আবারও ডনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি হিসেবে ওয়াশিংটনের ইউ-এস ক্যাপিটলের রোটুন্ডায় অভিষিক্ত হলেন।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজি দেশের ৪৭ তম রাষ্ট্রপতিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন যে, তিনি মি. ট্রাম্পের সাথে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে জোট কখনোই শক্তিশালী ছিল না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওয়াং ছিলেন প্রথম অস্ট্রেলিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী যিনি রাষ্ট্রপতির অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত কেভিন রাড, অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি জিনা রাইনহার্ট এবং অস্ট্রেলিয়ান বক্স ম্যানুফ্যাকচারিং বিলিয়নেয়ার অ্যান্থনি প্র্যাটও উপস্থিত ছিলেন।
সেভেন নেটওয়ার্কের সাথে একটি সাক্ষাত্কারে, মিজ ওয়াং বলেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অস্ট্রেলিয়ান রপ্তানি কোন ঝুঁকির মধ্যে নেই।
তিনি বলেন, "বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যখন অস্ট্রেলিয়া-মার্কিন অর্থনৈতিক সম্পর্কের কথা আসে, তখন দেখা যাচ্ছে যে প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যানের সময় থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বেশি রপ্তানি করছে, অস্ট্রেলিয়া সেদেশে রপ্তানি করে তার অর্ধেক।
তাই বলা যায় যে, আমেরিকান অর্থনীতিতে অস্ট্রেলিয়া অবশ্যই যথেষ্ট মূল্য যোগ করে থাকে, এবং এটিই অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আমার বার্তা।"
মিজ ওয়াং আরও বলেন যে, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে কাজ করার জন্য উন্মুখ।
তিনি বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্ক থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়ার যৌক্তিক কারণ রয়েছে।
উল্লেখ্য নতুন প্রেসিডেন্ট বলেছেন যে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চীনের পণ্য আমদানির উপর শুল্ক আরোপ করবেন।
তিনি আরও বলেছেন যে, অন্যান্য দেশগুলিও বর্ধিত শুল্কের মুখোমুখি হতে পারে। ট্রাম্প তার উদ্বোধনী ভাষণে শুল্ক আরোপ নিয়ে তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বিরোধী নেতা পিটার ডাটন অবশ্য প্রশ্ন করেছেন যে, পেনি ওয়াং কখনো মি. ট্রাম্পকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখেছেন কিনা।
মি. ডাটন কৌতুকচ্ছলে বলেন যে পেনি ওয়াং এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন উদযাপন করছেন, এটি তার মনের বিরুদ্ধে বলে মনে হচ্ছে, কারণ তিনি এর আগে ট্রাম্পের সমালোচনা করেছিলেন। তিনি সরকারকে অযোগ্য ও অসৎ বলেও সমালোচনা করেন।
তবে জোটের রাজনীতিবিদরা বিশ্বাস করেন যে, অস্ট্রেলিয়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উল্লেখিত শুল্ক চার্জ থেকে রেহাই পাবে।
ন্যাশনাল সিনেটর ব্রিজেট ম্যাকেঞ্জি চ্যানেল নাইনকে বলেন, নতুন মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ভালো সম্পর্ক আছে তা নিশ্চিত করতে হবে।
মি. আলবানিজি বলেছেন অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যে শুল্ক আরোপ করা হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোত্তম স্বার্থ সিদ্ধি হবে না।
মি. ট্রাম্পের নীতির ফলে অস্ট্রেলিয়ান বাণিজ্যেও দশ শতাংশ শুল্ক থাকবে, যদি না অস্ট্রেলিয়া কোনভাবে ছাড় আদায় করতে পারে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এটি অর্জনের চেষ্টা করেছিলেন।
কিন্তু মি. আলবানিজি বলেছেন যে, অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যে শুল্ক আরোপ করলে তা যুক্তরাষ্টের জন্য যে উলটো ফল বয়ে আনবে তার দুটি কারণ আছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্টের সাথে আমাদের ফ্রী ট্রেড এগ্রিমেন্ট আছে যা দুপক্ষকেই লাভবান করে, এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রই অস্ট্রেলিয়াতে বেশি পণ্য বা সেবা পাঠায়।
কমনওয়েলথ ব্যাঙ্কের কারেন্সি স্ট্র্যাটেজিস্ট ক্যারল কং বলেছেন যে ট্রাম্পের গণ-অভিবাসী বিতারণ পরিকল্পনাও মুদ্রা বাজারে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাব ফেলতে পারে।
তিনি আরও ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে, ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে দর কষাকষির হাতিয়ার হিসাবে প্রায়ই শুল্ক ধার্যের কৌশল ব্যবহার করতে পারেন, যা আরও বাণিজ্য বিরোধ বাড়াতে পারে। এটি সম্ভবত মুদ্রা বাজারগুলিকে আরও অস্থির করতে পারে এবং মার্কিন ডলারের মূল্য স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি উঠানামা করতে পারে।
ওয়াশিংটনে থাকাকালীন, মিজ ওয়াং তার ভারত ও জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে দেখা করেছেন, যারা যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ার সাথে কোয়াড নিরাপত্তা সংলাপের অংশীদার।
এ প্রতিবেদন লেখার সময় জানা যায় মিজ ওয়াং ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছেন।
নতুন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তাদের মিত্রদের সাথে বৈঠকে বলেছেন তাদের মূল লক্ষই হচ্ছে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা।
আর জাতি এখন বুঝতে চেষ্টা করছে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর ডনাল্ড ট্রাম্প কি করতে চলেছেন।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।
এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন
ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন চ্যানেল। উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায়