শিক্ষাবিদরা বলছেন, অপেক্ষার দীর্ঘসূত্রিতায় তারা হতাশ। এর ফলে পূর্ণ অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণা স্থগিত রাখতে হচ্ছে এবং অনুদানপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা অচলাবস্থায় আটকা পড়ছে।
ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে ইরান, চীন, ভারত ও পাকিস্তানের মতো দেশের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন।
হামেদ পোরাজাদ যখন পিএইচডি অধ্যয়নের জন্য অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৃত্তির প্রস্তাব পেয়েছিলেন তখন তিনি উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন।
কিন্তু শিক্ষার্থী ভিসার জন্য তিন বছর অপেক্ষা করার পর সেই আনন্দ এখন হতাশায় পরিণত হয়েছে। হাল ছেড়ে দিয়েছেন ৩৫ বছর বয়সী এই শিক্ষার্থী। অস্ট্রেলিয়ার বদলে তিনি তাই এখন যুক্তরাজ্যে তাঁর থিসিস করছেন।
আরও অনেকেই হামেদের মত পরিস্থিতিতে পড়েছেন। জানা গেছে যে অন্তত ৫০ জন ইরানি শিক্ষার্থী এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ভিসার জন্য অপেক্ষা করছেন।
এসবিএস একই পরিস্থিতিতে থাকা আন্তর্জাতিক চীনা শিক্ষার্থীদের সাথেও কথা বলেছে।
নাম না প্রকাশের শর্তে তারা জানিয়েছে, ভিসার জন্যে অপেক্ষা করতে করতে এখন তারা মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছে।
ভিসা নিয়ে বিদেশ থেকে আসতে না পারা এ-সব পিএইচডি শিক্ষার্থীদের অনুমোদন দেওয়া শিক্ষাবিদরাও এখন হতাশ।
ক্লেমেন্ট ক্যানন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের একজন লেকচারার।
তিনি বলেন, এই জটিলতার কারণে অস্ট্রেলিয়া গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার সুযোগ ও প্রতিভা হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে।
“আমরা নিজেদের পায়েই কুড়াল মারছি,” বলেন তিনি।
হোম অ্যাফেয়ার্স ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক পোস্টগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের শতকরা পঞ্চাশ ভাগই চার মাসের মধ্যে ভিসা পেয়ে যায়। তবে প্রতি দশজনের মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে এক বছরের বেশি সময় লাগতে পারে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সরকার স্নাতকোত্তর গবেষণা খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত রয়েছে।
তারা আরও জানিয়েছে, এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভিসা দেওয়া হয় চীন থেকে আসা আবেদনকারীদের।
গত জুলাই মাসের পর থেকে এই তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান অষ্টম এবং ইরান রয়েছে নবম স্থানে রয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের নিরাপত্তা পরীক্ষা ভিসা প্রক্রিয়া বিলম্বিত করতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইন্সটিটিউটের একজন বিশ্লেষক জন কয়েন ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করে বলেন, বিভিন্ন কারণেই ভিসা প্রক্রিয়া বিলম্বিত হতে পারে। তবে যদি সবচেয়ে মেধাবীদের আমরা এখানে আনতে চাই তাহলে এই প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর করতে হবে।
গ্রুপ অব এইট ইউনিভার্সিটির প্রধান নির্বাহী ভিকি থমসন এস-বি-এস নিউজকে এক বিবৃতিতে বলেছেন, "যে কোনো শিক্ষার্থীর পক্ষেই ভিসার সিদ্ধান্তের জন্যে এক বছরের বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করতে হওয়া কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
"ভিসা বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, এটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জানিয়ে দেয়া উচিত। “
হামেদ পোরাজাদও এই বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেন।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে ক্লিক করুন উপরের অডিও প্লেয়ার বাটনে।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত।