বন্ডাই শপিংমলে ছুরি হামলাকারীর সম্মুখীন হওয়া নিরাপত্তাকর্মী ফারাজের শেষকৃত্য সম্পন্ন

FARAZ TAHIR AHMADIYYA FUNERAL

Prime Minister Anthony Albanese speaks during the funeral for Faraz Tahir at Masjid Baitul Huda, in Sydney, Friday, April 26, 2024. Security guard Faraz Tahir was one of the six victims killed at Westfield Bondi Junction on April 13 in a mass stabbing rampage.(AAP Image/Dan Himbrechts) Source: AAP / DAN HIMBRECHTS/AAPIMAGE

সিডনির ইস্টার্ন সাবার্ব বন্ডাইয়ে ছুরি হামলায় নিহত নিরাপত্তাকর্মী ফারাজ আহমদ তাহিরের জানাজার নামাজ ও দাফন সম্পন্ন। শেষকৃত্যে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী ও নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার-সহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও প্রায় এক হাজার মানুষ।


২৪ এপ্রিল, বুধবার ফারাজ তাহিরের ৩১ বছর পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, তার আগেই তিনি ইহলোক ত্যাগ করলেন।

বন্ডাইয়ের শপিংমলে গত ১৩ এপ্রিল, শনিবার ছুরি হামলার ঘটনায় নিহত হন নিরাপত্তাকর্মী ফারাজ আহমদ তাহির। ছুরি হামলাকারী কুইন্সল্যান্ডের জোয়েল কাউচির আক্রমণে সেদিন নিহত হন আরও পাঁচ জন। পরে, পুলিশের গুলিতে হামলাকারীও নিহত হন।

গত ২৬ এপ্রিল, শুক্রবার ফারাজের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয় ওয়েস্টার্ন সিডনির মার্সডেন পার্কে আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত, অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় কার্যালয় বাইতুল হুদা মসজিদে।
জুম্মার নামাজের পর অনুষ্ঠিত ফারাজের জানাজায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থোনি অ্যালবানিজি এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার ক্রিস মিনস। ফেডারাল ও স্টেট পর্যায়ের কয়েকজন মন্ত্রী, এমপি ও সিনেটর ছাড়াও আরও ছিলেন অস্ট্রেলিয়া নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার জাহিদ হাফিজ চৌধুরী।

ছিলেন সায়েন্স মিনিস্টার এড হিউসিক এমপি, কমিউনিকেশন্স মিনিস্টার মিশেল রোল্যান্ড এমপি, ড. এন্ড্রু চার্লটন এমপি, অ্যালেক্স হক এমপি, সিনেটর মেহরিন ফারুকী, নিউ সাউথ ওয়েলসের বিরোধী দলীয় নেতা মার্ক স্পিকম্যান, নিউ সাউথ ওয়েলসের মাল্টিকালচারাল মিনিস্টার স্টেট এমপি স্টেফান কেম্পার, স্টেট এমপিদের মধ্যে ছিলেন মিস্টার ওয়ারেন কিরবি, মিস্টার এডমন্ড আটালা, মিজ ডোনা ডেভিস, ড. মারজোরি ওনেইল, মিজ কেলি স্লোয়ান, ড. হিউ ম্যাকডারমট এবং মিজ ক্যারিশমা কেলিয়ান্ডা।

এসেছিলেন হর্নসবি সিটি কাউন্সিলের মেয়র ফিলিপ রাডক, ব্লাকটাউন সিটি কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র ও কাউন্সিলর ক্রিস কুইকলি, কাউন্সিলর মনিন্দার সিং, কাউন্সিলর বব ফিটজেরাল্ড, কাউন্সিলর লিভিংস্টন চেটিপ্যালি ও প্যারামাটা সিটি কাউন্সিলের কাউন্সিলর সমীর পান্ডে।

জুম্মার নামাজের পর অনুষ্ঠিত জানাজার নামাজে অংশ নেন ফারাজের বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন এবং আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত, অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ-সহ প্রায় হাজার খানেক লোক।
জানাজার নামাজের আগে, মওলানা আতা-ই-রব্বী হাদী জানাজার নামাজের পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেন। এরপর, আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত, অস্ট্রেলিয়ার আমীর ও মিশনারী-ইন-চার্জ মওলানা ইনামুল হক কাউসার, প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থোনি অ্যালবানিজি এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার ক্রিস মিনস সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা প্রদান করেন।

ফারাজের জানাজায় অংশ নিতে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড থেকে তার পরিবারের সদস্যরা আসেন। তার সবচেয়ে বড় ভাই মুদাসসার বশীর ফারাজ সম্পর্কে বলেন, ফারাজ অনেক সাহসী ছিলেন।

আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত, অস্ট্রেলিয়ার আমীর ও মিশনারী-ইন-চার্জ মওলানা ইনামুল হক কাউসার বলেন, ফারাজের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সবাই।

মওলানা ইনামুল হক কাউসার আরও বলেন, ফারাজের নামে অস্ট্রেলিয়ায় একটি রক্তদান কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে।
জানাজার নামাজের আগে, প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থোনি অ্যালবানিজি তার বক্তৃতায় নিহত ফারাজকে ন্যাশনাল হিরো বলে অভিহিত করেন।

নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার ক্রিস মিনসও ফারাজকে ন্যাশনাল হিরো বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ফারাজ অনেক কোমল হৃদয়ের মানুষ ছিলেন।

পাকিস্তানের পাঞ্জাবে ফারাজের জন্ম। ধর্মীয় নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে তিনি প্রথমে শ্রীলঙ্কায় গমন করেন এবং এরপরে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় আসেন।

তার বড় ভাই বশীর বলেন, পরিবারের অন্যান্যদেরকে সহায়তা করার স্বপ্ন দেখতেন ফারাজ।

বন্ডাই শপিং মলে ছুরি হামলার সময়ে ফারাজের সঙ্গে কর্মরত ছিলেন নিরাপত্তাকর্মী মুহাম্মদ তাহা। তিনিও ছুরিকাহত হন।

হুইলচেয়ারে করে ফারাজের জানাজায় তিনিও অংশ নেন। ব্যথা-বেদনায় জর্জরিত তাহা ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। তবে, সহকর্মী ফারাজের জানাজায় অংশ নেওয়ার সুযোগ তিনি হারাতে চান নি।

মুহাম্মদ তাহা আরও বলেন, সেই হামলার সময়ে ফারাজের শেষ কথাগুলো তিনি স্মরণ করেন।

জানাজার নামাজের পর ফারাজের মৃতদেহ দাফন করা হয় রিভারস্টোন কবরস্থানে।

প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

আমাদেরকে অনুসরণ করুন 

Share