প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হিন্দু ন্যাশনালিস্ট সরকার তিন-তালাককে ফৌজদারি অপরাধ গণ্য করার চাপ দিয়ে আসছিল। এই বিল অনুসারে একইসঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে তিনবার “তালাক” উচ্চারণ করে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটানো ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য হবে।
বিশ্বের কয়েকটি দেশের মতো ভারতেও এই বিলটি পাশ হলো। ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি ভেঙ্কিয়া নাইডু দিল্লির পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষে িএই বিলটির ফলাফল ঘোষণা করেন।
গত সপ্তাহে নিম্ন-কক্ষে বিলটি পাশ হয়। এতে বলা হয়, তাৎক্ষণিক তিন-তালাক দেওয়াটা ফৌজদারি অপরাধ। এই বিলটি আইনে পরিণত করতে ভারতের রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর লাগবে।
তবে, কিছু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা মনে করেন, তিন-তালাক প্রথা ভুল। অন্যদিকে, তারা মনে করেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তাদের সম্প্রদায়ের নেতারা, সরকার নয়।
ভারত সরকারের কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদ বলেন, এটা ভারতের এগিয়ে যাওয়ার লক্ষণ।
ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বিলটি পাশের বিষয়টিকে তাদের জয় হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে মুসলমানরা যে ভুল করছিল তা এই বিলটির মাধ্যমে সংশোধন করা হলো।
বিরোধী দল বলছে, এই আইনটি মুসলিম পুরুষদের হেনস্থা করার জন্য ব্যবহার করা হতে পারে।
মিস্টার মোদী এক টুইটে বলেন, এটা একটি প্রত্নতাত্ত্বিক এবং মধ্যযুগীয় অনুশীলন। চূড়ান্তভাবে এটি ইতিহাসের আস্তাকুড়ে ফেলে দেওয়া হলো। তিনি সাথে আরও জুড়ে দেন, এটা লিঙ্গ-ন্যায়বিচারের একটি জয়।
এদিকে, সমালোচকরা অভিযোগ করে বলছে, মিস্টার মোদীর শাসকদল বিজেপি সংখ্যালঘু মুসলমানদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব করছে। অন্যদিকে, বিজেপি দাবি করছে যে, এটি কোনো সম্প্রদায়ের তুষ্টির বিরোধী পদক্ষেপ নয়।
প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ অন্য আরও ২০টি দেশ এই প্রথা ইতোমধ্যে বাতিল করেছে। যে-সব মুসলমান নারী এই বিলটি চেয়েছেন, তারা বলছেন, এই বিলটি পাশ হওয়ায় তারা খুশি।
ভারতের বেশিরভাগ মুসলিম অর্থনৈতিক এবং শিক্ষামূলক সূচকগুলোর নিচে অবস্থান করে। সমালোচকরা বলছে, তিন-তালাক তাদের প্রধান সমস্যা নয়। এছাড়াও তাদের আরও অনেক গুরুতর সমস্যা রয়েছে, যেগুলোর সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিনিয়ত তাদের সম্প্রদায়।
প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।