দীর্ঘ দিন ধরেই সাউথ অস্ট্রেলিয়ার শিল্প খাতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান নিয়ে আছে অসবোর্ন শিপইয়ার্ড।
ফরেইন মিনিস্টার পেনি ওয়াং যেভাবে বলেন, এখন এটি নতুন একটি যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।
অ্যাডেলেইডের উত্তরে অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ায় সাবমেরিন নির্মাণের এই প্রধান কারখানাটির সক্ষমতা আরও বাড়ানো হবে।
আগামী দশকে নিউক্লিয়ারড পাওয়ারড বা পারমাণবিক শক্তিচালিত ডুবো-জাহাজ তৈরির কাজ শুরু হবে।
অসবোর্ন শিপইয়ার্ডটিকে প্রায় তিন গুণ বড় করা হবে এবং আগামী চার বছরে সেজন্য দুই বিলিয়ন ডলার খরচ পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
পুরোদমে নির্মাণ কাজ চলার সময়ে চার হাজার কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০৪০ এর দশকে যখন এই পরিকল্পনাটি পুরোপুরি কার্যকর করা হবে, তখন, সরকার আশা করছে যে, এতে করে শিপইয়ার্ডে চার হাজার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার পর্যন্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
সাউথ অস্ট্রেলিয়ার প্রিমিয়ার পিটার মেলিনাস্কাস বলেন, এর ফলে রাজ্যটিতে হাজার হাজার পরিবারের জীবন-যাপনের মান উন্নত হবে।
অস্ট্রেলিয়া জুড়ে জাহাজ নির্মাণের বিষয়টিকে বছরের পর বছর ধরে তথাকথিত ভ্যালি অফ ডেথ বা মৃত্যু-উপত্যকা বলে মনে করা হয়।
আর এটা হলো, বড় বড় প্রকল্পগুলোর মাঝে দীর্ঘ বিরতি থাকায়, কর্মীদেরকে জোর করে ছাড়িয়ে দেওয়া হয়।
পিটার মেলিনাস্কাস বলেন, সেই অবস্থার অবসান হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ান সি-ফেয়ারারস ইউনিয়নের কনভেনর গ্লেন থম্পসন নতুন এই উদ্যোগটির স্বাগত জানিয়ে বলেন, কিছু প্রশ্ন এখনও রয়ে গেছে।
অন্তত এক দশকের মাঝে নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে না। এই শিল্পের পরিবর্তনশীল অবস্থার ফলে যারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন তাদের এ নিয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে।
মেরিটাইম বা নৌ-যাত্রার সঙ্গে সম্পর্কিত বহু কর্মী ইতোমধ্যে রিডানডেন্সি গ্রহণ করেছেন এবং অনেকেই পে কাটস বা বেতন হ্রাসের কবলে পড়েছেন।
একজন শিপইয়ার্ড কর্মী ড্যানিয়েল র্যাম অবশেষে পেশা পরিবর্তন করে ভিন্ন খাতে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বিদ্যমান কলিন্স ক্লাস সাবমেরিনগুলোর মেয়াদ বৃদ্ধির প্রতি পুনরায় নজর দিয়েছে সরকার।
এই কাজে বর্তমানে শত শত কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে। কিন্তু, এই প্রকল্প কখন সমাপ্ত হবে সে সম্পর্কে কোনো দিন-ক্ষণ নির্ধারণ করা হয় নি।
ক্যানবেরায় এ নিয়ে ডিফেন্স মিনিস্টার ও ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী রিচার্ড মার্লসকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ভবিষ্যতের সরকারগুলো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
ক্রান্তিকালে কর্মীরা তাদের কাজ হারাতে পারে বলে উদ্বেগ রয়েছে। সাবেক সেনেটর ও সাবেক সাবমেরিনার রেক্স প্যাট্রিক এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ভবিষ্যৎ কর্মীবাহিনী নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় আমরা শুধু রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি পাই, যা কিনা খুবই অস্পষ্ট।
অকাস চুক্তির মূল বিষয়গুলো এখন চূড়ান্ত করা হয়েছে। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার প্রিমিয়ার অচিরেই যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন।
সেখানে গিয়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সাবমেরিন প্লান্টগুলো পরিদর্শন করবেন। অস্ট্রেলিয়ায় কর্মীবাহিনীকে জোরদার করার জন্য কোন ধরনের দক্ষতা ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হবে, সেটি দেখবেন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত।