সংখ্যালঘু সরকার কী? অস্ট্রেলিয়ানরা কী সংখ্যালঘু সরকার পেতে যাচ্ছে?

PARLIAMENT 35TH ANNIVERSARY

Snow covered hills are seen behind Parliament House in Canberra, Monday, May 8, 2023. Today marks the 35th anniversary of the opening of Australia’s Parliament House. (AAP Image/Lukas Coch) NO ARCHIVING Credit: AAPIMAGE

ফেডারেল নির্বাচন মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরেই, এবং ধারণা করা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ানরা একটি সংখ্যালঘু সরকার (মাইনরিটি গভর্নমেন্ট) পেতে যাচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, সংখ্যালঘু সরকার কী? এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন।


আপনি হয়তো এই নির্বাচনী প্রচারণার সময় "সংখ্যালঘু সরকার (মাইনরিটি গভর্নমেন্ট)" কথাটি বারবার শুনেছেন।

এবং এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, বলছেন গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক পল উইলিয়ামস।

তিনি বলছেন, "আমরা এইবার নিশ্চিতভাবেই একটি সংখ্যালঘু সরকারের সম্ভাবনার দিকে এগোচ্ছি।"

গত নির্বাচনে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ক্রসবেঞ্চ দেখা গিয়েছিল, তাই এবার সংখ্যালঘু সরকার গঠনের সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল।

কিন্তু এর মানে কী?

কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক গ্রাহাম ওর ব্যাখ্যা করেন—
"আমাদের যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা রয়েছে, যা ব্রিটেন থেকে পাওয়া, এবং ভারত, নিউজিল্যান্ডের মতো দেশেও প্রচলিত, তাতে প্রধানমন্ত্রী হলেন সেই ব্যক্তি যিনি হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের সমর্থন পান।"
আরও শুনুন
bangla_australia_explained_howtovote_050425 image

ফেডারেল নির্বাচনে যেভাবে ভোট দেবেন

SBS Bangla

08:28
নির্বাচনে সরাসরি হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করাই সাধারণত সরকার গঠনের সহজ উপায়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে বিকল্প পথও থাকে।

গ্রাহাম ওর বলছেন,"সংখ্যালঘু সরকার তখনই হয় যখন কোনো একক দল বা জোট হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর ১৫০টির মধ্যে ৭৬টি আসন অর্জন করতে পারে না।"

অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পর্যায়ে এটি খুব বেশি দেখা যায় না। ২০১০ সালের আগে, ৭০ বছরে এমন কিছু ঘটেনি।

কিন্তু অধ্যাপক ওর বলছেন, এই প্রবণতা পরিবর্তন হচ্ছে।

তিনি বলছেন,"আমরা টার্নবুল সরকারের সময় আংশিক সংখ্যালঘু সরকার দেখেছিলাম, গিলার্ড সরকারের সময় পুরোপুরি সংখ্যালঘু সরকার ছিল। এটি এখন আরও সাধারণ বিষয় হয়ে উঠছে, কারণ মানুষ আগের মত লেবার বা লিবারেল-ন্যাশনাল পার্টির প্রতি নিরঙ্কুশভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকছেন না।"

অস্ট্রেলিয়ার প্রথম তিনটি সরকারই ছিল সংখ্যালঘু সরকার, তখনো শক্তিশালী দল বা জোট গঠিত হয়নি।

এটি এখনো বিভিন্ন স্টেট ও টেরিটোরির সাধারণ ঘটনা।

সংখ্যালঘু সরকার গঠনের জন্য ছোট দল ও নির্দলীয়দের যেটুকু সমর্থন প্রয়োজন, তাকে বলা হয় "সাপ্লাই অ্যান্ড কনফিডেন্স"।

অধ্যাপক ওর বলছেন, গিলার্ড সরকারের সময় এভাবেই সংখ্যালঘু সরকার চলেছিল।

সংখ্যালঘু সরকারের বেলায় অন্যান্য দল বা নির্দলীয়রা চাইলে কোনো বিল উত্থাপন করতে বলতে পারে, তবে সরকারকে সেটি মানতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

