সিডনিতে মাল্টিকালচারাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেলেন বাংলাদেশী কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান

MIMA Award 2022

গত ২৯ জুলাই নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেট পার্লামেন্টের জুবিলি কক্ষে মাল্টিকালচারাল অ্যান্ড ইনডিজেনাস মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড (MIMA) আয়োজিত বাংলা প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২২ পুরস্কার বিতরণ করা হয় সিডনি-প্রবাসী বাংলাদেশী কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে।

Get the SBS Audio app

Other ways to listen


Published

Updated

By Sikder Taher Ahmad
Source: SBS

Share this with family and friends


সিডনিতে বাংলা প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২২ এর বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। গত ২৯ জুলাই নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেট পার্লামেন্টের জুবিলি কক্ষে মাল্টিকালচারাল অ্যান্ড ইনডিজেনাস মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড (MIMA) আয়োজিত এ পুরস্কার পেয়েছে সিডনি-প্রবাসী বাংলাদেশী কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।


সিডনিতে বসবাসরত কলামিস্ট অজয় দাশগুপ্ত পুরস্কার পেয়েছেন কমিউনিটি কলামিস্ট বিভাগে। এ ছাড়া, আবু নাইম আব্দুল্লাহ্ (কমিউনিটি সাংবাদিকতা বিভাগ), মোহাম্মদ কাইয়ুম (কমিউনিটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগ), মাসিক মুক্তমঞ্চ পত্রিকা (প্রিন্ট মিডিয়া বিভাগ) ও অনলাইন পোর্টাল প্রশান্তিকা (অনলাইন মিডিয়া বিভাগ) পুরস্কার পেয়েছে।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের সংসদ সদস্য শওকত মসেলমানি, সিডনিতে বাংলাদেশের নতুন কনসাল জেনারেল মো. সাখাওয়াৎ হোসেন-সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানটির আয়োজনে সহযোগিতা করে সিডনি অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া ক্লাব।

মাল্টিকালচারাল অ্যান্ড ইনডিজেনাস মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস (MIMA), পার্লামেন্ট অফ নিউ সাউথ ওয়েলস এবং অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া ক্লাব এর যৌথ উদ্যোগে এই প্রথমবারের মতো বাংলা প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

MIMA এর পক্ষ থেকে ইস্যু করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এর চেয়ারম্যান শওকত মসেলমানি এর বিচারক প্যানেলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

বিচারকদের মধ্যে ছিলেন ইউটিএস এর প্রফেসর দেবলীনা ঘোষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আহমেদ জামাল, ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির ড. বদরুল খান এবং বাংলাদেশ বেতারের জিয়া আহমেদ।
শওকত মসেলমানি আরও বলেন, সেদিনের সেই অনুষ্ঠানটি ছিল স্থানীয় বাঙালি সাংবাদিকদের নিয়ে, যারা বহুসাংস্কৃতিক অস্ট্রেলিয়ায় একেবারে সামনে থেকে কাজ করছেন। তিনি মনে করেন, তাদেরকে এই স্বীকৃতি আরও আগেই দেওয়া দরকার ছিল।

অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি, মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ বলেন,

“এই উদ্যোগটা প্রথমবারের জন্য হলেও শেষবারের জন্য নয়। MIMA প্রত্যেক বছরেই এই অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রামটা বিভিন্ন ক্যাটাগোরিতে চালু রাখবে এবং আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করবো এবং (এটা) আমাদের সংগঠনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। যারা বিভিন্ন ক্যাটাগোরিতে বিভিন্ন লাইনে, মিডিয়া লাইনে কাজ করছেন, প্রত্যেকেই আপনারা এপ্লাই করতে পারেন এবং তার যোগ্যতা অনুযায়ী আপনারা পেয়ে যাবেন।”

পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কয়েকজনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল এসবিএস বাংলার পক্ষ থেকে।

সিডনিতে বসবাসরত কলামিস্ট অজয় দাশগুপ্ত পুরস্কার পেয়েছেন কমিউনিটি কলামিস্ট বিভাগে। তিনি বলেন,

“এটি আসলে মাল্টিকালচারাল ইনডিজেনাস মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড, যেটা প্রথমবারের মতো প্রবর্তিত হয়েছে। এখানে তারা কলাম-লেখক হিসেবে আমাকে নির্বাচিত করেছেন, পদকের জন্য। যারা এটি করেছেন তাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাই। সাথে অভিনন্দন জানাই আমাদের বাংলাদেশী কমিউনিটিকে। যাদের সহযোগিতা ছাড়া এ ধরনের অর্জন আসলে কোনো অর্থই বহন করে না।”

পুরস্কার পাওয়ায় আনন্দিত হওয়ার পাশাপাশি দায়িত্বও অনুভব করেন তিনি।

“এবং আমি বিশ্বাস করি যে, যে-কোনো অর্জন হচ্ছে এক ধরনের স্বীকৃতি এবং সাথে এক ধরনের দায়িত্ব। আমি গত ত্রিশ বছর ধরেই বাংলাদেশে কলাম লেখালেখি করি। সেখানে সেরা কলাম-লেখকের পুরস্কার পাওয়ায় আমি যতোটা আনন্দিত, তার চেয়ে বেশি মনে হয়েছে আমার দায়িত্ব বেড়েছে। এবং আমরা যে-প্রজন্মকে রেখে যাচ্ছি এখানে, তাদের মধ্যে আমাদের শিল্প-সংস্কৃতির সঞ্চার করা এবং দেশ ও জাতিকে সংহত করা। এটাই আমার কামনা থাকবে।”

কমিউনিটি স্বল্পধৈর্ঘ চলচ্চিত্র বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন মোহাম্মদ কাইয়ুম। তিনি বলেন,

“প্রথমে আমি ধন্যবাদ জানাই MIMA-এর কর্ণধার মিস্টার শওকত মুসলমানী এবং বাংলা প্রেস অ্যান্ড মিডিয়ার কর্ণধান জনাব রহমতুল্লাহ্ সাহেবকে। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে আমাদের কমিউনিটিকে একটি সার্থক অ্যাওয়ার্ড-সন্ধ্যা উপহার দেওয়ার জন্য। আর এই শর্ট ফিল্মে যারা কাজ করেছেন আমাদের, আমার টিম মেম্বার, তারা দিনরাত খেটেছেন, তাদেরকে আমি অশেষ অশেষ ধন্যবাদ জানাই। এবং বিচারক কমিটিকে অনেক ধন্যবাদ, তারা আমাকে পুরস্কারের যোগ্য মনে করার জন্য। তবে হ্যাঁ, এই অ্যাওয়ার্ডটি পেয়ে আমি খুব খুশি হয়েছি। এবং আমি মনে করি, আমাদের কমিউনিটিতে, নতুন প্রজন্মেরও যারা এই মিডিয়া জগতে আছেন, তাদেরকে এগিয়ে আসা উচিত নতুন নতুন প্রডাকশন আইডিয়া নিয়ে।”

মাসিক মুক্তমঞ্চ পত্রিকার সম্পাদক আল নোমান শামীম বলেন,

“সম্প্রতি নিউ সাউথ ওয়েলস পার্লামেন্টে মাল্টিকালচারাল ইনডিজেনাস অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তিতে আমি মুক্তমঞ্চ পরিবারের পক্ষ থেকে খুবই গর্বিত অনুভব করছি। আমাদের ১৭ বছরের কাজের একটা স্বীকৃতি আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।”

এজন্য তিনি তার স্ত্রী-সহ মুক্তমঞ্চ পরিবারের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

