ইরানের রাজধানী তেহরানে ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী বিমান উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিধ্বস্ত হয়। গত ৮ জানুয়ারি, বুধবার এ ঘটনা ঘটে।
ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের বোয়িং-৭৩৭ বিমানটিতে ১৭৬ জন আরোহী ছিলেন। তারা সবাই নিহত হন।
ইরান এখন স্বীকার করেছে যে, ভুল করে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের হঠকারী আচরণকে দায়ী করেছে তারা। ইরানের সামরিক বাহিনী বলেছে, বিমানটিতে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত লাগার বিষয়টি ইচ্ছাকৃত ছিল না। এটা ছিল ভুল।
জানুয়ারির ৩ তারিখে মার্কিন ড্রোন হামলায় মৃত্যুবরণ করেন ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা কাসেম সোলায়মানি। এর প্রতিশোধ নিতে ইরাকে অবস্থিত দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে ২২টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান।
তেহরান থেকে কিয়েভ হয়ে টরেন্টোগামী এই যাত্রীবাহী বিমানটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিধ্বস্ত হয় নি বলে এর আগে ইরান দাবি করেছিল।
কিন্তু, মার্কিন ও কানাডিয়ান ইন্টেলিজেন্স যা সন্দেহ করেছিল সেটাই এখন নিশ্চিত করলো ইরান।
এক টুইট বার্তায় ইরানের ফরেন মিনিস্টার জাভেদ যারিফ শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন এবং মানবীয় ভুলের জন্য ক্ষমা চান। তিনি বলেন, “সঙ্কটের সময়ে যে মানবীয় ভুল হয়েছে তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের হঠকারী আচরণ দায়ী।”
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানিও টুইটার-বার্তায় ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি একে মর্মান্তিক ও ক্ষমার অযোগ্য ভুল বলে উল্লেখ করেন।
ইরানের এই ঘোষণার পর কানাডার ফরেন মিনিস্টার ফ্রাসোয়ে-ফিলিপ শ্যাম্পেন একটি সংবাদ সম্মেলন করেন।
বিমানটতে ১৬৭ জন যাত্রী ও ৯ জন ক্রু ছিলেন। এর মধ্যে ৮২ জন ইরানি, কমপক্ষে ৫৭ জন কানাডিয়ান এবং ১১ জন ইউক্রেনিয়ান ছিলেন।
এমএইচ-১৭ ক্রাশ সাইট তদন্তে অংশ নিয়েছিলেন কানাডার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স বিশ্লেষক মাইকেল বোরসি-কি। তিনি তখন ইওরোপে অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন এ কর্মরত ছিলেন। ইরানের এই ঘোষণাকে তিনি স্বাগত জানান।
মিস্টার বোরসি-কি বলেন, ইরান যদি তাদের রাডার-ডাটা প্রকাশ করে তাহলে কোথা থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে তা জানা যাবে।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের জুলাই মাসে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে মালয়শিয়া এয়ারলাইন্স ফ্লাইট এমএইচ-১৭ গুলি করে বিধ্বস্ত করা হয়। রাশিয়ানরা তখন রাডার-ডাটা দিতে অস্বীকার করে।
প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।