অস্ট্রেলিয়ার 'অরফান রিলেটিভ ভিসার' শর্ত আর আবেদনের যোগ্যতা

settlement guide

Source: Getty Images/Symphonie

অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনের জন্য বিভিন্ন ভিসার মধ্যে ‘অরফান রিলেটিভ ভিসা’ (সাবক্লাস ১১৭) অন্যতম। এবারের সেটলমেন্ট গাইডের বিষয় এতিম আত্মীয় ভিসা বা ‘অরফান রিলেটিভ ভিসা’(সাবক্লাস ১১৭)।


অস্ট্রেলিয়ার যেকোনো ভিসার মত, অরফান রিলেটিভ ভিসার (সাবক্লাস ১১৭) ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট শর্তাবলি পূরণ করতে হয়। 

যেসব শিশুর পিতামাতা মারা গেছেন, বা হারিয়ে গেছেন বা তাদের দেখাশোনা করেন না, সেসব শিশুরা অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত অভিভাবকদের কাছে এসে থাকতে পারে।
সিডনীর শাদা মাইগ্রেশন এন্ড এডুকেশন সার্ভিসেস এর ইমিগ্রেশন এজেন্ট মোহাম্মদ রেজা আজিমী জানান, এতিম আত্মীয় ভিসা (উপশ্রেণী ১১৭) অস্ট্রেলিয়ার বাইরে ভিন্ন কোন দেশের অপ্রাপ্তবয়স্ক (অনুর্ধ্ব১৮) শিশুর জন্য চালু হয়েছে। 

পিতৃমাতৃহীন শিশু বা যাদের অভিভাবকেরা শিশুদের দেখাশোনা করতে অপারগ, বা হারিয়ে গেছেন- এমন ক্ষেত্রে সেই শিশুকে অস্ট্রেলিয়ার আত্নীয়রা এদেশে ভরণপোষণের জন্য নিয়ে আসতে পারেন। 

এই ভিসায় শর্ত থাকে যে, শিশুটিকে অস্ট্রেলিয়ার বাইরে কোন দেশের হতে হবে আর এদেশে তাকে স্পন্সর করার মত উপযুক্ত আত্মীয় থাকতে হবে।
AAP
Source: AAP
সিডনীর ভিসায়াব মাইগ্রেশন এর জেনারেল ম্যানেজার ও প্রিন্সিপাল মাইগ্রেশান এজেন্ট ডক্টর সাইরাস আহমাদী বিষয়টি আরও বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে বলেন,

"এই ভিসার স্পনসরকে অবশ্যই অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দা (পারমানেন্ট ভিসাপ্রাপ্ত) বা, উপযুক্ত নিউজিল্যান্ড সিটিজেন হতে হবে। 

স্পনসর বা পৃষ্ঠপোষকতাকারীকে প্রাপ্তবয়স্ক( অন্তত১৮ বছর বয়স) ও শিশুটির আত্মীয় হতে হবে। শিশুর আত্মীয়টি তার ভাই-বোন বা সৎ ভাই-বোন, মামা, চাচা, পিতামহ বা মাতামহ হতে পারেন।

এছাড়াও আরও কিছু শর্ত আছে, যা অবশ্যই পূরণ করতে হবে। মিস্টার আজিমী জানান, 

এই স্পনসরশিপ ভিসা ডিপার্টমেন্ট অফ হোম এফেয়ার্স কর্তৃক স্বীকৃত হতে হবে। 

মিস্টার আজিমী জানান, যদি শিশুর অভিভাবকেরা তাকে বেড়ে উঠার সময়ে লালনপালন করতে সমর্থ না হন, কারাবন্দী থাকেন, বা মারা যান, সেক্ষেত্রে তাদেরকে আবেদনের সময়র সংশ্লিষ্ট দলিল বা সনদ দাখিল করতে হবে— যেমন আদালতের দলিল, মেডিক্যাল সার্টিফিকেট কিংবা ডেথ সার্টিফিকেট। 

অরফান রিলেটিভ ভিসার কিছু উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক দিক আছে, যেমন এটি একটি স্থায়ী ভিসা। মিস্টার আহমাদি আরও বিস্তারিত আরও জানান,  এই ভিসায় আসা শিশু অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীনিবাস গড়তে পারে, সরকারী স্বাস্থ্য সুবিধা পেতে পারে, এমনকি নাগরিকও হতে পারে।
AAP
Source: AAP
ঘানা থেকে আসা র‍্যাচেল উআউটযুওসিয়া ২০১৬ সালে অরফান রিলেটিভ ভিসায় (সাবক্লাস ১১৭) অস্ট্রেলিয়া আসে। র‍্যাচেল জানায়, তার মায়ের সিজোফ্রেনিয়া সহ স্বাস্থ্যগত জটিলতা থাকায়, তাকে তার দাদী দেখাশোনা করতো। যদিও তার বাবা জীবিত ছিল, কিন্তু সে তার খবর নিতো না। 

র‍্যাচেলের চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ভাইটি ছোটবেলা থেকে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন। 

২০১৫ সালে র‍্যাচেলের মা মারা যাওয়ার পর তার সেই বড়ভাই র‍্যাচেল আর তার আরেক ভাইয়ের জন্য অরফান রিলেটিভ ভিসার আবেদন করেন। 

এই ভিসা আবেদন মঞ্জুর হলে, র‍্যাচেল ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় চলে আসে। র‍্যাচেল সম্প্রতি অস্টেলিয়ার নাগ্রিকত্ব গ্রহণ করেছে। সে এখন পূর্ণকালীন কাজ করছে আর সমানতালে  পড়ালেখাও চালিয়ে যাচ্ছে। 


 পুরো প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন। 

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ  

এখানে যে তথ্য দেয়া হয়েছে তা অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসন বিষয়ে সাধারণ তথ্য এবং নির্দিষ্ট কোন পরামর্শ নয়। কেউ যদি আরো প্রাসঙ্গিক এবং সুনির্দিষ্ট তথ্য পেতে চান তাহলে একজন রেজিস্টার্ড মাইগ্রেশন এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করুন। 

আরো তথ্যের জন্য ভিজিট করুন: অস্ট্রেলিয়া গভর্নমেন্ট, ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্সঃ  

ট্রান্সল্যাটিং এন্ড ইন্টারপ্রেটিং সার্ভিসের জন্য কল করুন131 450 এই নাম্বারে (২৪ ঘন্টা) এবং আপনি যে প্রতিষ্ঠানের সার্ভিসটি চান তা উল্লেখ করুন।


এসবিএস বাংলার রেডিও অনুষ্ঠান শুনুন প্রতি সোমবার এবং শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় এবং আরও খবরের জন্য আমাদের ফেইসবুক পেইজটি ভিজিট করুন।



 

Share