“আমি প্রথমেই এই ব্যাপারে আমার সহধর্মীনীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই যে, এতগুলো বছর এই কাজটির সাথে উনি পুট আপ করেছেন। সেই সাথে আমাদের সংবাদপত্রের সাথে জড়িত মেহেদি হাসান শাহীন, খন্দকার এনামুল হক, আরও অন্যান্য যারা প্রথম দিকে জড়িত ছিলেন, উৎসাহিত করেছেন নুরুল রহমান খোকন ভাই, গামা আব্দুল কাদির ভাই, ড. লাভলী রহমান আপা, তারপর নেহাল নেয়ামুল বারি ভাই-সহ আমাদের প্রয়াত উপদেষ্টা আব্দুল গাফফার চৌধুরী ভাই-সহ যারা দীর্ঘদিন ধরে আমাদেরকে পেট্রোনাইজড করছেন, বিশেষ করে আমাদের শুভানুধ্যায়ী, আমাদের পাঠকরা, আমাদের যারা অ্যাড দিয়েছেন, প্রত্যেকের অনেকখানি বলা যায় সহযোগিতা, সহমর্মিতা, ভালবাসায় পত্রিকাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আজকের এই পর্যায়ে এসেছে।”

পরিশেষে, আয়োজকদের সবার প্রতিও তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

কমিউনিটি সাংবাদিকতা বিভাবে পুরস্কার পেয়েছেন আবু নাইম আব্দুল্লাহ্। তিনি বলেন,

“নিউ সাউথ ওয়েলস পার্লামেন্টে এই স্বীকৃতি অবশ্যই গর্বের। বিশেষত, অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ প্রেস ও মিডিয়া ক্লাবের উদ্যোগে স্টেট পার্লামেন্ট সদস্য শওকত মুসলমানী যে উদ্যোগটি নিয়েছেন তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। এই উদ্যোগের কারণেই অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসী সাংবাদিক, সংবাদ-মাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও পত্রিকাগুলোর গত ত্রিশ বছরের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া হলো।”

সেজন্য তিনি স্থানীয় বাংলা পত্রপত্রিকা ও গণমাধ্যমের প্রতি ধন্যবাদ জানান।

“আমি আরও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই বিদেশ বাংলা, সিডনি প্রতিদিন, জন্মভূমি টেলিভিশন, দেশ বিদেশ, মুক্তমঞ্চ, প্রভাত ফেরি, স্বাধীন কণ্ঠ, ডিবিসি নিউজ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, বিডিনিউজ২৪ এবং আর-টিভি-কে; যাদের অনুপ্রেরণায় আজ আমি আমার এই কাজের স্বীকৃতি পেয়েছি।”
অনলাইন সংবাদ-মাধ্যম হিসেবে সেরা পদক পায় প্রশান্তিকা। এর সম্পাদক ও প্রকাশক আতিকুর রহমান শুভ বলেন,

“এজন্য প্রশান্তিকা সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে আমি আতিকুর রহমান শুভ সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমার অসংখ্য পাঠক ও লেখকদের। সারা অস্ট্রেলিয়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রশান্তিকার সম্মানিত লেখকবৃন্দকে। তাসমানিয়ায় সাকিব আব্দুল্লাহ থেকে ব্রিসবেনে তুলি নুর, মেলবোর্নে মিতা চৌধুরী, সহযোগী সম্পাদক নাদেরা সুলতানা নদী, প্রদায়ক সম্পাদক ফারিনা মাহমুদ, পার্থে শরীফা তুলতুলি থেকে এডেলেইডে তানজিনা তাইসিন, সিডনিতে বার্তা সম্পাদক আরিফুর রহমান, মার্কেটিং ও বিজ্ঞাপনে কাজী ইসলাম ফাগুন-সহ যারা প্রশান্তিকার সাথে যুক্ত, সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।”

তিনি আশা করেন যে, ভবিষ্যতেও তারা এই ধারা বজায় রাখবেন।

“আশা করছি প্রশান্তিকা ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন এক্সক্লুসিভ ফিচার, ভিউজ এবং মন্তব্য কলাম এবং সাহিত্য, সবকিছু নিয়ে পাঠকদের মাঝে আসবে।”

প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Share