অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে কঠোর দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন

Coronavirus

PM Scott Morrison at the media conference in Canberra Source: AAP

অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বুধবার বেশ কয়েকটি কঠোর দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় একযোগে কাজ করছে ন্যাশনাল কেবিনেট। প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, এর কোনো স্বল্প-মেয়াদী, দু’-সপ্তাহের কোনো সমাধান নেই।


করোনাভাইরাস সঙ্কটের কারণে অস্ট্রেলিয়ায় এই প্রথমবারের মতো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা লেভেল ফোর-এ উন্নীত করা হলো। মিস্টার মরিসন বলেন, অস্ট্রেলিয়ানদের বিদেশ-ভ্রমণ করা এখন উচিত হবে না। তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত বিদেশ-ফেরত অস্ট্রেলিয়ানদের মাধ্যমে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।লেভেল ফোর ট্রাভেল অ্যাডভাইস বা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মানে কী তা জানতে এবং এ সম্পর্কিত হাল-নাগাদ তথ্যের জন্য স্মার্ট ট্রাভেলার ওয়েবসাইট দেখতে বলা হয়েছে।

এয়ারলাইন্সগুলোর জন্য কঠিন সময় যাচ্ছে বলে স্বীকার করেন মিস্টার মরিসন। তাদেরকে সহায়তা করার জন্য নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, বিমান-ভ্রমণ করার ঝুঁকি কম, তবে তার মতে, দেশের বিভিন্ন স্থানে চলাচল করার ঝুঁকি অনেক বেশি।অস্ট্রেলিয়ার কোনো কোনো অংশে, যেমন, যে-সব অঞ্চলে ইনডিজিনাস কমিউনিটিগুলো বাস করে, সেসব অঞ্চলে যেতে নিষেধ করেন তিনি।

শতাধিক ব্যক্তির উপস্থিতিতে অপ্রয়োজনীয় ইনডোর গ্যাদারিং নিষিদ্ধ করেছে সরকার। আউটডোর বা ঘরের বাইরে এক্ষেত্রে লোক-সংখ্যা পাঁচ শ’র বেশি হওয়া যাবে না।প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে মানুষ পরস্পরের সঙ্গে যথোপযুক্ত দূরত্ব বজায় রাখতে পারবে।

অস্ট্রেলিয়ায় শিক্ষারত ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট নার্সদের জন্য কাজের সীমাবদ্ধতা তুলে দিয়েছেন তিনি। এখানে প্রায় ২০,০০০ ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট নার্স রয়েছে। সাধারণত তারা সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ করতে পারেন। এখন তারা অন্যান্য অস্ট্রেলিয়ানদের মতোই পূর্ণ-সময় কাজ করতে পারবেন।


স্কট মরিসন বলেন, সিঙ্গাপুরের মতো এখানেও স্কুল খোলা থাকবে।কোনো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্কুল বন্ধ করা হলে দেশের উপরে ভয়ানক প্রভাব পড়বে। এই সঙ্কট কাটিয়ে উঠার ক্ষেত্রে তখন অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য-সেবার উপরে এর প্রভাব পড়বে।

মিস্টার মরিসন বলেন, এজড কেয়ার ফ্যাসিলিটি বা বয়স্ক-সেবা-কেন্দ্রগুলোতে নতুন ধরনের কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে।
পরিবারের সদস্য, ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধব, পেশাগত সেবা কিংবা সমর্থক-কর্মীা সীমিত সময়ের জন্য সেখানে ভিজিট করতে যেতে পারবেন। তবে, এক সঙ্গ দু’জনের বেশি ব্যক্তি সেখানে ভিজিট করতে পারবেন না।

তিনি স্বীকার করেন যে, অ্যানজ্যাক ডে অনুষ্ঠান আংশিকভাবে বাতিল করা হবে। কারণ, এতে অংশগ্রহণকারীদের বড় একটি অংশ হচ্ছে বয়স্ক ব্যক্তি। তবে, জাতীয়ভাবে এর একটি বিকল্প ব্যবস্থাও করা হবে, বলেন তিনি। ক্যানবেরারে ওয়ার মেমোরিয়াল থেকে এই অনুষ্ঠানটি টেলিভিশনের মাধ্যমে সম্প্রচার করা হবে।

যারা আতঙ্কিত হয়ে কেনাকাটা করছে তাদের উদ্দেশে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী বলেন, মজুদ করা বন্ধ করুন। এটা কাণ্ডজ্ঞান-সম্পন্ন কাজ নয়।
মিস্টার মরিসন বলেন, বিজ্ঞানী, মেডিকেল বিশেষজ্ঞ এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তিনি ও তার ন্যাশনাল কেবিনেট নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। অস্ট্রেলিয়ানদেরকে নিয়মিত আপডেট দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।


Share