেত্র প্রস্তুতের মাধ্যমে বাংলা ভাষার বর্তমান উৎকর্ষ অবস্থান সৃষ্টির জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ট নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তিনি বাংলা ভাষার বিবর্তনে ও বিকাশে পশ্চিম বাংলার স্থলে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেয়ার সম্ভাবনার বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি প্রবাসী বাঙ্গালিদের বাংলা চর্চার চ্যালেঞ্জের উপর আলোকপাত করেন।আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে শিশু কিশোরসহ বাংলাদেশেী শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশ থেকে আগত প্রসিদ্ধ নৃত্যশিল্পী ওয়ারদা রিহাব ও তাঁর দল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন; যার উপজীব্য বিষয় ছিল বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ। প্রায় দেড় শতাধিক প্রবাসী ও অভিবাসী বাংলাদেশী উক্ত অনুষ্ঠান উপভোগ করেন এবং নৈশভোজে অংশ নেন।
H. E. Mr Mohammad Sufiur Rahman (L), High Commissioner for the People’s Republic of Bangladesh to Australia, New Zealand and Fiji. Source: Supplied
এদিকে, ক্যানবেরায় ২১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ন্যাশনাল মাল্টি-কালচারাল ফেস্টিভ্যাল, চলবে আগামী রবিবার ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪:৩০ থেকে ৬.০০ পর্যন্ত সময়ে স্টেজ-৬ এ এতে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশ থেকে আগত ধৃতি নর্তনালয়ের শিল্পীরা। ক্লাসিক ড্যান্স বা ধ্রুপদী নৃত্যের মাধ্যমে তারা উপস্থাপন করবে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা-সংগ্রামের চিত্র।মান্যবর মোহাম্মদ সুফিউর রহমানের সাক্ষাৎকারটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
Source: Supplied