গত ৪ জানুয়ারি শনিবার ভোর ১টায় মেলবোর্নের হপার্স ক্রসিংয়ের সায়ার্স রোডে অবস্থিত গুরুজি মন্দিরে আগুন লাগে, যার ফলে মন্দিরের প্রধান ভবন এবং নির্মাণাধীন নতুন অংশ উভয়ই ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুনটি ভবনের ভেতর থেকে শুরু হয়েছিল এবং দ্রুত তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ঘটনাস্থলে কেউ উপস্থিত না থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ভিক্টোরিয়ান পুলিশের মুখপাত্র লিওনি জনসন এসবিএস বাংলাকে জানিয়েছেন যে আগুনটি সন্দেহজনক নয়।
মন্দিরের ট্রাস্টি আমান গ্রেওয়াল বলেছেন, “এটি আমাদের সকলের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। গুরুজি মন্দির আমাদের দ্বিতীয় বাড়ি। আমরা সবাই গভীরভাবে আহত হয়েছি। মন্দির সংস্কারাধীন ছিল এবং সম্প্রদায়ের সদস্যদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। মানুষ এখানে আশীর্বাদ নিতে খুব ভালোবাসে।”
আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে আমান গ্রেওয়াল আরও জানান, “ফায়ার রেসকিউ ভিক্টোরিয়া (FRV) জানিয়েছে, এটি একটি শর্ট সার্কিটের কারণে ঘটেছে।”
মন্দিরের একজন ভক্ত চৈতন্য আগরওয়াল বলেন, “আমরা খুবই হতবাক ছিলাম। যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছাই, তখন মনে হচ্ছিল যেন একটি দুঃস্বপ্ন। তখন শুধু ভাবছিলাম কীভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং ক্ষতি কমানো যায়। এটি আমাদের উপাসনার স্থান, প্রার্থনার স্থান। এটি আমাদের সম্প্রদায়কে একত্র করে। তাই এটি আমাদের সবার জন্য খুব কষ্টদায়ক।”
মন্দিরের আরেকজন ভক্ত কমিউনিটিতে এই ঘটনার প্রভাব বর্ণনা করে বলেন, “অনেক ভক্ত নিয়মিত এখানে আসতেন। অনেকের জন্য এটি ছিল তাদের দ্বিতীয় বাড়ি, কারণ তারা এখানে শান্তি পেতেন। সপ্তাহের কর্মব্যস্ততার পর শনিবার, রবিবার ও সোমবার এখানে এসে ধ্যান করতেন। এই মন্দিরের ধারণাটি অন্য কোনো প্রচলিত মন্দিরের থেকে ভিন্ন। এখানে ধ্যান করে, ইতিবাচক শক্তি নিয়ে ফিরে যেতেন। এই ঘটনা সম্প্রদায়কে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। আমি অনেক ভক্তদের সঙ্গে কথা বলেছি, সবাই খুব দুঃখিত এবং চিন্তিত যে তারা এখন কোথায় যাবেন। তবে আশা করি মন্দির কর্তৃপক্ষ এমন কিছু ব্যবস্থা নেবে যাতে তারা নিয়মিত সঙ্গত এবং ধ্যান করতে পারেন।”
মন্দিরটির ওয়েবসাইট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং যেকোনো আপডেটের জন্য তাদের সঙ্গে যোগাযোগের অনুরোধ করা হয়েছে। এতে আরও জানানো হয়েছে যে জনসাধারণের নিরাপত্তা ও মন্দিরের সংস্কারের জন্য মন্দিরটি পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
ভিক্টোরিয়ান পুলিশ জানিয়েছে, আগুনটি সন্দেহজনক নয়। তবে, যাদের কাছে ড্যাশক্যাম বা সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে অথবা যারা এই ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছেন, তাদের ক্রাইম স্টপারসে (১৮০০ ৩৩৩ ০০০) যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হয়েছে।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ার বাটনে ক্লিক করুন।
READ MORE
অস্ট্রেলিয়া জুড়ে বুশফায়ারের এক ঝলক