তারা চাইলে সরকারে বড় ভূমিকা রাখতে চাইতে পারে, যেমন মন্ত্রিত্ব পাওয়া।
আরও শুনুন
Election Explainer How Early Voting Works in Federal Election image

ইলেকশান এক্সপ্লেইনার: ফেডারাল নির্বাচনে আগাম ভোট বা আর্লি ভোটিং যেভাবে কাজ করে

SBS Bangla

03:27
এসোসিয়েট প্রফেসর উইলিয়ামস বলেন, বড় দলগুলোর এটি পছন্দ নয়।

কারণ তাদের শুধু সিনেটেই নয়, হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসেও দর কষাকষি করতে হয়, যা বড় একটি সমস্যা।"

এটি জনগণের মধ্যেও খুব জনপ্রিয় নয়।

এসোসিয়েট প্রফেসর উইলিয়ামস বলছেন, "বেশিরভাগ মানুষ সংখ্যালঘু সরকার বা ঝুলন্ত পার্লামেন্ট পছন্দ করে না, কারণ এটি অনিশ্চয়তা এবং অস্থিরতার কারণ হয়।"

সংখ্যালঘু সরকারে কোনো আইন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিম্নকক্ষে পাস হবে এমন নিশ্চয়তা থাকে না।

এটি পরিস্থিতিকে কিছুটা নাজুক করে তুলতে পারে।

বেশিরভাগ সময় সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকারে আইন পাস করানোর মূল আলোচনা সিনেটে হয়, কিন্তু সংখ্যালঘু সরকারে এটি দ্বিগুণ কঠিন হয়ে যায়।

নিউজিল্যান্ডের রাজনৈতিক ব্যবস্থা অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ভিন্ন। তাদের একক সংসদ রয়েছে এবং তারা ভিন্ন ধরনের প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবস্থা অনুসরণ করে।

সাম্প্রতিক ১০টি নির্বাচনের মধ্যে ৭টি সরকারই ছিল সংখ্যালঘু সরকার।

নিউজিল্যান্ডের ম্যাসি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক রিচার্ড শ' বলছেন, এটি কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে না।

তিনি বলেন, এটি বিলের ওপর আরও বেশি মতামত দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সংখ্যালঘু সরকারের ক্ষেত্রে কী সবসময় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়?

যদিও সংখ্যালঘু সরকারে আইনের দীর্ঘসূত্রতা দেখা দিতে পারে, তবে এটি সবসময় ঘটে না।

২০১০ সালের গিলার্ড সংখ্যালঘু সরকার ৯০% এর বেশি বিল পাস করেছিল, যা কেভিন রাডের সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার ও বেশিরভাগ হাওয়ার্ড সরকারের তুলনায় বেশি।

সহযোগী অধ্যাপক উইলিয়ামস বলেন, এর অন্য প্রভাবও ছিল—তিনি বলছেন, "সাধারণভাবে, সংসদ অত্যন্ত শৃঙ্খল ছিল। সংসদ সদস্যরা খারাপ আচরণ করতে চাইতেন না, কারণ এতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আরও কমে যেতে পারত। ফলে তারা আরও দায়িত্বশীল হন।"

অধ্যাপক ওর বলছেন, বড় দলগুলোকে এখন সংখ্যালঘু সরকারের এই বাস্তবতাকে মেনে নিতে হবে।

সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারে ক্লিক করুন
এসবিএস বাংলার আরও শুনতে ভিজিট করুন আমাদের 

আপনি কি জানেন, এসবিএস বাংলা অনুষ্ঠান এখন ইউটিউব এবং 
পাওয়া যাচ্ছে?

এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।

এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন 

আর, এসবিএস বাংলার এবং ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন 
চ্যানেল। উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় 




Share